বোরো ধান চাষের ব্যাপক সম্প্রসারণের কারণে সরিষা, ডাল, গম আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে প্রতি বছর ১২-১৩ লাখ টন ভোজ্য তেল ও ২০ লাখ টন ডাল বাংলাদেশকে আমদানি করতে হচ্ছে। অন্যদিকে বোরো ধানের জীবনকাল বেশি হওয়ায় পানি সেচের কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। উপরোক্ত বিষয়গুলো চিন্তা করে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবন করেছে বিনাধান-১৪। এটি নাবী বোরো বা ব্রাউশ ধান হিসেবে বেশি পরিচিত। এটি রোপণের উপযুক্ত সময় ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ। এতে চাষিরা বিনাধান-১৪ রোপণের আগেই সহজে উচ্চফলনশীল দীর্ঘ জীবনকালসম্পন্ন সরিষা, মসুর কিংবা গম চাষ করতে পারবেন। বিনাধান-১৪-এর চারা বীজতলায় ফেলতে হয় জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। বিনাধান-১৪ বীজতলায় বীজ ফেলা থেকে কর্তন পর্যন্ত অঞ্চলভেদে ১০৫-১২৫ দিন সময় লাগে, ফলন হয় হেক্টরপ্রতি ৬.৫-৮ টন। গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৬.৯ টন। পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কুমিল্লা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল হক জানান, ২০ লাখ হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল এ জাতটির সম্প্রসারণ সম্ভব। সেখান থেকে প্রায় ৪০ লাখ টন সরিষা পাওয়া যাবে। এ পরিমাণ সরিষা থেকে প্রায় ১৪ লাখ টন সরিষার তেল উৎপাদন সম্ভব হবে, যা বাংলাদেশের মোট ভোজ্য তেলের চাহিদা থেকে বেশি। বাংলাদেশে বর্তমানে ১২ লাখ টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে (জনপ্রতি প্রতিদিন ২২ গ্রাম হারে ১৬ কোটি মানুষ ধরে)। এ ছাড়াও অতিরিক্ত ২০ লাখ টন ধান উৎপাদন হবে। আরও ১০ লাখ হেক্টর জমিতে মসুর ও খেসারি ডাল চাষ করা যাবে। এ জাতটির সম্প্রসারণ সম্ভব হলে বাংলাদেশের ডালের আমদানিও প্রয়োজন হবে না। জীবনকাল কম হওয়ায় বিনাধান-১৪-এর ক্ষেত্রে অন্যান্য বোরো ধানের তুলনায় অনেক কম সেচ লাগে।
এ জাতটি ২০১৩ সালে মাঠ পর্যায়ে চাষের জন্য অনুমোদন পায়। তিনি আরও জানান, এ ধানের চাষে কৃষকদের নিয়ে মাঠ পর্যায়ে সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে।
সংবাদ শিরোনাম
বাংলাদেশকে বদলে দেবে বিনাধান
- Reporter Name
- আপডেট টাইম : ০১:২৩:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ অগাস্ট ২০১৫
- ৩৪৪ বার
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