ঢাকা ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওর এলাকাকে ভাটি অঞ্চলও বলা হয় ভাটির দেশ- বাংলাদেশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:০১:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৬
  • ৩৬১ বার

ভাটির দেশ- বাংলাদেশ। হাওর এলাকাকে ভাটি এলাকা বা ভাটি অঞ্চলও বলা হয়। বাংলার ষড় ঋতুর ঋতু বৈশিষ্ট্য, লীলা খেলা এত সুন্দর ও স্পষ্টভাবে হাওর ছাড়া দেশের আর কোথাও দেখা যায় না। হাওর হচ্ছে ঋতু বৈচিত্রের চারণ ভ’মি, লীলা নিকেতন।। বাংলার আদি ও আসল রূপ অপরূপ হয়ে একমাত্র হাওরেই দেখা সম্ভব। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সম্পদে ভরপুর, লোক সংস্কৃতি, ঐতিহ্যর লালন, পালন, ধারক ও বাহক হচ্ছে হাওর এলাকা। হাওরের দু’টি রূপ। শুষ্ক মৌসুমে-শীতকালে এবং বর্ষায় একে অপরের সম্পূর্ণ বিপরিত রূপ ও বৈশিষ্ট্য ধারণ করে হাওর হয়েছে রুপের রাণী। হাওরের এ রূপ সাগরে অবগাহনের অপার সম্ভাবনা আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকে।

পৃথিবীর তাবৎ সুস্থ ও সুন্দর বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো গড়ে উঠেছে পানিকে কেন্দ্র করে, পানির ধারে বা পানির মাঝে। আর সে পানি যদি হয় ’মিঠা পানি’, তবে তো সোনায় সোহাগা। হাওর হচ্ছে মিঠা পানির আল্লাহ প্রদত্ত এরকম এক অপার উৎস ও নিয়ামত। সারা পৃথিবীর মাঝে মিঠা পানির এত বড় একক ’ওয়াটার বডি’ আর দ্বিতীয়টি আছে বলে আমার জানা নেই। বর্ষার সাত মাসে এর আয়তন দাঁড়ায় প্রায় পাঁচ হাজার বর্গমাইল। কোন কুল কিনারা পাবেন না। চারিদিকে পানি শুধু অথৈ, থৈ থৈ পানি। প্রায় দুই কোটি লোক এখানে বসবাস করে। হাওর হচ্ছে সাগরেরই অপর রূপ। সাগরের সকল রূপ বৈশিষ্ট্য এতে রয়েছে। ’হাওর’ শব্দটির উৎপত্তিও সাগর থেকে সায়র; আর সায়র অপভ্রংশ হয়ে ’হাওর’ হয়েছে বলে ভাষা বিজ্ঞানীদের অভিমত।

হাওর হচ্ছে একটা বিশাল চ্যাপ্টা বাটির মতো, বেসিন বিশেষ, যাতে বর্ষায় পানি জমে সাগরের রূপধারণ করে। আর শুষ্কে দিগন্ত জোড়া নয়নাভিরাম মাঠে সবুজের সমারোহ। সবুজ ধান ক্ষেতের বুক চিড়ে বহমান সর্পিল মেঠু পথ বা ডুবা সড়ক বা কৃষকের ব্যস্ত কর্মযজ্ঞ দেখার আকর্ষণ, আপনাকে ঘুরে বেড়াতে হাতছানি দিযে ডাকবে। সাগরের মতো বিশাল ও ব্ড় বড় হাওরের মাঝে রয়েছে কচুরী পানার মতো ভাসমান দ্বীপ-গ্রাম। ’কাকের চোখে’র ন্যায় কালো ও স্বচ্ছ জলরাশির মাঝে ’আন্দামান দ্বীপে’র মতো এক একটি গ্রামের ছবি প্রতিবিম্ব হয়ে ভেসে উঠে। দুরে বহু দুরে ’নিরাগ দুপুরে’ বা রাতে পানিতে ’কুপি বাতি’র নিবু নিবু আলোর নাচন অথবা ’জোনাকি পোকা’র মতো সৌর বিদ্যুতের আলোর ছিটা মনটাকে বিমোহিত করবে । ”মন পবনের নাও” এ চড়ে নিরবে সোুতের অনুকূলে ভেসে ঘুরে বেড়াতে মন চাইবে। ভাগ্য ভাল হলে ’হাতির সুর’ দিয়ে উর্ধ্বাকাশে পানি তুলে নেয়ার বিরল দৃশ্য দেখার সুযোগও পেতে পারেন। হাওরের গ্রামীণ জীবন যাত্রা বড়ই কষ্টের। প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল কষ্ট সহিঞ্চু হাওরবাসির জীবন যাত্রা থেকেও আপনি জানবেন অনেক কিছু।

