ঢাকা ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে ‘ড্রেস ধর্ষণের’ অভিযোগ!

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:২৯:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০১৭
  • ৩২০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  ডিয়েগো ম্যারাডোনা কোথাও ফুটবল ম্যাচ দেখতে যাবেন, অথচ সেখানে কেলেঙ্কারি কাণ্ড ঘটাবেন না, তা কী হয়! এই তো গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নাপোলির আমন্ত্রণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোল’র ম্যাচ দেখতে গিয়ে মাদ্রিদের এক হোটেলে উটকো এক ঝামেলায় জড়ান আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর। রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে ম্যাচ ছিল নাপোলির। ম্যাচের আগের দিন রাতে নিজের বান্ধবীকে বকাবাজ্জি, এমনকি মারধরের অভিযোগও উঠে তার বিরুদ্ধে। ঘটনা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। ঘটনাসূত্রে স্পেনের এক সাংবাদিককে মেরে ফেলার হুমকিও দেন ম্যারাডোনা। এবারও গণ্ডগোলটা এক সাংবাদিকের সঙ্গেই। তবে পুরুষ নয়, নারী সাংবাদিক। স্বাভাবিকভাবেই এবারের অভিযোগটা আরও বেশি গুরুতর। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির বিরুদ্ধে ‘ড্রেস ধর্ষণের’ অভিযোগ দায়ের করেছেন রাশিয়ার এক নারী সাংবাদিক!

ঘটনাটা গত ২ জুন রোববার, রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সাবার্গে। জার্মানি ও চিলির মধ্যকার ফিফা কনফেডারেশনস কাপের ফাইনাল ম্যাচটি দেখতে রাশিয়া ছুটে ম্যারাডোনা। উঠেন পিটার্সবার্গের এক হোটেলে। একাতেরিনা নাদোলস্কায়া নামের এক নারী সাংবাদিক অভিযোগ করেছেন হোটেলে নিজের রুমেই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি তাকে ‘ড্রেস ধর্ষণ’ করেছেন! যেনতেন জায়গায় নয়, ৩০ বছর বয়সী ওই সুদর্শনা সাংবাদিক সরাসরি রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির কাছে ‘ড্রেস ধর্ষণের’ মাধ্যমে তাকে হয়রানি করার অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরে গণমাধ্যমের কাছেও ঘটনার সবিস্তার বর্ণনা করেছেন মিস একাতেরিনা। ম্যারাডোনা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এসএম নিউজকে একাতেরিনা বলেছেন, ম্যারাডোনার সঙ্গে প্রথমে তার দেখা হয় হোটেল লবিতে। সেখানে তিনি ম্যারাডোনার একটা সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথা বলেন, ‘হোটেল লবিতে আমি তার একটা সাক্ষাৎকার করতে চাই। তিনি আমাকে তার রুমে যেতে বলে বলেন।’

প্রথমে একাতেরিনার এক বান্ধবীও তার সঙ্গে ছিল। কিন্তু তিনি লবি থেকেই চলে যান। একাতেরিনা ম্যারাডোনার রুমে যান একা, ‘আমি রুমে ঢোকার পরই ম্যারাডোনা দরজা লাগিয়ে দেন। প্রথমে তিনি আমার প্রশ্নে উত্তর দেওয়া শুরু করেন। কিন্তু দ্রুতই তিনি তার পোশাক খুলে ফেলে আমাকে উত্তপ্ত করা শুরু করেন। তখন তার পরনে ছিল শুধু আন্ডারওয়্যার। পরে আমাকেও পোশাক খুলতে জোর করেন। এবং জোর জবরদস্তি করে এক পর্যায়ে আমার পোশাক খুলেও ফেলেন। আমার পরনে তখন শুধু বিকিনি। আমি তাকে এসব বন্ধ করতে বলি এবং হুমকি দেই, বলি আমি কিন্তু পুলিশ ডাকব। ও মা, এ কথা শুনে তিনি নিজেই তখন হোটেল নিরাপত্তা কর্মীদের ডাকেন।’

