হাওর বার্তা ডেস্কঃ চারিদিকে অথৈ পানি আর পানি। বন্যায় উত্তরাঞ্চলের সব হারানো মানুষেরা তাদের মৃত স্বজনদের দাফনও করতে পারছেন না। অনেকেই পার্শ্ববর্তী জেলায় নিয়ে দাফন করছেন। শোকের সঙ্গে তাদের মাতম, ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাদের শক্তি দাও, সাহস দাও, একখণ্ড শুকনো জমিন দাও।’
বানের পানিতে ঘরবাড়ি ডুবে গেছে আগেই। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে রোববার বিকেলে কলার ভেলা বানিয়ে তাতে চেপে বসেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নে পূর্ব বড়ুয়া গ্রামের আবু হানিফ আলিফ (৩৫), সঙ্গে ছেলে নাদিম বাবু (৫) এবং প্রতিবেশী দম্পতি মোজাম উদ্দিন (৪৫) ও আসমা বেগম (৪০)।
হঠাৎ ধরলা নদীর পানির স্রোতে তাদের ভেলা ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় আর তাদের খুঁজে পায়নি। যখন পাওয়া গেল, তখন সব শেষ হয়ে গেছে।
রাতেই শিশু নাদিমের মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে সোমবার ভোরে বাকি তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্বজন হারানোর শোকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মরদেহ দাফন না করার কষ্ট। যেদিক চোখ যায় সেদিকেই পানি। পরে তাদের অন্যস্থানে নিয়ে দাফন করা হয়।
মৃতদের স্বজন আছিয়া বেগম, মনছুর মিয়া ও হামিদ আলী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিলাপ করতে থাকেন, ‘আল্লাহ, তুমি এদের তো নিয়েই গেছো, বাকিদের হেফাজত কর। মালিক, প্লাবনের অভিশাপ থেকে আমাদের মুক্তি দাও।’
তারা আল্লাহর কাছে লাশ বইবার এবং শোক কাটিয়ে ওঠার শক্তির প্রার্থনা করেন।
কুলাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর শিশু নাদিমকে রোববার রাতে তার নানার বাড়ি সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর গ্রামে দাফন করা হয়।
সেখানেই আরেকটি কবরস্থানে দাফন করা নাদিমের বাবা আবু হানিফ আলিফকে।
আর আছমা বেগমকে কুড়িগ্রাম থেকে রংপুরে নিয়ে বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়। তার স্বামী মোজাম উদ্দিনকেও সেখানেই আরেকটি কবরে দাফন করা হয়।