ঢাকা ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জ হাওরের থৈ থৈ জলে মুগ্ধ পর্যটকরা, দিন দিন বাড়ছে মানুষের ভিড়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
  • ৩৪ বার

চলছে বর্ষা মৌসুম। দিন দিন বাড়ছে পানি।  বর্ষা ও  উজান জোয়ারের পানিতে টইটম্বুর কিশোরগঞ্জের হাওর-বাওরের গ্রামগুলো । মিঠামইন থেকে বালিখলায় চোখ যতদূর যায় কেবই থৈ থৈ জলরাশি। স্বচ্ছ জলের চোখ-জুড়ানো দৃশ্য উপভোগ করতে ভিড় করছেন হাজারো পর্যটকরা। ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে হাওর ঘুরে গেছেন অনেকে। পর্যটকের স্রোত এখনো বাড়ছেই। তীব্র গরম উপেক্ষা করে প্রতিদিন দেশের নান প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছেন এই অঞ্চলে।

ঈদের ছুটিতে বালিখলা ও মিঠামইন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পর্যটকদের হাওরে প্রাণবন্ত ভিড়। অনেকে পরিবার নিয়ে, কেউ বন্ধুবান্ধব মিলে বেড়াতে এসেছেন। বর্ষার পানি বাড়তে থাকায় হাওরের সৌন্দর্য ধরা দিয়েছে নবরূপে। স্থানীয় এলাকার মাঝি, দোকানি, হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের মুখে হাসির ঝিলিক ঝলছে । পর্যটকদের আগমনে জমে উঠেছে তাদের ব্যবসা।

পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে মিঠামইন-নিকলী বেড়িবাঁধ এলাকা। গত ২০২০ সালে এই বেড়িবাঁধ নির্মাণের পর থেকে এটি ধীরে ধীরে দর্শনার্থীদের প্রধান গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে ছুটে আসে। ছাতিরচর এলাকায় ভাঙন রোধে রোপণ করা হয়েছে হাজার হাজার করচগাছ, যা হাওরের পরিবেশকে আরও শোভাময় করে তুলেছে।

স্থানীয় এক মাঝি বলেন, বর্ষা Such আমাদের রোজগার বাড়ে। তাই আমরা সারাবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি। পর্যটকদের ঘুরিয়ে বেড়ানো আমাদের মূল জীবিকার উপার্জন । কয়েকদিনের বৃষ্টিতে হাওরের পানি বাড়ছে, ফলে নৌভ্রমণের চাহিদাও বাড়ছে, যোগ করেন তিনি।

ঈদের ছুটিতে নরসিংদী থেকে আসা পর্যটক দলটির একজন, তিনি বলেন, নতুন পানি এসেছে হাওরে। ট্রলারে ঘুরেছি। খুব ভালো লেগেছে।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকালে এই অঞ্চলে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ পর্যটনকেন্দ্রিক আয়-রোজগারে যুক্ত থাকেন। ফলে পর্যটকদের উপস্থিতি শুধু বিনোদন নয় বরং অনেকের জীবিকার উৎসও বটে। হাওরের সৌন্দর্য রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো সজাগ দৃষ্টি রাখছে বলেও জানান তারা।

মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ঈদের পর থেকেই হাওরে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় জিরো পয়েন্ট এলাকায় পোশাকধারী ও সিভিল পুলিশ সদস্য মোতায়েন সবসময়ই রয়েছে। এছাড়া হাওরের পথে দুটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে যাতে দর্শনার্থীরা নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারেন।

হাওরের জলে যখন প্রকৃতির প্রতিচ্ছবি পড়ে, তখন যেন মানুষ নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়—কিশোরগঞ্জের হাওর আজ শুধুই আর জলাভূমি নয়, এটি হয়ে উঠেছে স্বস্তির এক নৈসর্গিক ঠিকানা।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কিশোরগঞ্জ হাওরের থৈ থৈ জলে মুগ্ধ পর্যটকরা, দিন দিন বাড়ছে মানুষের ভিড়

আপডেট টাইম : ১২:৪৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

চলছে বর্ষা মৌসুম। দিন দিন বাড়ছে পানি।  বর্ষা ও  উজান জোয়ারের পানিতে টইটম্বুর কিশোরগঞ্জের হাওর-বাওরের গ্রামগুলো । মিঠামইন থেকে বালিখলায় চোখ যতদূর যায় কেবই থৈ থৈ জলরাশি। স্বচ্ছ জলের চোখ-জুড়ানো দৃশ্য উপভোগ করতে ভিড় করছেন হাজারো পর্যটকরা। ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে হাওর ঘুরে গেছেন অনেকে। পর্যটকের স্রোত এখনো বাড়ছেই। তীব্র গরম উপেক্ষা করে প্রতিদিন দেশের নান প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছেন এই অঞ্চলে।

ঈদের ছুটিতে বালিখলা ও মিঠামইন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পর্যটকদের হাওরে প্রাণবন্ত ভিড়। অনেকে পরিবার নিয়ে, কেউ বন্ধুবান্ধব মিলে বেড়াতে এসেছেন। বর্ষার পানি বাড়তে থাকায় হাওরের সৌন্দর্য ধরা দিয়েছে নবরূপে। স্থানীয় এলাকার মাঝি, দোকানি, হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের মুখে হাসির ঝিলিক ঝলছে । পর্যটকদের আগমনে জমে উঠেছে তাদের ব্যবসা।

পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে মিঠামইন-নিকলী বেড়িবাঁধ এলাকা। গত ২০২০ সালে এই বেড়িবাঁধ নির্মাণের পর থেকে এটি ধীরে ধীরে দর্শনার্থীদের প্রধান গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে ছুটে আসে। ছাতিরচর এলাকায় ভাঙন রোধে রোপণ করা হয়েছে হাজার হাজার করচগাছ, যা হাওরের পরিবেশকে আরও শোভাময় করে তুলেছে।

স্থানীয় এক মাঝি বলেন, বর্ষা Such আমাদের রোজগার বাড়ে। তাই আমরা সারাবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি। পর্যটকদের ঘুরিয়ে বেড়ানো আমাদের মূল জীবিকার উপার্জন । কয়েকদিনের বৃষ্টিতে হাওরের পানি বাড়ছে, ফলে নৌভ্রমণের চাহিদাও বাড়ছে, যোগ করেন তিনি।

ঈদের ছুটিতে নরসিংদী থেকে আসা পর্যটক দলটির একজন, তিনি বলেন, নতুন পানি এসেছে হাওরে। ট্রলারে ঘুরেছি। খুব ভালো লেগেছে।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকালে এই অঞ্চলে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ পর্যটনকেন্দ্রিক আয়-রোজগারে যুক্ত থাকেন। ফলে পর্যটকদের উপস্থিতি শুধু বিনোদন নয় বরং অনেকের জীবিকার উৎসও বটে। হাওরের সৌন্দর্য রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো সজাগ দৃষ্টি রাখছে বলেও জানান তারা।

মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ঈদের পর থেকেই হাওরে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় জিরো পয়েন্ট এলাকায় পোশাকধারী ও সিভিল পুলিশ সদস্য মোতায়েন সবসময়ই রয়েছে। এছাড়া হাওরের পথে দুটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে যাতে দর্শনার্থীরা নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারেন।

হাওরের জলে যখন প্রকৃতির প্রতিচ্ছবি পড়ে, তখন যেন মানুষ নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়—কিশোরগঞ্জের হাওর আজ শুধুই আর জলাভূমি নয়, এটি হয়ে উঠেছে স্বস্তির এক নৈসর্গিক ঠিকানা।