ফেনীতে কালবৈশাখী হানা দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া প্রবল ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুর ১২টার পর ঘন কালো মেঘে ঢেকে যায় ফেনীর আকাশ। সাড়ে ১২টার দিকে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। ১০ মিনিট পর শুরু হয় প্রবল দমকা হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টি, যা চলে বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২ থেকে ১৮ কিলোমিটার, যা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ ফেনীতে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এ মৌসুমের সর্বোচ্চ। বেলা ৩টায় জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঝড়ে জেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠজুড়ে আধা-পাকা ও কাঁচা ধান মাটিতে হেলে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পেঁপে, লাউ, কুমড়া ও অন্যান্য শাকসবজির খেত। এ ছাড়া দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। শহরের পৌরসভা এলাকা, শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। চলমান এসএসসি পরীক্ষার্থীরা ও কর্মজীবী মানুষ পথ চলতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হন। কিছু সময়ের জন্য যানবাহন চলাচলও ব্যাহত হয়। তবে কালবৈশাখীর এই তাণ্ডবের মধ্যেও কিছুটা স্বস্তির পরশ এনে দেয় নিম্নমুখী তাপমাত্রা। টানা গরমের পর ঠান্ডা আবহাওয়া ফেনীবাসীকে স্বস্তি দেয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ফেনী কার্যালয়ের উচ্চমান পর্যবেক্ষক মো. মুজিবুর রহমান জানান, পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে এই ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে তাপমাত্রায় বড়ধরনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
ফেনী জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষি খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের কাজ চলছে। প্রাথমিকভাবে ধান ও সবজির ক্ষতির চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন জানান, ঝড়ে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য পাননি তিনি। তবে কিছু কিছু এলাকায় ধান মাটিতে হেলে পড়েছে।