ঢাকা ০৪:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শাকিল স্মরণে মুন্নী সাহা-প্রভাষ আমিনের ফেসবুক স্ট্যাটাস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:২৪:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৫২৭ বার

সোশাল মিডিয়া।।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী সদ্যপ্রয়াত মাহবুবুল হক শাকিলকে নিয়ে মুন্নী সাহা-প্রভাষ আমিনের ফেসবুক স্ট্যাটাস পূর্বপশ্চিমের পাঠকদের জন্য নিচে তুলে ধরা হলো।

মুন্নী সাহার স্ট্যাটাস-

নাহ পেলাম না।পাবো ক্যামনে, খুঁজবো বলে তো রাখিনি। সেই নোটপ্যাডটা, ঘরে ওষুধের শিশির পাশে, টেলিফোনের তলায় যেটা অযত্নে থাকে সেটা। কখনো কখনো জরুরি তাড়াহুডোর সময় কিছু লিখতে, নাম্বার নিতে, মনে রাখতে জরুরি হয়ে পরা অযত্নের নোট প্যাডটা… কিন্তু সেখানেই যে একটা ভোতাঁ পেন্সিল দিয়ে লিখেছিলাম শাকিল ভাইয়ের ডিকটেশন! কানের ওপাশে শাকিল ভাই ধমকের সুরে বলছেন — ” লিখছিস? হুম… তারপ..রে, তারপরে ল্যখ— একজন স্নেহময়ীর আকুলতা, তারঁ আদরের সন্তানতুল্য ভাইটির জন্য, নিজ হাতে রাধাঁ শর্ষে ইলিশ… নলেনগুড়ের পায়েশ। ভাইটিতো বড় অভিমানী, মা অথবা দিদির কাছে…যিনি জয়ের মা, পুতুলের মা, আদরের বিড়ালের মা, রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী “! শাকিলভাই বলছেন তো বলছেন, অামি প্রাইমারির ছাত্রীর মতো বানান ক’রে করে নোট নিচ্ছি, মাঝে মাঝে ফোড়ন কাটছি— এ্যাঁহে শর্ষে ইলিশ না, ইলিশ পোলাও. . আর পায়েশ পাইলেন কই?? আমার এই ইচ্ছাকৃত বিরক্তিকর ফোড়নে, মাহবুবুল হক শাকিল একটু চ্যত — “তুই ল্যখতো… বাল্ টা, খালি ডিস্টার্ব”! অনেক লম্বা, না গদ্য না পদ্য– খুবই আবেগী কিছু লাইন বলে শেষ করার পর, শাকিলভাই বললেন– দোস্ত পড়ে শোনা, কি লিখলাম। আমি ঘড়ঘড় করে পড়ে শোনালাম। ফোনের এ প্রান্ত থেকে শাকিলের হঠাৎ গলা ভাড় হয়ে যাওয়া টের পাচ্ছিলাম। (উল্লেখ্য, এ ফোনালাপ কিন্তু রাতের নয়… broad day light, 18 th January 2016, শাকিল ভাইয়ের রাতে ফোনাফুনি, এসএমএস চালাচালি, কবিতা গল্প, রোমান্টিকতার অনেক গল্প হয়তো চালু আছে। তবে কাজ করতে করতে অনেকদিন শাকিলভাই কে চিনতাম বটে, কিন্তু আমার সাথে তারঁ সখ্যতা হয়নি। শাকিলভাইই বলতেন, “তোরে একটু ঈর্ষা করি রে.. ক্যান? সেটা বলবোনা”!)
শাকিলের গলার ভারিক্কি ভাংতে একটু বিক্রমপুইরা এ্যকসেন্টে জিজ্ঞেস করলাম — তো কি কত্তাম, এই কাব্যমার্কা বয়ান দিয়া?
“তুই একটা স্ট্যটাস আর আমারে ট্যাগ কর”– শাকিলের অনুরোধ। বললাম– আপ্নে ড্রাফট কইরা দিলেন, সেইটা আমি স্ট্যাটাস দিমু..ক্যান দিমু কিল্লিগা দিমু, আর আপ্নে তো আমার ফ্রেন্ড লিস্টে নাই, তাছাড়া যা লেখার কথা, প্রধান মন্ত্রী.. ছোটভাই, ছোটআপা, স্নেহ, উৎকন্ঠা! সব ঠিক আছে, সব সত্য। কিন্তু আপনি একটি বিশেষ দ্বায়িত্বে, আমি সাংবাদিক। কাজের সুবাদে আমরা অনেক ভালো- মন্দের মুখোমুখি হই। সব কি পাবলিক করা যায়? we are blessed.. আমরা মানুষের ভালবাসা পেয়েছি, আমরা তাঁর ভালবাসা পেয়েছি! আমার বাক্যটি শেষ হতে না হতে মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে শাকিলভাই বললো— “we are blessed, কারন আমরা তাঁর ভালবাসা পেয়েছি!” পাগলা বন্ধুটি তখন শিশুর মত জানতে চায়, বল না বল না… আপা কি করলেন, মন খারাপ করছেন? আমি আবার বললাম… আরো দুইবার বললাম। চুপ করে ফোনে শুনতে শুনতে হঠাৎ তার আবদার —” দিদি আমি তোর পরামর্শ মানলাম, স্ট্যাটাস দিস্ না। তবে আমি মরলে কিন্তু তুই এই বর্ননাটা লিখবি, লিখবি তো?? শত্রুতা করিস না দ্যাখ, ভুত হইয়া কিন্তু তোরে হার্ডটাইম দিমু.. হা হা হা( কাদোঁ কাদোঁ ভেজা গলায় শাকিলের হাসি)”। আমি এককাঠি বেশী দুষ্টু। বললাম তুমি যখন মরবা,তখন আমি কই না কই থাকি, হয়তো পেত্নি হয়ে তেতুঁল গাছে নাচানাচি করি… আর ওনার এই কাহিনী লেখবো!! “নারে… আমি বলছি, তুই থাকবি, তোর মাথা, মন সব ঠিক থাকবে,আমি থাকবো না, আর আমার আব্দারটা থাকবে”— অনেক কনফিডেন্ট কন্ঠ শাকিল ভাইয়ের।
…….. হুম শাকিলভাই আপনার আবদার ব’লে কথা!

