৬.২ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল তুরস্কেরর সবচেয়ে জনবহুল শহর ইস্তাম্বুল। গত কয়েক বছরের মধ্যে ১ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি জনসংখ্যার শহরটিতে এটিই অন্যতম প্রবল কম্পন বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (এএফএডি)।
বুধবার দুপুরের এ ভূমিকম্পে শহরটিতে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে কম্পনের সঙ্গে সঙ্গেই বহু মানুষ ভবন থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। খবর রয়টার্সের।
ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের সংযোগস্থল বসফরাস প্রণালীর দুই তীরে অবস্থিত এ শহরের বাসিন্দাদের অনেকেই এ সময় পার্কে এসে জড়ো হন। কেউ কেউ বাড়ির সিঁড়িতে বসে থাকেন। আবার অনেকে বাইরে এসে দাঁড়িয়ে থাকেন। শহরের ইউরোপীয় অংশে কয়েকটি দোকানও বন্ধ হয়ে যায়।
জার্মানির ভূতাত্ত্বিক গবেষণা কেন্দ্র জিএফজেড জানিয়েছে, আজকের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.০২ এবং এর গভীরতা ছিল ১০ কিমি (৬.২১ মাইল)।
অন্যদিকে এএফএডি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল সিলিভরি অঞ্চলে। যে জায়গাটি ইস্তাম্বুল থেকে প্রায় ৮০ কিমি (৫০ মাইল) পশ্চিমে অবস্থিত এবং কম্পনটির গভীরতা ছিল ৬.৯২ কিমি (৪.৩ মাইল)।
এদিকে তুরস্কের পরিবহণ মন্ত্রী আব্দুল কাদির উরালোওগ্লু জানান, প্রাথমিকভাবে মহাসড়ক, বিমানবন্দর, ট্রেন ও সাবওয়েতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা সমস্যা দেখা যায়নি।
এদিকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টিজিআরটি জানায়, দিনটি তুরস্কে সরকারি ছুটির দিন। এমন দিনে ভূকম্পনের ফলে এক ব্যক্তি আতঙ্কে ব্যালকনি থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হন।
ইস্তাম্বুলের গভর্নরের কার্যালয় জানিয়েছে, কোনো ভবন ধসের খবর পাওয়া যায়নি। তবে মানুষকে অনুরোধ করা হয়েছে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের কাছে না যাওয়ার জন্য এবং শান্ত থাকার জন্য।
এদিকে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এক এক্স বার্তায় জানিয়েছেন, তিনি পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
তার কার্যালয়ও পরবর্তী ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে জনগণ কী করবে, সে বিষয়েও নির্দেশনা জারি করেছে।
আগের ভূমিকম্পের স্মৃতি
মাত্র দু’বছর আগে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ও বিধ্বংসী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ৭.৮ মাত্রার সেই ভূমিকম্পে দক্ষিণ তুরস্ক ও উত্তর সিরিয়ায় ৫৫,০০০-এর বেশি মানুষ নিহত এবং ১,০৭,০০০ জন আহত হয়।
সেই ঘটনার জেরে এখনো বহু মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে বসবাস করছে।
এছাড়া ১৯৯৯ সালে ইস্তাম্বুলের কাছাকাছি অঞ্চলে ঘটে যাওয়া এক ভূমিকম্পে ১৭,০০০ মানুষ প্রাণ হারায়। সেই ঘটনার স্মৃতি আজকের ভূমিকম্পের দিনে আরও প্রগাঢ় করে তুলেছে।