ভরা বর্ষা হচ্ছে হাওরের যৌবন ও ’নিদানকাল’। চারিদিকে পানি, শুধু পানি, থৈ থৈ করছে। টলমল, উচ্ছ্বাস জলে জলকেলি, পানির মধ্যে দাপা-দাপি বড়ই আনন্দের। সমুদ্রের সাথে হাওরের প্রার্থক্য হচ্ছে- সমুদ্রের গভীরে আপনি সাতার কাটা, ড্বু দেয়া, মাছ ধরা বা ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ খুব কম পাবেন। কিন্তু হাওরে এ সুযোগ অবারিত। ডুব সাতার দিয়ে কাঁেচর মতো স্বচ্ছ জলে ’পাতি হাঁসে’র সাথে পাল্লা দেয়ার কথা কি ভুলা যায় ? একবার যারা হাওরের এ জলে অবগাহন করেছেন, বার বার তারাঁ ফিরে আসে যেন কিসের এক অজানা আকর্ষনে। এখন আর রঙ বে-রঙের পাল তুলা সারি সারি নৌকা হয়ত হাওরে আর দেখা যাবে না। কিন্তু সাদা কালো ধূঁয়া তুলে বুদবুদ শব্দ করে পানি ছিটিয়ে, হাওরের বুক চিড়ে ইঞ্জিন চালিত ’গয়না নৌকা’র বা বেপারি নৌকার চলাচল নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা।

বিয়ের বা বরযাত্রার নৌকা- কলা গাছ আর রঙিণ কাগজে সাজানো, সানাই বা বাদ্য যন্ত্র, মাইকের উচ্চ শব্দে, রাতে তা জেনারেটরের সাহায্যে আলোক সজ্জায় সজ্জ্বিত চলমান আলোর নাচন বলেই মনে হবে। কচুরি পানা বা রাজহাঁস’র দলের ভেসে বেড়ানো অথবা প্রচন্ড বড় ঢেউ এ ’আফালেলের তাফালিং’ এর সাথে যুদ্ধ করে ভিজে একাকার হয়ে ’হাতে প্রাণ’ নিয়ে ছোট ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে আগুয়ান হওয়া তাঁদের সংগ্রামী জীবনের কথাই মনে করে দিবে। জেলেদের ’টঙ্গ’ বানিয়ে ’বান্দইরা’ জালসহ বিভিন্ন প্রকার জাল, বড়শি বা ডুব দিয়ে অথবা অমাবশ্যার রাতে ’হ্যাজাক লাইট’র আলো’তে ’কুচ’ দিয়ে মাছ ধরা বড় আনন্দের। কোথাও কোথাও ’জলি ধান’ বা জলজ ঘাষে মাছের ’ঠোকরানো’র ফলে ’নরা’/নাড়াচারা দেখে মাছের অবস্থান বুঝে ’কুচ’ দিয়ে ’নিরাগ’ মারার সুযোগও পেতে পারেন। হাওরের খোলা আকাশ, নির্মল মুক্ত বাতাস আপনাকে প্রশান্তি এনে দেবে। পলো দিয়ে মাছ ধরার মজাই আলাদা।