১৭ জানুয়ারি২০১৬. গনভবন। দুপুর।গল্প করছিলাম রেহানা আপার সাথে। হঠাৎ শাকিলভাই ঢুকলেন, কয়েকটা কাগজ রেখে চলে যাচ্ছিলেন। ছোটআপা পেছন থেকে ডাকলেন– জিজ্ঞেস করলেন আমার সাথে পরিচয় আছে কিনা। শাকিলভাই হ্যা – না কিছু না বলে, আমার দিকে তাকিয়ে বললেন— কি রে কেমন আছিস, কখন আসছিস?
শাকিল ভাই চলে যেতে না যেতেই রান্নাঘর থেকে অনেকটা দৌড়ে বেড়িয়ে এলেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। সাংবাদিকতার সুবাদে, দীর্ঘদিন পলিটিক্যাল বীট্ কাভার করার সুবাদে যিনি ঘরোয়া পরিবেশে আমাদের আপা। আর স্নেহ- মমতায় পরিপুষ্ট এই মানুষটি, যিনি নিজগুনে কাউকে কাউকে নিজের সন্তানের মত কাছের করে নেন। শাকিলভাই হয়তো সেই blessed দের একজন। তাই রান্নাঘর থেকে হাত মুছতে মুছতে, বলতে বলতে এলেন— “শাকিল চলে গেলো, চলে গেলো কেন, আমি ইলিশ পোলাও রাধঁলাম”। তারপর আমাদের প্রধানমন্ত্রী, অথবা একজন মা বা বড়বোন– ফোনে, তার সহকমী বা ভাই বা সন্তানতুল্য কাউকে নিজ হাতে রাধাঁ ইলিশ পোলাও খাওয়ানোর জন্য আদরমাখা মিনতি করছেন… সে এক অপূর্ব দৃশ্য, অদ্ভুত কনভার্সেশন। তিন হাত দূরে বসে আমি পুরো বিষয়ের স্বাক্ষী। ফোনটা ছেড়ে দিয়ে এককটু মনখারাপ সামলে নিলেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী। রেহানা আপা আর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, “নাহ ও একটু দূরে চলে গেছে, আসো তোমাদের দুজনের কপালেই আছে, গরম গরম খাও”!

