হাওর বার্তা ডেস্কঃ মাজেদ রহমান, জয়পুরহাট : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জয়পুরহাটে দুটি (সংসদীয় আসন-৩৪ ও ৩৫) আসনে মনোনয়ন প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ইফতার পার্টি, ঈদের কার্ড বিতরণ ও এলাকায় গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করে সম্ভব্য প্রার্থীরা জানান দিচ্ছেন তারা দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী।
অনেকেই কেন্দ্রের সবুজ সংকেত পেয়ে মাঠে কাজও শুরু করেছেন। নিজের নামে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ করছেন কেউ কেউ। জয়পুরহাট-২ আসনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বিএনপির সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফার।
গত দশম সংসদে জয়পুরহাট-১ আসন অর্থাৎ জাতীয় সংসদীয় ৩৪ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুল আলম দুদু। এবারও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি। নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রাপ্তির ব্যাপারে তিনি আশাবাদী বলে জানা গেছে।
এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম সোলায়মান আলী, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল, পাঁচবিবি পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, জয়পুরহাট সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ খাজা শামছুল ইসলাম মনোনয়ন
চাইবেন।
তবে জয়পুরহাট-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন বিগত তিনবারের সংসদ সদস্য যুদ্ধাপরাধে আজীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত প্রয়াত বিএনপি নেতা আবদুল আলীমের সন্তান ফয়সাল আলীম। তিনি ইতিমধ্যে গণসংযোগসহ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি সংসদীয় আসনের জয়পুরহাট ও পাঁচবিবি উপজেলায় দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মোজাহার আলী প্রধানও দলীয় মনোনয়ন পেতে তত্পরতা চালাচ্ছেন। স্থানীয়ভাবে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে অস্বস্তিতে ভুগছেন প্রার্থীরা। এ ছাড়াও এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শামসুল হক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ এইচ এম ওবাইদুর রহমান চন্দন। জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থী হিসেবে অনেকটা নিশ্চিত আ স ম তিতাস মোস্তফা। এরই মধ্যে তিনি নির্বাচনের অনানুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন। জামায়াতে ইসলামীর প্রভাব এ এলাকায় বেশি থাকলেও তাদের কোনো প্রার্থীর তত্পরতা লক্ষ্য করা যায়নি।
অন্যদিকে জয়পুরহাট-২ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। গত দশম জাতীয় সংসদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেও এ চার বছরে এলাকায় সাংগঠনিক ভিত অনেকটা শক্ত করেছেন তিনি। আগামী নির্বাচনে লড়তে তিনি পুরোপুরি প্রস্তুত। জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও নিজের ইমেজকে কাজে লাগিয়ে এলাকার উন্নয়নও করে যাচ্ছেন। এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম সোলায়মান আলীও মনোনয়নের জন্য তত্পরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে হামলা-মামলা আর আন্তঃকোন্দলে বিপর্যস্ত বিএনপির স্থানীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম। গত কয়েকটি স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের কারণে ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌর নির্বাচনে একটিতেও বিএনপি জয়ী হতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা। তবে বিএনপি থেকে বিগত তিনবারের সংসদ সদস্য ও সাবেক হুইপ আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমানের আলোচনাও রয়েছে দলের ভিতরে-বাইরে।
ওয়ান-ইলেভেনে আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান এলডিপিতে যোগদান করেন। তিনি বর্তমানে রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় নন। বিএনপির সবুজ সংকেত পেলে তিনি নির্বাচন করতে পারেন বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে। এ ছাড়াও বিএনপি থেকে সিরাজুল ইসলাম বিদ্যুৎ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ এইচ এম ওবাইদুর রহমান চন্দনও মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে জানা গেছে। মূলত জয়পুরহাট দুটি আসনেই লড়াই হবে বিএনপি আর আওয়ামী লীগের মধ্যে। বিডি প্রতিদিন