ঢাকা ১১:৪১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুট জেট ফুয়েলের মূল্য হ্রাসে কমবে উড়োজাহাজ ভাড়া আমার সোনার বাংলা’ যেভাবে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হলো মাহফুজ ভাইয়ের সঙ্গে যা ঘটলো, তাতে হতাশ হয়েছি: আসিফ মাহমুদ আমি কখনই ক্রিকেট খেলা শিখিনি, এখন চেষ্টা করছি: তিশা মাদক-অপকর্মের আখড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আগেভাগেই ঢাকায় আসবেন হামজা উপদেষ্টা মাহফুজকে লাঞ্ছিত করায় হাসনাতের ক্ষোভ জনদাবির মুখে ছাত্র উপদেষ্টাদের ঠেলে দেওয়ার আচরণ সন্দেহজনক বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে শওকত ওসমানের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা বৃষ্টিতে ভিজে শাহবাগে আন্দোলন করছেন নার্সিং শিক্ষার্থীরা ইউক্রেন যুদ্ধ তুরস্কে গিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে চান ট্রাম্প

বিরোধীদের দমন ১১ রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করল আরব আমিরাত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১২:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৪ বার

রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-পীড়নের অংশ হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ১১ জন ভিন্নমতাবলম্বী ও তাদের স্বজনদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) একে ‘ভিন্নমত দমনের নজিরবিহীন পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

একতরফা সিদ্ধান্তে সন্ত্রাসী তালিকা ঘোষণা

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইউএই কর্তৃপক্ষ একতরফাভাবে এই ১১ ব্যক্তি ও আটটি কোম্পানিকে সন্ত্রাসী তালিকায় যুক্ত করে, যাদের বিরুদ্ধে মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ আনা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, তালিকাভুক্তদের পূর্বে কোনো সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি এবং তাদের নিজেদের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়নি।

এইচআরডব্লিউ’র তথ্যমতে, আটটি কোম্পানি যুক্তরাজ্যে নিবন্ধিত এবং সবগুলোই ভিন্নমতালম্বী আমিরাতিদের বা তাদের স্বজনদের মালিকানাধীন, বর্তমানে বা পূর্বে।

নির্বিচারে পরিবারের সদস্যদেরও টার্গেট

তালিকাভুক্ত ১১ জনের মধ্যে অন্তত ৯ জন রাজনৈতিক বিরোধী বা তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। এদের মধ্যে মাত্র দু’জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ-সম্পর্কিত কোনো অভিযোগ বা দণ্ড রয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সীমান্ত পেরিয়ে ভিন্নমত দমন-এর অংশ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছে, এই পদক্ষেপ কেবল বিরোধীদেরই নয়, তাদের পরিবারকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে।

‘সন্ত্রাসী’ তকমার প্রভাব

এ তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার কথা প্রথম জানতে পারেন সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘ওয়াম’-এর প্রকাশিত সংবাদ থেকে। একজন ক্ষুব্ধ ব্যক্তি এইচআরডব্লিউ’কে বলেন, আমরা বিস্মিত হয়েছি যে হঠাৎ করে আমাদের নাম সন্ত্রাস মামলায় চলে এসেছে। কোনো মামলা নেই, কোনো বিচারকের রায় নেই।

প্রতিবাদের কোনো স্থান নেই

সংযুক্ত আরব আমিরাত সাতটি আমিরাত নিয়ে গঠিত, যেখানে আবুধাবির আল নাহিয়ান পরিবার শাসন করে। দুবাই ও আবুধাবি বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হলেও, দেশে রাজনৈতিক বিরোধিতা বা প্রতিবাদের কোনো স্থান নেই।

২০১১ সালের আরব বসন্তের সময় যখন মধ্যপ্রাচ্যের অনেক স্বৈরশাসক জনবিক্ষোভে পদচ্যুত হন, তখনই ইউএই রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্মূল করতে অভিযান শুরু করে। ২০১২ সালে মুসলিম ব্রাদারহুড সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় চালায় দেশটির স্টেট সিকিউরিটি অ্যাপারেটাস)।

২০১৪ সালে দেশটি ৮৩টি সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, ইউএই’র ২০১৪ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনটি অতিরিক্তভাবে বিস্তৃত এবং সরকারকে যথাযথ প্রমাণ ছাড়াই যেকোনো ব্যক্তি বা সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণার সুযোগ দেয়।

সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, যোগাযোগ নিষিদ্ধ

এই তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদের সম্পত্তি জব্দ করা হয় এবং তারা যেখানে থাকেন, সেখান থেকেও সম্পদ বাজেয়াপ্তের ঝুঁকিতে থাকেন। এমনকি যারা এই ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, তারাও আইনি ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। এই আইনে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

একজন বলেন, আমি বারবার ফোন করছি কিন্তু কেউ রিসিভ করছে না। যা আগে কখনো হয়নি। এখন আমি আমার মা, বোনদের ফোন করছি কিন্তু কেউ ধরছে না। এটা স্পষ্ট যে আমাদের পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুট জেট ফুয়েলের মূল্য হ্রাসে কমবে উড়োজাহাজ ভাড়া

বিরোধীদের দমন ১১ রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করল আরব আমিরাত

আপডেট টাইম : ১১:১২:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-পীড়নের অংশ হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ১১ জন ভিন্নমতাবলম্বী ও তাদের স্বজনদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) একে ‘ভিন্নমত দমনের নজিরবিহীন পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

একতরফা সিদ্ধান্তে সন্ত্রাসী তালিকা ঘোষণা

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইউএই কর্তৃপক্ষ একতরফাভাবে এই ১১ ব্যক্তি ও আটটি কোম্পানিকে সন্ত্রাসী তালিকায় যুক্ত করে, যাদের বিরুদ্ধে মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ আনা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, তালিকাভুক্তদের পূর্বে কোনো সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি এবং তাদের নিজেদের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়নি।

এইচআরডব্লিউ’র তথ্যমতে, আটটি কোম্পানি যুক্তরাজ্যে নিবন্ধিত এবং সবগুলোই ভিন্নমতালম্বী আমিরাতিদের বা তাদের স্বজনদের মালিকানাধীন, বর্তমানে বা পূর্বে।

নির্বিচারে পরিবারের সদস্যদেরও টার্গেট

তালিকাভুক্ত ১১ জনের মধ্যে অন্তত ৯ জন রাজনৈতিক বিরোধী বা তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। এদের মধ্যে মাত্র দু’জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ-সম্পর্কিত কোনো অভিযোগ বা দণ্ড রয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সীমান্ত পেরিয়ে ভিন্নমত দমন-এর অংশ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছে, এই পদক্ষেপ কেবল বিরোধীদেরই নয়, তাদের পরিবারকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে।

‘সন্ত্রাসী’ তকমার প্রভাব

এ তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার কথা প্রথম জানতে পারেন সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘ওয়াম’-এর প্রকাশিত সংবাদ থেকে। একজন ক্ষুব্ধ ব্যক্তি এইচআরডব্লিউ’কে বলেন, আমরা বিস্মিত হয়েছি যে হঠাৎ করে আমাদের নাম সন্ত্রাস মামলায় চলে এসেছে। কোনো মামলা নেই, কোনো বিচারকের রায় নেই।

প্রতিবাদের কোনো স্থান নেই

সংযুক্ত আরব আমিরাত সাতটি আমিরাত নিয়ে গঠিত, যেখানে আবুধাবির আল নাহিয়ান পরিবার শাসন করে। দুবাই ও আবুধাবি বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হলেও, দেশে রাজনৈতিক বিরোধিতা বা প্রতিবাদের কোনো স্থান নেই।

২০১১ সালের আরব বসন্তের সময় যখন মধ্যপ্রাচ্যের অনেক স্বৈরশাসক জনবিক্ষোভে পদচ্যুত হন, তখনই ইউএই রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্মূল করতে অভিযান শুরু করে। ২০১২ সালে মুসলিম ব্রাদারহুড সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় চালায় দেশটির স্টেট সিকিউরিটি অ্যাপারেটাস)।

২০১৪ সালে দেশটি ৮৩টি সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, ইউএই’র ২০১৪ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনটি অতিরিক্তভাবে বিস্তৃত এবং সরকারকে যথাযথ প্রমাণ ছাড়াই যেকোনো ব্যক্তি বা সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণার সুযোগ দেয়।

সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, যোগাযোগ নিষিদ্ধ

এই তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদের সম্পত্তি জব্দ করা হয় এবং তারা যেখানে থাকেন, সেখান থেকেও সম্পদ বাজেয়াপ্তের ঝুঁকিতে থাকেন। এমনকি যারা এই ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, তারাও আইনি ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। এই আইনে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

একজন বলেন, আমি বারবার ফোন করছি কিন্তু কেউ রিসিভ করছে না। যা আগে কখনো হয়নি। এখন আমি আমার মা, বোনদের ফোন করছি কিন্তু কেউ ধরছে না। এটা স্পষ্ট যে আমাদের পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।