একাতেরিনা অভিযোগ করেছেন হোটেল নিরাপত্তা কর্মীদের বিরুদ্ধেও, ‘৩ জন লোক এসে আমাকে রুম থেকে বারান্দায় নিয়ে যায়। আমার পোষাক, মোবাইল ফোন সেট রুমেই ছিল। আমাকে তারা শুধু বিকিনি পরা অবস্থায় তিন ঘণ্টা সেখানে বসিয়ে রাখে। পরে পুলিশ আসার পর আমি পোশাক ও জিনিসপত্র ফিরে পাই।’ ঘটনার পরপর ম্যারাডোনার এক সহকারি তার দিকে ৫০০ ডলার ছুঁড়ে মারেন বলেও উল্লেখ করেছেন একাতেরিনা। জোর করে পোষাক খুলে ফেলার পর প্রচণ্ড আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন রুশ মেয়ে। নিজের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তিনি হোটেলের সিসিটিভির ফুটেজ দেখারও অনুরোধ করেছেন।

দেশের আইন মেনেই হোটেলের নাম উল্লেখ্য করেনি রাশিয়ান পত্রিকাগুলো। অভিযোগ অস্বীকার করে ৫৬ বছর বয়সী উল্টো একাতেরিনাকেই অভিযুক্ত করেছেন। ম্যারাডোনার সঙ্গে থাকা তার খুব কাছের এক বন্ধু বলেছেন, ‘রুমে ঢোকার পরই ওই মহিলা পোশাক খোলা শুরু করে দেন। ম্যারাডোনার এটা পছন্দ হয়নি। সে ওই মহিলাকে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। কিন্তু ওই মহিলা বের না হওয়ায় সে নিরাপত্তা কর্মীদের ডাকে।’

রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটি সঙ্গে সঙ্গেই তদন্ত কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলে খবর। ওই হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং ম্যারাডোনাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে কী বেরিয়ে এসেছে তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা হয়নি।

তদন্তের পর জল কোন দিকে গড়ায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে ‘ড্রেস ধর্ষণের’ অভিযোগ!

আপডেট টাইম : ০৮:২৯:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  ডিয়েগো ম্যারাডোনা কোথাও ফুটবল ম্যাচ দেখতে যাবেন, অথচ সেখানে কেলেঙ্কারি কাণ্ড ঘটাবেন না, তা কী হয়! এই তো গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নাপোলির আমন্ত্রণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোল’র ম্যাচ দেখতে গিয়ে মাদ্রিদের এক হোটেলে উটকো এক ঝামেলায় জড়ান আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর। রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে ম্যাচ ছিল নাপোলির। ম্যাচের আগের দিন রাতে নিজের বান্ধবীকে বকাবাজ্জি, এমনকি মারধরের অভিযোগও উঠে তার বিরুদ্ধে। ঘটনা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। ঘটনাসূত্রে স্পেনের এক সাংবাদিককে মেরে ফেলার হুমকিও দেন ম্যারাডোনা। এবারও গণ্ডগোলটা এক সাংবাদিকের সঙ্গেই। তবে পুরুষ নয়, নারী সাংবাদিক। স্বাভাবিকভাবেই এবারের অভিযোগটা আরও বেশি গুরুতর। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির বিরুদ্ধে ‘ড্রেস ধর্ষণের’ অভিযোগ দায়ের করেছেন রাশিয়ার এক নারী সাংবাদিক!