তাঁর আন্তরিকতা, সারল্য, ভালবাসা আর স্বাভাবিক খুনসুটিঁ তে মুগ্ধ আমি শাকিল ভাই কে ফোন করলাম, গনভবন থেকে বেড়িয়েই। ২/১ লাইন বলতেই.. শাকিলের কান্না! আহারে, আমার বস্, আমার আপা, বঙ্গবন্ধুর কন্যা…
পরেরদিন সকালে একগল্প ভাঙ্গা রেকর্ডের মত শোনাতে হলো অনেকবার। যতবার থেমেছি, দারি দিয়েছি, শাকিল বলেছে… we are blessed… !
তুমি ভালবাসা পেয়েছো শাকিলভাই, you are blessed! আমি তোমার আবদার রাখলাম, কিন্তু its too much.. is that a viable die able time?? RIP

প্রভাষ আমিনের স্ট্যাটাস-

মন খারাপের সকাল
তিনি মূলত কবি। ‘মন খারাপের গাড়ি’ নামে তার একটি কবিতার বই আছে। কিন্তু কে জানতো ৪৮এ সবাইকে বিষন্ন করে মন খারাপের গাড়ি থেমে যাবে শেষ গন্তব্যে। বেঁচে থাকতে তাকে কখনো কিছু দেয়া যায়নি। আর এখন তো তিনি সব চাওয়া-পাওয়া, দেয়া-নেয়ার উর্ধ্বে। কাল ঘুমিয়েছেন হিমঘরে, আজ শুয়ে যাবেন মাটির ঘরে। তিনি ছিলেন অকপট। যা বিশ্বাস করতেন, বলে ফেলতেন। কত মধ্যরাতে ফোন করে, শিশুর মত হু হু করে কাঁদতে কাঁদতে বলতেন, আই লাভ ইউ ব্রাদার। আড়ষ্টতায় আমি তেমন বলতে পারতাম না। কিন্তু আমি জানি, তিনি জানতেন, আমরা তাকে কতটা ভালোবাসি। আর আজ যখন সবাই তার জন্য কাঁদছে, তখন তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে। যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

শাকিল স্মরণে মুন্নী সাহা-প্রভাষ আমিনের ফেসবুক স্ট্যাটাস

আপডেট টাইম : ০১:২৪:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৬

সোশাল মিডিয়া।।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী সদ্যপ্রয়াত মাহবুবুল হক শাকিলকে নিয়ে মুন্নী সাহা-প্রভাষ আমিনের ফেসবুক স্ট্যাটাস পূর্বপশ্চিমের পাঠকদের জন্য নিচে তুলে ধরা হলো।