লাফানো তাজা ফ্রেশ মাছ ভেজে খেতে পারেন। বিভিন্ন রকম নকশি আঁকা পিঠা পুলির জন্যও হাওর বিখ্যাত। বিখ্যাত নকশি কাথাঁ ও কুটির শিল্পের বিকাশও সম্ভব। প্রাচীন গ্রন্থে পূর্ব বঙ্গ কে ’ঊড়া পঙ্খির দ্যাশ’ বলে অভিহিত করা হতো। হাওর এলাকাকে ’ঊড়া পঙ্খির দ্যাশ’ নামেও ডাকা হয়। পুটি মাছে ঠোকর দেবার আশায় এক টেঙ্গে দাড়াঁনো ’ধ্যান মগ্ন ঋষি বক’, গাঙ্গ চিলের মাছ নিয়ে কাড়াকাড়ি, পান কৌড়ির ডুব, চিলের ছোঁ মারা, বিচিত্র রঙের, বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কিচির মিচির, ডানা জাপ্টার ’কান ফাটা’ শব্দ শুধূ হাওরেই শুনা সম্ভব। সুদুর সাইবেরিয়ার প্রচন্ড শীত হতে বাঁচতে, ’আধার করতে’, ডিমে তা দিতে বা একটু ’উম’ এর আশায় ঊড়া পঙ্খি বা অথিতি পাখিরা ছুটে আসে হাওরে। মেঘ মুক্ত নীলাকশে, সাঁঝ বেলায়, মুক্তার মালার মতো দল বেঁধে জঙ্গলী পাখির ঊড়াউড়ি কেবল ’ঊড়া পঙ্খির দ্যাশ’ নামে পরিচিত হাওর-এ-ই সম্ভব।

হাওরের বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত ’নৌকা বাইচ’ এর ’তলা’ তে বিভিন্ন সাইজের, আকৃতির, রঙের ’দৌড়ের নাও’ এ মাঝি মাল্লারা রঙ বেরঙের পোষাক পরিধান করে, ড্যামি বাঘ, ভাল্লুক, হাতি ঘোড়া, মুখে ’সারি গান’ ’লা-শারিক’ আল্লাহ বলে প্রতিযোগিতায় মেতে উঠতো। হাওরে পর্যটনকে কেন্দ্র করে এ ঐতিহ্যকে পুনরিজ্জ্বিত করার সুযোগ রয়েছে এখনো। আমাদের পার্বত্য এলাকা ও বিশ্বের অনেক স্থানে আমি দেখেছি, পেশাধার দল দিয়ে পর্যটকদের সামনে নিজস্ব লোকজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে উপস্থাপন করতে। ’মৈমনসিংহ গীতিকা’র চারণ ভূমি হচ্ছে হাওর এলাকা। হাওরের আলো বাতাস, জলীয় পরিবেশ ও বর্ষার অফুরন্ত অলস সময় হয়তো মানুষকে ভাবুক করে সৃষ্টি করেছে অনেক জগত বিখ্যাত মনীষিদেও জন্ম এ হাওরে।

ভাটি-বাংলার বীর হিসাবে খ্যাত বীর ইশা খাঁ’র মতো স্বাধীন চেতা মানুষ বা বর্তমান যুগের সাধক পুরুষ শাহ আব্দুল করিম, হাছন রাজার মতো মনীষিদের জন্ম এ হাওর ভাটি এলাকায়। ’হাওর কালচারাল একাডেমী’ প্রতিষ্ঠা করে এগুলোকে লালন, পালন ও টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা নেয়া উচিত। মাত্র কয়েক লক্ষ ক্ষুদ নৃ-গোষ্টির জন্য ’উপজাতি কালচারাল একাডেমী’ হলেও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ দুই কোটি হাওরবাসির জীবন, কৃষ্টি, কালচার ও ঐতিহ্য রক্ষায় কিছুই করা হয়নি। ড. দীনেশ সেন বা সদ্য প্রয়াত ড. হুমায়ুন আহমেদ হাওরের কালচারাল খনি হতে কিছু মনি আহরণের চেষ্ঠা করেছিলেন। এতেই বিশ্ববাসি বিস্মিত, চমৎকিত। কিন্তু এর বিশাল ভান্ডার একনো অনাহরিত রয়েছে। সংরক্ষণ না করলে, বর্তমান পরিস্থিতিতে না চর্চায় কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে। পর্যটন বিনেদনের অন্যতম উপাদান হতে পারে এঁরা। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এবং হাওর উন্নয়ন বোর্ডকে হাওরের দিকে নজর ও গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে আসা দরকার।

