ঢাকা ০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় হামলায় নিহত ৮১ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হামাস, ইসরায়েলের প্রত্যাখান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৬:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
  • ২০ বার

যুদ্ধবিরতির আলোচনা নিয়ে হামাস ও মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ভিন্ন বার্তা আসার পরও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সোমবার ভোর থেকে গাজা জুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৮১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে গাজা শহরেই ৫৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

আল-জাজিরার সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। প্রস্তাব অনুযায়ী, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারেও সম্মত হয়েছে তারা। তবে প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে ইসরায়েল।

হামাসের ঘনিষ্ঠ এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা জানান প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হামাস ১০ জন জিম্মিকে মুক্ত করবে। বিনিময়ে ৭০ দিন যুদ্ধ বন্ধ থাকবে। ওই সময়ের মধ্যে গাজার নির্দিষ্ট এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে ইসরায়েল এবং দীর্ঘদিন ধরে বন্দি থাকা বেশ কিছু সংখ্যক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে দেশটি।

ফিলিস্তিনের ওই কর্মকর্তা জানান, এ প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে হামাস।

যুদ্ধবিরতির ওই প্রস্তাবে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। এর আগে তিনি সিএনএনকে জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতি-জিম্মি চুক্তি যা যুদ্ধবন্ধের একটি উপায় তা এখন টেবিলে আছে। হামাসকে তা গ্রহণ করার অনুরোধ জানান। তবে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কতদিনের তা তিনি জানাননি।

তবে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল ওই তথ্য দিয়েছে। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসরায়েল যে প্রস্তাব পেয়েছে তা গ্রহণ করা যেকোনো সরকারের পক্ষে নেওয়া অসম্ভব।’

গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত আর হামলা থামেনি।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার রেখেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি জানিয়েছেন, হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ থামবে না।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৯৭৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ। শুধু হামলা নয়, ত্রাণবাহী যানবাহন আটকে রেখেছে সেনারা। এতে অনাহার ছড়িয়ে পড়ছে পুরো উপত্যকায়। গত দুইদিনে না খেয়ে মারা গেছে ২৯ জন। মৃত্যুঝুঁকিতে আছে ৭০ হাজার শিশু। জাতিসংঘ বলছে, সেখানে খাদ্য সংকটে মারাত্মক অপুষ্টি ছড়িয়ে পড়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন মুখপাত্র বলেছেন, গাজার সবাই কষ্ট পাচ্ছেন, কারণ হাসপাতালগুলোতে গুরুতর আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ফুরিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েল ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া ও হামলা তীব্র করায় অসংখ্য মানুষ আহত হচ্ছেন। তাদের চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজায় হামলায় নিহত ৮১ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হামাস, ইসরায়েলের প্রত্যাখান

আপডেট টাইম : ১০:২৬:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

যুদ্ধবিরতির আলোচনা নিয়ে হামাস ও মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ভিন্ন বার্তা আসার পরও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সোমবার ভোর থেকে গাজা জুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৮১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে গাজা শহরেই ৫৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

আল-জাজিরার সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। প্রস্তাব অনুযায়ী, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারেও সম্মত হয়েছে তারা। তবে প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে ইসরায়েল।

হামাসের ঘনিষ্ঠ এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা জানান প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হামাস ১০ জন জিম্মিকে মুক্ত করবে। বিনিময়ে ৭০ দিন যুদ্ধ বন্ধ থাকবে। ওই সময়ের মধ্যে গাজার নির্দিষ্ট এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে ইসরায়েল এবং দীর্ঘদিন ধরে বন্দি থাকা বেশ কিছু সংখ্যক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে দেশটি।

ফিলিস্তিনের ওই কর্মকর্তা জানান, এ প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে হামাস।

যুদ্ধবিরতির ওই প্রস্তাবে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। এর আগে তিনি সিএনএনকে জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতি-জিম্মি চুক্তি যা যুদ্ধবন্ধের একটি উপায় তা এখন টেবিলে আছে। হামাসকে তা গ্রহণ করার অনুরোধ জানান। তবে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কতদিনের তা তিনি জানাননি।

তবে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল ওই তথ্য দিয়েছে। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসরায়েল যে প্রস্তাব পেয়েছে তা গ্রহণ করা যেকোনো সরকারের পক্ষে নেওয়া অসম্ভব।’

গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত আর হামলা থামেনি।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার রেখেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি জানিয়েছেন, হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ থামবে না।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৯৭৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ। শুধু হামলা নয়, ত্রাণবাহী যানবাহন আটকে রেখেছে সেনারা। এতে অনাহার ছড়িয়ে পড়ছে পুরো উপত্যকায়। গত দুইদিনে না খেয়ে মারা গেছে ২৯ জন। মৃত্যুঝুঁকিতে আছে ৭০ হাজার শিশু। জাতিসংঘ বলছে, সেখানে খাদ্য সংকটে মারাত্মক অপুষ্টি ছড়িয়ে পড়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন মুখপাত্র বলেছেন, গাজার সবাই কষ্ট পাচ্ছেন, কারণ হাসপাতালগুলোতে গুরুতর আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ফুরিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েল ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া ও হামলা তীব্র করায় অসংখ্য মানুষ আহত হচ্ছেন। তাদের চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।