মুন্নী সাহার স্ট্যাটাস-

নাহ পেলাম না।পাবো ক্যামনে, খুঁজবো বলে তো রাখিনি। সেই নোটপ্যাডটা, ঘরে ওষুধের শিশির পাশে, টেলিফোনের তলায় যেটা অযত্নে থাকে সেটা। কখনো কখনো জরুরি তাড়াহুডোর সময় কিছু লিখতে, নাম্বার নিতে, মনে রাখতে জরুরি হয়ে পরা অযত্নের নোট প্যাডটা… কিন্তু সেখানেই যে একটা ভোতাঁ পেন্সিল দিয়ে লিখেছিলাম শাকিল ভাইয়ের ডিকটেশন! কানের ওপাশে শাকিল ভাই ধমকের সুরে বলছেন — ” লিখছিস? হুম… তারপ..রে, তারপরে ল্যখ— একজন স্নেহময়ীর আকুলতা, তারঁ আদরের সন্তানতুল্য ভাইটির জন্য, নিজ হাতে রাধাঁ শর্ষে ইলিশ… নলেনগুড়ের পায়েশ। ভাইটিতো বড় অভিমানী, মা অথবা দিদির কাছে…যিনি জয়ের মা, পুতুলের মা, আদরের বিড়ালের মা, রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী “! শাকিলভাই বলছেন তো বলছেন, অামি প্রাইমারির ছাত্রীর মতো বানান ক’রে করে নোট নিচ্ছি, মাঝে মাঝে ফোড়ন কাটছি— এ্যাঁহে শর্ষে ইলিশ না, ইলিশ পোলাও. . আর পায়েশ পাইলেন কই?? আমার এই ইচ্ছাকৃত বিরক্তিকর ফোড়নে, মাহবুবুল হক শাকিল একটু চ্যত — “তুই ল্যখতো… বাল্ টা, খালি ডিস্টার্ব”! অনেক লম্বা, না গদ্য না পদ্য– খুবই আবেগী কিছু লাইন বলে শেষ করার পর, শাকিলভাই বললেন– দোস্ত পড়ে শোনা, কি লিখলাম। আমি ঘড়ঘড় করে পড়ে শোনালাম। ফোনের এ প্রান্ত থেকে শাকিলের হঠাৎ গলা ভাড় হয়ে যাওয়া টের পাচ্ছিলাম। (উল্লেখ্য, এ ফোনালাপ কিন্তু রাতের নয়… broad day light, 18 th January 2016, শাকিল ভাইয়ের রাতে ফোনাফুনি, এসএমএস চালাচালি, কবিতা গল্প, রোমান্টিকতার অনেক গল্প হয়তো চালু আছে। তবে কাজ করতে করতে অনেকদিন শাকিলভাই কে চিনতাম বটে, কিন্তু আমার সাথে তারঁ সখ্যতা হয়নি। শাকিলভাইই বলতেন, “তোরে একটু ঈর্ষা করি রে.. ক্যান? সেটা বলবোনা”!)
শাকিলের গলার ভারিক্কি ভাংতে একটু বিক্রমপুইরা এ্যকসেন্টে জিজ্ঞেস করলাম — তো কি কত্তাম, এই কাব্যমার্কা বয়ান দিয়া?
“তুই একটা স্ট্যটাস আর আমারে ট্যাগ কর”– শাকিলের অনুরোধ। বললাম– আপ্নে ড্রাফট কইরা দিলেন, সেইটা আমি স্ট্যাটাস দিমু..ক্যান দিমু কিল্লিগা দিমু, আর আপ্নে তো আমার ফ্রেন্ড লিস্টে নাই, তাছাড়া যা লেখার কথা, প্রধান মন্ত্রী.. ছোটভাই, ছোটআপা, স্নেহ, উৎকন্ঠা! সব ঠিক আছে, সব সত্য। কিন্তু আপনি একটি বিশেষ দ্বায়িত্বে, আমি সাংবাদিক। কাজের সুবাদে আমরা অনেক ভালো- মন্দের মুখোমুখি হই। সব কি পাবলিক করা যায়? we are blessed.. আমরা মানুষের ভালবাসা পেয়েছি, আমরা তাঁর ভালবাসা পেয়েছি! আমার বাক্যটি শেষ হতে না হতে মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে শাকিলভাই বললো— “we are blessed, কারন আমরা তাঁর ভালবাসা পেয়েছি!” পাগলা বন্ধুটি তখন শিশুর মত জানতে চায়, বল না বল না… আপা কি করলেন, মন খারাপ করছেন? আমি আবার বললাম… আরো দুইবার বললাম। চুপ করে ফোনে শুনতে শুনতে হঠাৎ তার আবদার —” দিদি আমি তোর পরামর্শ মানলাম, স্ট্যাটাস দিস্ না। তবে আমি মরলে কিন্তু তুই এই বর্ননাটা লিখবি, লিখবি তো?? শত্রুতা করিস না দ্যাখ, ভুত হইয়া কিন্তু তোরে হার্ডটাইম দিমু.. হা হা হা( কাদোঁ কাদোঁ ভেজা গলায় শাকিলের হাসি)”। আমি এককাঠি বেশী দুষ্টু। বললাম তুমি যখন মরবা,তখন আমি কই না কই থাকি, হয়তো পেত্নি হয়ে তেতুঁল গাছে নাচানাচি করি… আর ওনার এই কাহিনী লেখবো!! “নারে… আমি বলছি, তুই থাকবি, তোর মাথা, মন সব ঠিক থাকবে,আমি থাকবো না, আর আমার আব্দারটা থাকবে”— অনেক কনফিডেন্ট কন্ঠ শাকিল ভাইয়ের।
…….. হুম শাকিলভাই আপনার আবদার ব’লে কথা!

