সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু ছিল ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার শীর্ষ উপদেষ্টা রিয়ার এডমিরাল আলি শামখানির ‘নিহত’ হওয়ার খবর। তবে আজ বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলী শামখানি বেঁচে আছেন।
এর আগে গত ১৩ জুন ইসরায়েল দাবি করেছিল, তাদের হামলায় শামখানি নিহত হয়েছেন। ইরানও প্রাথমিকভাবে তা নিশ্চিত করে।
তবে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা ও অন্যান্য গণমাধ্যম জানায়, তিনি আহত হলেও বেঁচে আছেন। দীর্ঘদিন তার কোনো ছবি বা বক্তব্য না আসায় মৃত্যু গুজব আরও জোরালো হয়।
শেষ পর্যন্ত শামখানির ছবি ও সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি আইআরআইবি। একইদিনে তিনি নিহত সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের জন্য আয়োজিত জানাজায় উপস্থিত ছিলেন- যেখানে তার নামেও জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
গত শনিবার অন্যান্য কমান্ডারদের জানাজায় শামখানিকে দেখা গেছে বলে আজকের প্রতিবেদনে জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। তারা বলেছে, শনিবার শামখানি কালো স্যুট ও কালো শার্ট পরে আসেন। তবে ওই সময় তার হাঁটতে কষ্ট হচ্ছিল। এছাড়া হাঁটার জন্য তিনি একটি লাঠিও ব্যবহার করছিলেন। তাকে ওই সময় বেশ দুর্বল, মুখ শুকনো এবং তার ঘাড়ের অংশটি বেঁকে আছে দেখা যাচ্ছিল।
গত শনিবার ইরানি টিভির এক সাক্ষাৎকারে শামখানি বলেন, ‘আমি বিছানায় শুয়ে ছিলাম। আমার স্ত্রী পাশের রুমে ঘুমাচ্ছিল। আমার যে ছেলে আমাদের সঙ্গে থাকে, সে হামলার ১০ মিনিট আগে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। হামলার পর প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটি কোনো ভূমিকম্প। কিন্তু তখন আমরা একটি গাড়ি যাওয়ার শব্দ শুনতে পাই। ওই সময় আমি বলি, ইসরায়েলিরা আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। ভবনটি ধসে পড়ায় অক্সিজেনের অভাবে আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ধ্বংসস্তূপের নিচে তিন ঘণ্টা আটকে ছিলাম। ওই সময় জোরে জোরে আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানকে ডাকছিলাম। তখন উদ্ধারকারীরা আমার কথা শুনতে পায়। তারা প্রথমে আমার পা খুঁজে বের করে। এরপর আমার পুরো দেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করে।’
এর আগে গত ১৩ জুন দখলদার ইসরায়েল ইরানে অতর্কিত হামলা চালায়। ওইদিন তেহরানে আলী শামখানির অ্যাপার্টমেন্ট লক্ষ্য করে মিসাইল ছোড়ে দখলদাররা। এতে তার অ্যাপার্টমেন্টটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এটির ছাদ ধসে পড়ে।