আজ ২৮ এপ্রিল কানাডায় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর দুই দিন আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এলাকাগুলোতে শেষ প্রচার চালান। ভোটারদের তিনি আশ^াস দেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তিনিই শক্তভাবে দাঁড়াতে পারবেন। খবর এএফপি।
খবরে বলা হয়, কার্নির লিবারেল পার্টির জয় কানাডার রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নাটকীয় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হবে। কেননা চলতি বছর ৬ জানুয়ারি জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার সময়ও বেশির ভাগ জরিপে কনজারভেটিভদের চেয়ে ২০ পয়েন্ট পিছিয়ে ছিল লিবারেল পার্টির নেতৃবৃন্দ। সেই সময় টোরি নেতা পিয়েরে পোইলিভর কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত হয়েছিল। কিন্তু যখনই পরের সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প কানাডাকে দখল করার বক্তব্য দেওয়া শুরু করলেন, সেই সময় দৃশ্যপট বদলাতে শুরু করে। ১৪ মার্চ কার্নি ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হয়ে ট্রাম্পের হুমকির বিরুদ্ধে তার স্পষ্ট বার্তা তুলে ধরেন। ট্রাম্পের বিরোধিতাই কার্নিকে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
কার্নি টরন্টোর ঠিক পশ্চিমে অবস্থিত মিসিসাগা নগরীর এক সমাবেশে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ আক্ষরিক অর্থেই বিশ্ব অর্থনীতিকে ভেঙে দিয়েছে। তিনি কানাডার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তিনি বলেন, কানাডিয়ানরা সেই বিশ্বাসঘাতকতার ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছে। কিন্তু আমাদের কখনই এর অভিজ্ঞতা ভুলে যাওয়া উচিত নয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের বিশৃঙ্খলার প্রয়োজন নেই, আমাদের শান্ত থাকা দরকার। আমাদের একজন পরিপক্ব মানুষ প্রয়োজন।
মার্ক কার্নির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কনজারভেটিভ নেতা পিয়েরে পোইলিভর। কার্নি রাজনীতির ময়দানে নতুন হলেও পোইলিভর দুই দশক থেকে পার্লামেন্টে রয়েছেন।
পোইলিভরও ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন। তবে লিবারেলদের অধীনে দুর্বল অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা কানাডাকে মার্কিন সুরক্ষাবাদের ফাঁদে ফেলার জন্য দায়ী করেন। জনমত জরিপে লিবারেল সরকার গঠনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তবে শেষ দিনগুলোয় প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। সরকারি সম্প্রচারক সিবিসির জরিপ সমষ্টি বিভিন্ন পয়েন্টে লিবারেলদের সাত থেকে আট পয়েন্টে এগিয়ে রাখে।
তবে শনিবার তারা লিবারেলদের সমর্থন ৪২.৫ শতাংশে রেখেছে, যেখানে টোরিদের সমর্থন ৩৮.৭ শতাংশ। লিবারেলদের সাহায্য করতে পারে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বামপন্থি নিউ ডেমোক্র্যাট এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী ব্লক কুইবেকোয়াদের সংখ্যা হ্রাস। বিগত নির্বাচনে এই দলগুলোর প্রতি শক্তিশালী সমর্থন ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, অন্টারিও ও কুইবেকের গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশগুলোতে লিবারেলদের আসন সংখ্যা হ্রাস করে।
কানাডার ২৮.৯ মিলিয়ন যোগ্য ভোটারের মধ্যে রেকর্ড ৭.৩ মিলিয়ন ইস্টার সপ্তাহান্তে আগাম ভোট দিয়েছেন, যা ২০২১ সালের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। সোমবার ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ফলাফল জানা যাবে।