১৭ জানুয়ারি২০১৬. গনভবন। দুপুর।গল্প করছিলাম রেহানা আপার সাথে। হঠাৎ শাকিলভাই ঢুকলেন, কয়েকটা কাগজ রেখে চলে যাচ্ছিলেন। ছোটআপা পেছন থেকে ডাকলেন– জিজ্ঞেস করলেন আমার সাথে পরিচয় আছে কিনা। শাকিলভাই হ্যা – না কিছু না বলে, আমার দিকে তাকিয়ে বললেন— কি রে কেমন আছিস, কখন আসছিস?
শাকিল ভাই চলে যেতে না যেতেই রান্নাঘর থেকে অনেকটা দৌড়ে বেড়িয়ে এলেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। সাংবাদিকতার সুবাদে, দীর্ঘদিন পলিটিক্যাল বীট্ কাভার করার সুবাদে যিনি ঘরোয়া পরিবেশে আমাদের আপা। আর স্নেহ- মমতায় পরিপুষ্ট এই মানুষটি, যিনি নিজগুনে কাউকে কাউকে নিজের সন্তানের মত কাছের করে নেন। শাকিলভাই হয়তো সেই blessed দের একজন। তাই রান্নাঘর থেকে হাত মুছতে মুছতে, বলতে বলতে এলেন— “শাকিল চলে গেলো, চলে গেলো কেন, আমি ইলিশ পোলাও রাধঁলাম”। তারপর আমাদের প্রধানমন্ত্রী, অথবা একজন মা বা বড়বোন– ফোনে, তার সহকমী বা ভাই বা সন্তানতুল্য কাউকে নিজ হাতে রাধাঁ ইলিশ পোলাও খাওয়ানোর জন্য আদরমাখা মিনতি করছেন… সে এক অপূর্ব দৃশ্য, অদ্ভুত কনভার্সেশন। তিন হাত দূরে বসে আমি পুরো বিষয়ের স্বাক্ষী। ফোনটা ছেড়ে দিয়ে এককটু মনখারাপ সামলে নিলেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী। রেহানা আপা আর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, “নাহ ও একটু দূরে চলে গেছে, আসো তোমাদের দুজনের কপালেই আছে, গরম গরম খাও”!

তাঁর আন্তরিকতা, সারল্য, ভালবাসা আর স্বাভাবিক খুনসুটিঁ তে মুগ্ধ আমি শাকিল ভাই কে ফোন করলাম, গনভবন থেকে বেড়িয়েই। ২/১ লাইন বলতেই.. শাকিলের কান্না! আহারে, আমার বস্, আমার আপা, বঙ্গবন্ধুর কন্যা…
পরেরদিন সকালে একগল্প ভাঙ্গা রেকর্ডের মত শোনাতে হলো অনেকবার। যতবার থেমেছি, দারি দিয়েছি, শাকিল বলেছে… we are blessed… !
তুমি ভালবাসা পেয়েছো শাকিলভাই, you are blessed! আমি তোমার আবদার রাখলাম, কিন্তু its too much.. is that a viable die able time?? RIP

প্রভাষ আমিনের স্ট্যাটাস-

মন খারাপের সকাল
তিনি মূলত কবি। ‘মন খারাপের গাড়ি’ নামে তার একটি কবিতার বই আছে। কিন্তু কে জানতো ৪৮এ সবাইকে বিষন্ন করে মন খারাপের গাড়ি থেমে যাবে শেষ গন্তব্যে। বেঁচে থাকতে তাকে কখনো কিছু দেয়া যায়নি। আর এখন তো তিনি সব চাওয়া-পাওয়া, দেয়া-নেয়ার উর্ধ্বে। কাল ঘুমিয়েছেন হিমঘরে, আজ শুয়ে যাবেন মাটির ঘরে। তিনি ছিলেন অকপট। যা বিশ্বাস করতেন, বলে ফেলতেন। কত মধ্যরাতে ফোন করে, শিশুর মত হু হু করে কাঁদতে কাঁদতে বলতেন, আই লাভ ইউ ব্রাদার। আড়ষ্টতায় আমি তেমন বলতে পারতাম না। কিন্তু আমি জানি, তিনি জানতেন, আমরা তাকে কতটা ভালোবাসি। আর আজ যখন সবাই তার জন্য কাঁদছে, তখন তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে। যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন।