ঢাকা ১১:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জেগে উঠছে বিশাল কৃষ্ণগহ্বর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৮:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • ১১ বার

ভার্গো নক্ষত্রমন্ডলে একটি ছায়পথের কেন্দ্রস্থলে একটি বিশাল কৃষ্ণগহ্বর জেগে উঠছে।নিয়মিত বিরতিতে তীব্র এক্স-রে ফ্লেয়ার বের করছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গতকাল শুক্রবার এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবী থেকে ৩০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত ‘এসডিএসএস১৩৩৫+০৭২৮’ ছায়াপথের দিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আগে খুব একটা মনোযোগী ছিলেন না। তবে ২০১৯ সালে, ছায়াপথটি হঠাৎ করে এমন উজ্জ্বল হতে শুরু করে। এরপর বিজ্ঞানীরা কিছু টেলিস্কোপ ছায়াপথটির দিকে ঘুরিয়ে দেন।

পরে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে, চিলির জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ছায়াপথ থেকে নিয়মিত এক্স-রে বিস্ফোরণ লক্ষ্য করেন। ন্যাচার অ্যাস্ট্রোনমি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, এটির একটি লক্ষণ ছিল যে ছায়াপথের ঘুমন্ত কৃষ্ণগহ্বরটি তার ঘুম থেকে জেগে উঠছে।

বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘আমাদের মিল্কিওয়ে সহ বেশিরভাগ ছায়াপথের কেন্দ্রে একটি অতিবৃহৎ কৃষ্ণগহ্বর থাকে, যেমন মাকড়সার জালের কেন্দ্রে একটি মাকড়সা বসে থাকে। এই অদৃশ্য দানবরা তাদের পথে আসা সবকিছুই গ্রাস করে ফেলে, এমনকি আলোও তাদের প্রবল মহাকর্ষ শক্তি থেকে পালাতে পারে না। যদি দুর্ভাগ্যজনক কোন নক্ষত্র খুব কাছে চলে যায়, তাহলে এটি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।’

নক্ষত্রের ছিন্নভিন্ন পদার্থ একটি স্রোতে পরিণত হয় যা কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে দ্রুত ঘোরে, যাকে বলা হয় অ্যাক্রিশন ডিস্ক যা ধীরে ধীরে গ্রাস করা হয়। তবে কৃষ্ণগহ্বরগুলো দীর্ঘ সময় ধরে নিষ্ক্রিয়তার মধ্য দিয়েও যেতে পারে যখন তারা পদার্থকে আকর্ষণ করে না।

বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত সময়ের পরে, ‘এসডিএসএস১৩৩৫+০৭২৮’ ছায়াপথের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত উজ্জ্বল, কম্প্যাক্ট অঞ্চলটিকে একটি ‘সক্রিয় গ্যালাকটিক নিউক্লিয়াস’ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে এবং এটির ডাকনাম রাখা হয়েছে ‘আনস্কি’।

চিলির ভালপারাইসো বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী লোরেনা হার্নান্দেজ-গার্সিয়া বলেছেন, ‘এই বিরল ঘটনাটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য বেশ কয়েকটি এক্স-রে টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বাস্তব সময়ে একটি কৃষ্ণগহ্বরের আচরণ পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ করে দেয়।’

আনস্কির স্বল্পস্থায়ী এক্স-রে অগ্নিতরঙ্গগুলোকে কোয়াসিপিরিওডিক (পুরোপুরি পর্যায়ক্রমিক নয়) অগ্ন্যুৎপাত বা কিউপিই বলা হয়। হার্নান্দেজ-গার্সিয়া বলেন, ‘এই প্রথম আমরা এমন একটি কৃষ্ণগহ্বরে এমন একটি ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছি যা জেগে উঠছে বলে মনে হচ্ছে।’ তিনি বলেন,‘আমরা এখনও বুঝতে পারি না যে এর কারণ কী।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জেগে উঠছে বিশাল কৃষ্ণগহ্বর