ঘটনাটা গত ২ জুন রোববার, রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সাবার্গে। জার্মানি ও চিলির মধ্যকার ফিফা কনফেডারেশনস কাপের ফাইনাল ম্যাচটি দেখতে রাশিয়া ছুটে ম্যারাডোনা। উঠেন পিটার্সবার্গের এক হোটেলে। একাতেরিনা নাদোলস্কায়া নামের এক নারী সাংবাদিক অভিযোগ করেছেন হোটেলে নিজের রুমেই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি তাকে ‘ড্রেস ধর্ষণ’ করেছেন! যেনতেন জায়গায় নয়, ৩০ বছর বয়সী ওই সুদর্শনা সাংবাদিক সরাসরি রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির কাছে ‘ড্রেস ধর্ষণের’ মাধ্যমে তাকে হয়রানি করার অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরে গণমাধ্যমের কাছেও ঘটনার সবিস্তার বর্ণনা করেছেন মিস একাতেরিনা। ম্যারাডোনা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এসএম নিউজকে একাতেরিনা বলেছেন, ম্যারাডোনার সঙ্গে প্রথমে তার দেখা হয় হোটেল লবিতে। সেখানে তিনি ম্যারাডোনার একটা সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথা বলেন, ‘হোটেল লবিতে আমি তার একটা সাক্ষাৎকার করতে চাই। তিনি আমাকে তার রুমে যেতে বলে বলেন।’

প্রথমে একাতেরিনার এক বান্ধবীও তার সঙ্গে ছিল। কিন্তু তিনি লবি থেকেই চলে যান। একাতেরিনা ম্যারাডোনার রুমে যান একা, ‘আমি রুমে ঢোকার পরই ম্যারাডোনা দরজা লাগিয়ে দেন। প্রথমে তিনি আমার প্রশ্নে উত্তর দেওয়া শুরু করেন। কিন্তু দ্রুতই তিনি তার পোশাক খুলে ফেলে আমাকে উত্তপ্ত করা শুরু করেন। তখন তার পরনে ছিল শুধু আন্ডারওয়্যার। পরে আমাকেও পোশাক খুলতে জোর করেন। এবং জোর জবরদস্তি করে এক পর্যায়ে আমার পোশাক খুলেও ফেলেন। আমার পরনে তখন শুধু বিকিনি। আমি তাকে এসব বন্ধ করতে বলি এবং হুমকি দেই, বলি আমি কিন্তু পুলিশ ডাকব। ও মা, এ কথা শুনে তিনি নিজেই তখন হোটেল নিরাপত্তা কর্মীদের ডাকেন।’

একাতেরিনা অভিযোগ করেছেন হোটেল নিরাপত্তা কর্মীদের বিরুদ্ধেও, ‘৩ জন লোক এসে আমাকে রুম থেকে বারান্দায় নিয়ে যায়। আমার পোষাক, মোবাইল ফোন সেট রুমেই ছিল। আমাকে তারা শুধু বিকিনি পরা অবস্থায় তিন ঘণ্টা সেখানে বসিয়ে রাখে। পরে পুলিশ আসার পর আমি পোশাক ও জিনিসপত্র ফিরে পাই।’ ঘটনার পরপর ম্যারাডোনার এক সহকারি তার দিকে ৫০০ ডলার ছুঁড়ে মারেন বলেও উল্লেখ করেছেন একাতেরিনা। জোর করে পোষাক খুলে ফেলার পর প্রচণ্ড আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন রুশ মেয়ে। নিজের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তিনি হোটেলের সিসিটিভির ফুটেজ দেখারও অনুরোধ করেছেন।

দেশের আইন মেনেই হোটেলের নাম উল্লেখ্য করেনি রাশিয়ান পত্রিকাগুলো। অভিযোগ অস্বীকার করে ৫৬ বছর বয়সী উল্টো একাতেরিনাকেই অভিযুক্ত করেছেন। ম্যারাডোনার সঙ্গে থাকা তার খুব কাছের এক বন্ধু বলেছেন, ‘রুমে ঢোকার পরই ওই মহিলা পোশাক খোলা শুরু করে দেন। ম্যারাডোনার এটা পছন্দ হয়নি। সে ওই মহিলাকে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। কিন্তু ওই মহিলা বের না হওয়ায় সে নিরাপত্তা কর্মীদের ডাকে।’

রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটি সঙ্গে সঙ্গেই তদন্ত কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলে খবর। ওই হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং ম্যারাডোনাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে কী বেরিয়ে এসেছে তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা হয়নি।

তদন্তের পর জল কোন দিকে গড়ায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।