হাওর বার্তা ডেস্কঃ নির্বাচন দিয়ে যতটা স্বস্তি পাবেন, ক্ষমতা পাবেন বলে ভেবেছিলেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে, আসলে ঘটেছে তার উল্টো। এখন তার প্রধানমন্ত্রিত্বই বাঁচানো দায় হয়ে পড়েছে।
এ জন্য তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ডের অখ্যাত একটি দল ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির কাছে ধরনা দিচ্ছেন। রোববার রাত অবধি তাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেন তিনি।
নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর তিনি রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ফিরে ঘোষণা দেন, ডিইউপিকে নিয়ে সরকার গঠন করছেন তিনি। তারা তাকে সমর্থন দিচ্ছে। কিন্তু ভিতরের খবর হলো রোববার রাত অবধি ওই ছোট্ট দলটির সঙ্গে কোনো বনিবনা হয় নি। অর্থাৎ কোনো চুক্তিতে পৌঁছতে পারেন নি তেরেসা মে।
ওদিকে কানকথা ছড়িয়ে পড়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেষ্টায় আছেন বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। এ জন্য তার ঘনিষ্ঠ মহল তাকে চাপ দিচ্ছে। তবে তেরেসা মে ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তিনি এমনটা করবেন না।
এছাড়া এ দৌড়ে আছেন চ্যান্সেলর ফিলিপ হ্যামন্ড, ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড ও মাইকেল গভ। বার্তা সংস্থা এএফপি ও অনলাইন ডেইলি মেইলে এসব কথা বলা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে রোববার রাত পর্যন্ত যখন প্রধানমন্ত্রী তেরেসা কোনো ডিইউপির সঙ্গে কোনো সমঝোতায় উপনীত হতে পারেন নি, তখন বরিস জনসন শিবিরের দৌড়ঝাঁপ বেড়ে যায়। তারা বরিস জনসনকে দ্রুত প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান।
কিন্তু তেরেসা মে যতক্ষণ ক্ষমতায় থাকবেন ততক্ষণ বরিস জনসন কোনো পদক্ষেপ নেবেন না। ওদিকে এমওএস জরিপে দেখা যাচ্ছে, শতকরা ৪১ ভাগ মানুষ চাইছে তেরেসা মে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। ডেইলি মেইল লিখেছে, ১০ ডাউনিং স্ট্রিট ধরে রাখা প্রধানমন্ত্রী মের জন্য ক্রমশ এক ভঙ্গুর স্বপ্ন হয়ে উঠছে। আর এই ফাঁকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বরিস জনসন। রোববার রাতে তার শিবিরের তৎপরতার খবর দিয়েছেন তারই ঘনিষ্ঠ এক মিত্র।
তিনি বলেছেন, আমাদের এখন প্রয়োজন বোজো’কে ( বরিস জনসনকে এ নামে ডাকা হয়)। আমাদের এখন প্রয়োজন একজন ব্রেক্সিটিয়ার। আমাদের এখন এমন একজন নেতার প্রয়োজন যিনি জেরেমি করবিনের মতো কথা বলতে পারেন এবং জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। বরিস জনসনকে নিয়ে এ আলোচনা শুরু হয়েছে ডাউনিং স্ট্রিটের দু’জন উপদেষ্টার পদত্যাগের পর। আলোচনা ছড়িয়ে পড়েছে যে, প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে বরিস জনসনকে সমর্থন করেছেন মাইকেল গভ।
কিন্তু মাইকেল গভের বন্ধুরা তা অস্বীকার করেছেন। গত বছর নেতৃত্বের লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছিলেন এ দু’নেতা। এমওএস সারভেশন জরিপে দেখা গেছে, ভোটারদের শতকরা ৪৯ ভাগ চাইছেন তেরেসা মে’র পদত্যাগ। তিনি ক্ষমতায় থাকুন এমনটা চান মাত্র ৩৮ ভাগ। কনজারভেটিভদের ওয়েবসাইটে তাদের দলীয় সমর্থকদের একটি আলাদা জরিপ করা হয়।
তাতে দেখা গেছে দুই-তৃতীয়াংশ চাইছেন তেরেসা মে’র অবিলম্বে পদত্যাগ। নির্বাচনে কনজারভেটিভরা ১৩ আসন হারানোর পর দলীয় খুব কম এমপিই মনে করছেন এই গ্রীষ্মের শেষ পর্যন্ত টিকতে পারবেন ডাউনিং স্ট্রিটে। রোববার পদত্যাগ করেছেন তেরেসা মের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ নিক টিমোথি ও ফিওনা হিল।