আপডেট টাইম : ১০:২৮:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

ভার্গো নক্ষত্রমন্ডলে একটি ছায়পথের কেন্দ্রস্থলে একটি বিশাল কৃষ্ণগহ্বর জেগে উঠছে।নিয়মিত বিরতিতে তীব্র এক্স-রে ফ্লেয়ার বের করছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গতকাল শুক্রবার এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবী থেকে ৩০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত ‘এসডিএসএস১৩৩৫+০৭২৮’ ছায়াপথের দিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আগে খুব একটা মনোযোগী ছিলেন না। তবে ২০১৯ সালে, ছায়াপথটি হঠাৎ করে এমন উজ্জ্বল হতে শুরু করে। এরপর বিজ্ঞানীরা কিছু টেলিস্কোপ ছায়াপথটির দিকে ঘুরিয়ে দেন।

পরে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে, চিলির জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ছায়াপথ থেকে নিয়মিত এক্স-রে বিস্ফোরণ লক্ষ্য করেন। ন্যাচার অ্যাস্ট্রোনমি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, এটির একটি লক্ষণ ছিল যে ছায়াপথের ঘুমন্ত কৃষ্ণগহ্বরটি তার ঘুম থেকে জেগে উঠছে।

বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘আমাদের মিল্কিওয়ে সহ বেশিরভাগ ছায়াপথের কেন্দ্রে একটি অতিবৃহৎ কৃষ্ণগহ্বর থাকে, যেমন মাকড়সার জালের কেন্দ্রে একটি মাকড়সা বসে থাকে। এই অদৃশ্য দানবরা তাদের পথে আসা সবকিছুই গ্রাস করে ফেলে, এমনকি আলোও তাদের প্রবল মহাকর্ষ শক্তি থেকে পালাতে পারে না। যদি দুর্ভাগ্যজনক কোন নক্ষত্র খুব কাছে চলে যায়, তাহলে এটি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।’

নক্ষত্রের ছিন্নভিন্ন পদার্থ একটি স্রোতে পরিণত হয় যা কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে দ্রুত ঘোরে, যাকে বলা হয় অ্যাক্রিশন ডিস্ক যা ধীরে ধীরে গ্রাস করা হয়। তবে কৃষ্ণগহ্বরগুলো দীর্ঘ সময় ধরে নিষ্ক্রিয়তার মধ্য দিয়েও যেতে পারে যখন তারা পদার্থকে আকর্ষণ করে না।

বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত সময়ের পরে, ‘এসডিএসএস১৩৩৫+০৭২৮’ ছায়াপথের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত উজ্জ্বল, কম্প্যাক্ট অঞ্চলটিকে একটি ‘সক্রিয় গ্যালাকটিক নিউক্লিয়াস’ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে এবং এটির ডাকনাম রাখা হয়েছে ‘আনস্কি’।

চিলির ভালপারাইসো বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী লোরেনা হার্নান্দেজ-গার্সিয়া বলেছেন, ‘এই বিরল ঘটনাটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য বেশ কয়েকটি এক্স-রে টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বাস্তব সময়ে একটি কৃষ্ণগহ্বরের আচরণ পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ করে দেয়।’

আনস্কির স্বল্পস্থায়ী এক্স-রে অগ্নিতরঙ্গগুলোকে কোয়াসিপিরিওডিক (পুরোপুরি পর্যায়ক্রমিক নয়) অগ্ন্যুৎপাত বা কিউপিই বলা হয়। হার্নান্দেজ-গার্সিয়া বলেন, ‘এই প্রথম আমরা এমন একটি কৃষ্ণগহ্বরে এমন একটি ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছি যা জেগে উঠছে বলে মনে হচ্ছে।’ তিনি বলেন,‘আমরা এখনও বুঝতে পারি না যে এর কারণ কী।’