সিলেটে ‘ঈদকেন্দ্রিক অপরাধ’ রুখতে সক্রিয় পুলিশ

সিলেটে ঈদ বাজারকে ঘিরে ক্রমশ ব্যস্ততা বাড়ছে নগরজীবনে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে সক্রিয় হচ্ছে অপরাধীরা। পাশাপাশি শপিংমলকেন্দ্রিক বখাটেপনা বা ইভটিজিংয়ে জড়িয়ে পড়ছে একশ্রেণীর যুবক। এসব ‘রমজান ও ঈদকেন্দ্রিক অপরাধীদের’ ধরতে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ।

সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) সূত্র জানিয়েছে, নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশের উৎসব ছুটি বাতিল করা হয়েছে। নগরে মোতায়েন করা হয়েছে সাদা পোশাকধারী বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য।

এসএমপি বলছে, ইভটিজারদের পাকড়াও করতে মার্কেটে কিংবা জনাকীর্ণ স্থানে থাকবে ৠাব-পুলিশের নারী গোয়েন্দা সদস্য। যারা ইভটিজারদের দেখা মাত্র ঝাপটে ধরবে। নারী সদস্যদের সহযোগিতায় থাকবেন সাদা পোশাকধারী পুরুষ গোয়েন্দারা। থাকবে ব্যাকআপ পার্টিও।

রোজা ও ঈদে সামনে রেখে নগরবাসীর নিরাপত্তায় এ ধরণের পরিকল্পনা হতে নেওয়া হয়েছে। দশ রমজানের পর থেকে এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে জানাচ্ছেন সিলেট নগর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, ঈদকে সামনে রেখে মানুষ যেন কেনাকাটায় নির্বিঘ্নে মার্কেটে ও রাস্তাঘাটে চলাচল করতে পারে-সেজন্য ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নগরীর মার্কেট, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ছাড়াও রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সিসি ক্যামেরা ছাড়াও পুলিশ প্রহরা থাকছে ব্যাংক ও ব্যাংকের বুথগুলোর সামনে। এসবের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থাকবে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) সদরদফতরে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবছরই ঈদ এলে ছিনতাইকারী, ঝাপটা পার্টি, সিএনজি অটোরিকশার উডকাটা পার্টি, অজ্ঞান পার্টিসহ বিভিন্ন নামে অপরাধীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এদের পাকড়াও করলেও অনেকে আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে ফের অপরাধে লিপ্ত হয়।

এছাড়া, ঈদের আগে শপিংমলগুলোতে তরুণীদের পিছু নিয়ে তাদের যৌন হয়রানি করে থাকে বখাটেরা। ভিড়ের মধ্যে ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটায় পার পেয়ে যায় অপরাধীরা। তাই এবার বখাটেদের ধরতে সুন্দরী পুলিশ কনস্টেবলদের ছদ্মবেশে মাঠে নামানোর পরিকল্পনা নিয়েছে এসএমপি।

ঈদকেন্দ্রিক নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে ৠাব-৯ এর মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, মাহে রমজানে সিলেটে ৠাবের শ’খানেক সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। ১২ রমজানের পর থেকে এই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। আর ঈদ ঘনিয়ে এলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর হবে।

তিনি জানান, ইভটিজারদের ধরতে নারী সদস্যদের মাঠে নামানো হয়েছে। ইভটিজিংয়ের অভিযোগে কেউ আটক হলে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে নয়, নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রচলিত আইনে মামলার আসামি করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) রহমত উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, নগরীতে দুই হাজার সদস্যকে নিরাপত্তায় মোতায়েন রাখা হবে। মার্কেটের সামনে ও নগরীর মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতোয়েন থাকবে। পাশাপাশি আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় থাকবে স্ট্রাইকিং ফোর্স। এজন্য ব্যাটালিয়ন পুলিশ থেকে আরও শ’খানেক পুলিশ নেওয়া হবে।

এছাড়া, নগরীর যানজট নিরসনের সঙ্গে অপরাধীদের শনাক্ত করতে চৌকি বসিয়ে তল্লাশি করবে ট্রাফিক পুলিশ।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সুজ্ঞান চাকমা বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতি উপজেলায় মার্কেট ও বাজারকেন্দ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সহস্রাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আর উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বদা রিজার্ভ ফোর্স থাকবে।

দশম রমজানের পর থেকে নিরাপত্তা পরিকল্পনায় আরেক দফা পরিবর্তন আনা হবে বলে জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর