ঢাকা ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হঠাৎ কেন হাসিনার তোষামোদি ছেড়ে দিলো ভারতীয় মিডিয়া! উদ্দেশ্য কী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:২১:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
  • ১১ বার
নির্মম, পাষণ্ড, মানুষরূপী নরপিশাচ শব্দগুলোও বোধহয় কম হয়ে যাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিশেষণে। ২৪ এর গণঅভুত্থানে ইতিহাসের সবচেয়ে নারকীয় গণহত্যা চালিয়ে পরম মিত্র নরেন্দ্র মোদির ছায়াতলে ভারতে আশ্রয় নেয় এই গণহত্যাকারী। হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকেই ভারতীয় দালাল মিডিয়াগুলো লেগে পড়ে হাসিনার পক্ষে সাফাই গাইতে। বিশ্বব্যাপী ছড়াতে থাকে হাসিনার গুনগান আর বংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে সব প্রোপাগান্ডা।
তবে, এখন সময় বদলেছে জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। ভারতীয় দালাল মিডিয়াগুলোও তাদের সুর বদলেছে হাসিনাকে ঘিরে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা পদত্যাগ করে পালানোর পরও এক সময় ভারতীয় যে মিডিয়াগুলো হাসিনাকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বা সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করত তারাই এখন হাসিনার নামের আগে পলাতক প্রধানমন্ত্রী শব্দটি ব্যবহার করছে।
এমনকি এই তালিকায় রয়েছে, রিপাবলিক বাংলার মত মোদি বাদি চ্যানেলও। বাংলাদেশিদের কাছে মলম বিক্রেতা উপাধী পাওয়া হকার সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জনের মুখেও শোনা যাচ্ছে হাসিনার বিপক্ষে কিছু কথা। হঠাৎ করেই ভারতীয় মিডিয়ার এমন ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়ার পিছনের উদ্দেশ্য নিয়ে তাই চারিদিকে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।
বিশ্লেষকরা বিষয়টিকে দেখছেন, ভারতীয় মিডিয়াগুলোর এক ধরণের কৌশল হিসেবে। হঠাৎ করেই ওদের ইউটার্ন করাটা বিশেষ কোন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বলেই মত বিশেজ্ঞমহলের। যদিও তারা সামনে আনছেন বেশ কিছু বিষয়। প্রথমত, ভারতীয় মিডিয়া বুঝে গেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরতে পারবেন না। ইতিমধ্যে তার দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়েছে গণহত্যায় জড়িয়ে।
দ্বিতীয়ত, নির্বাচনের সময়ও খুব বেশি নেই। নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের মৃত্যু তত কাছাচ্ছে। ভারতীয় গোদি মিডিয়াগুলো বুঝে ফেলেছে এখন ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষে গলা ফাটিয়ে কোন লাভ নেই। তাই সুর বদলেছে ওরা। তৃতীয়ত, হাসিনার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে বাংলাদেশে। সে বাংলাদেশে ব্যাক করবে এটা ভাবা আর দিনের বেলায় চাঁদ দেখা দুটোই সমান কথা। তাই ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে আমাদের দাদা বাবুরা।
চতুর্থত, হাসিনা পালানোর পর ভারতীয় মিডিয়াগুলো বাংলাদেশের পর্যটকদের দেখলেই এক রকমের কথার আক্রমণ করে বসতো। যা রিরূপ প্রভাব ফেলে বাংলাদেশি পর্যটকদের মনে। তাই তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় ভারতের দিক থেকে। এতে করে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের রীতিমতো না খেয়ে মরার দশা হয়। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে গণমাধ্যমগুলোর অফিসের সামনে আন্দোলন করেন ভারতীয়রা। তাদের হাত থেকে বাঁচার জন্যও সাময়িক কৌশল হিসেবে হাসিনার তোষামোদি করা ছেড়ে দিয়েছে ভারতীয় মিডিয়া এই কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্লেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ সবাই হাসিনা সরকারের দমননীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় হাসিনা পালানোর শুরুতেই। ভারত যেনো বিশ্বের বুকে একমাত্র দেশ যারা সব জেনে বুঝেও ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষ নেয়। তবে ভারতীয় মিডিয়ার হাসিনা বন্দনা কমে যাওয়া আর তাকে পলাতক হিসেবে উল্লেখ করা প্রমাণ করে যে ভারতীয় দাদাবাবুরা তাদের সুর বদলেছে, ভুল কিছুটা হলেও বুঝেছে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হঠাৎ কেন হাসিনার তোষামোদি ছেড়ে দিলো ভারতীয় মিডিয়া! উদ্দেশ্য কী

আপডেট টাইম : ০৭:২১:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
নির্মম, পাষণ্ড, মানুষরূপী নরপিশাচ শব্দগুলোও বোধহয় কম হয়ে যাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিশেষণে। ২৪ এর গণঅভুত্থানে ইতিহাসের সবচেয়ে নারকীয় গণহত্যা চালিয়ে পরম মিত্র নরেন্দ্র মোদির ছায়াতলে ভারতে আশ্রয় নেয় এই গণহত্যাকারী। হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকেই ভারতীয় দালাল মিডিয়াগুলো লেগে পড়ে হাসিনার পক্ষে সাফাই গাইতে। বিশ্বব্যাপী ছড়াতে থাকে হাসিনার গুনগান আর বংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে সব প্রোপাগান্ডা।
তবে, এখন সময় বদলেছে জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। ভারতীয় দালাল মিডিয়াগুলোও তাদের সুর বদলেছে হাসিনাকে ঘিরে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা পদত্যাগ করে পালানোর পরও এক সময় ভারতীয় যে মিডিয়াগুলো হাসিনাকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বা সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করত তারাই এখন হাসিনার নামের আগে পলাতক প্রধানমন্ত্রী শব্দটি ব্যবহার করছে।
এমনকি এই তালিকায় রয়েছে, রিপাবলিক বাংলার মত মোদি বাদি চ্যানেলও। বাংলাদেশিদের কাছে মলম বিক্রেতা উপাধী পাওয়া হকার সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জনের মুখেও শোনা যাচ্ছে হাসিনার বিপক্ষে কিছু কথা। হঠাৎ করেই ভারতীয় মিডিয়ার এমন ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়ার পিছনের উদ্দেশ্য নিয়ে তাই চারিদিকে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।
বিশ্লেষকরা বিষয়টিকে দেখছেন, ভারতীয় মিডিয়াগুলোর এক ধরণের কৌশল হিসেবে। হঠাৎ করেই ওদের ইউটার্ন করাটা বিশেষ কোন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বলেই মত বিশেজ্ঞমহলের। যদিও তারা সামনে আনছেন বেশ কিছু বিষয়। প্রথমত, ভারতীয় মিডিয়া বুঝে গেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরতে পারবেন না। ইতিমধ্যে তার দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়েছে গণহত্যায় জড়িয়ে।
দ্বিতীয়ত, নির্বাচনের সময়ও খুব বেশি নেই। নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের মৃত্যু তত কাছাচ্ছে। ভারতীয় গোদি মিডিয়াগুলো বুঝে ফেলেছে এখন ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষে গলা ফাটিয়ে কোন লাভ নেই। তাই সুর বদলেছে ওরা। তৃতীয়ত, হাসিনার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে বাংলাদেশে। সে বাংলাদেশে ব্যাক করবে এটা ভাবা আর দিনের বেলায় চাঁদ দেখা দুটোই সমান কথা। তাই ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে আমাদের দাদা বাবুরা।
চতুর্থত, হাসিনা পালানোর পর ভারতীয় মিডিয়াগুলো বাংলাদেশের পর্যটকদের দেখলেই এক রকমের কথার আক্রমণ করে বসতো। যা রিরূপ প্রভাব ফেলে বাংলাদেশি পর্যটকদের মনে। তাই তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় ভারতের দিক থেকে। এতে করে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের রীতিমতো না খেয়ে মরার দশা হয়। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে গণমাধ্যমগুলোর অফিসের সামনে আন্দোলন করেন ভারতীয়রা। তাদের হাত থেকে বাঁচার জন্যও সাময়িক কৌশল হিসেবে হাসিনার তোষামোদি করা ছেড়ে দিয়েছে ভারতীয় মিডিয়া এই কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্লেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ সবাই হাসিনা সরকারের দমননীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় হাসিনা পালানোর শুরুতেই। ভারত যেনো বিশ্বের বুকে একমাত্র দেশ যারা সব জেনে বুঝেও ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষ নেয়। তবে ভারতীয় মিডিয়ার হাসিনা বন্দনা কমে যাওয়া আর তাকে পলাতক হিসেবে উল্লেখ করা প্রমাণ করে যে ভারতীয় দাদাবাবুরা তাদের সুর বদলেছে, ভুল কিছুটা হলেও বুঝেছে।