পানির মাঝে আকন্ড নিমজ্জিত হিজল তমাল, জলজ বৃক্ষের বাগ এবং জল পাখির উড়াউড়ি, আর মাছ নিয়ে কাড়াকাড়ি আপনাকে অবাক করে দিবে। বর্ষায় পানির মধ্যে পূর্ণিমা রাতে চাঁদের চিকমিক আলোর নাচন, পানি ও চাঁদের মিতালি, চাঁদের টানে পানি ফুলে ফেঁপে উঠা আপনার মনের উপর বিরাট প্রভাব ফেলবে, নিঃসন্দেহে। ভাবুক হয়ে গেয়ে উঠবেন,” মন মাঝি তুর বৈ টানে রে, আমি আর বাইতে পারলাম না”। বর্ষায় পানির ’চান কপাইল্লা’ ঢেউ, আর শীতে সবুজ ধান ক্ষেতে বাতাসের ঢেউ ঢেউ খেলা বড়ই মনোমুগ্ধকর। চাদঁনী রাতে ’পালা গান’ ’বাউল গান’, ভাটিয়ালি, জারি সারি, যাত্রা দলের আসর, ঘাটুর গান, কীর্তন, লাঠি খেলা বা ’কিচ্ছার আসর’ ’বাউলের বাহাস’ এক সময় ছিল বেকার আর অলস বর্ষায় হাওরে নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। ’পানসি নৌকা’ হযত এখন আর পাবেন না কিন্তু বড় বড় গয়না নাও, ট্রলার, লঞ্চ বা স্টিমার জাতীয় জলযানে ভরা বর্ষায় পূর্ণিমার রাতে পরিকল্পিত ’নৌ-ভ্রমণ’ রোমাঞ্চকর ঘটনা হবে। এত হরেক রকমের আয়োজন থাকবে।

দ্বি-মুখীরা বলে থাকেন, আমাদের বিপরিতমুখী রাজনীতিবিদদের ভরা বর্ষায় পূর্ণিমার রাতে হাওরে ভাসমান জলযান ’সোনার তরী’র খোলা ছাদে ভ্রমনের ব্যবস্থা করেন, দেখবেন, তাঁদের মাঝে ’ভাব’ হয়ে গেছে। আলোচিত সমালোচিত ’হিযবুল বাহার’ সমুদ্র ভ্রমন ছিল শুধু ঘুরে বেড়ানো। শূণ্য এ বুকে চারিদিকে শব্দ ধ্বসি প্রতি ধ্বনিত হতো। কিন্তু আমি স্বপ্ন দেখছি, হাওরে ’সোনার তরী’ ’স্বপ্ন ডিঙ্গা’ ভ্রমন হবে বৈচিত্রপূর্ণ, চিত্তাকর্ষক, মনোমুগ্ধ ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতায় ভরপুর। নোঙ্গর করবে এ ’স্বপ্ন ডিঙ্গা’ সমুদ্রের টিপ, সিংহল দ্বীপ সম হাওরের কৃত্রিম ও পুর্ব পরিকল্পিতভাবে সৃষ্ট ”জলপুরি’তে। পানিকে কেন্দ্র করে একে ’জলপুরী’ হিসাবে গড়ে বিনোদনের সকল উপকরণ ও অবকাঠামো দিয়ে সাজানো হবে। জলপুরির পাশে পাখি ও মাছের জন্য অভয়ারন্য তৈরী করে এগুলোর জীবন্ত চিড়িয়াখানায় রূপান্তর করা যেতে পারে। পর্যটকগণ মন ভরে উপভোগ করবেন এর সৌন্দর্য, লীলা খেলা ও বিচরণ-আচরণ। উপরে বর্ণিত পর্যটন বিনোদনের এত রসত, উপকরণ এক জায়গায় একত্রে এবং সহজে হাওর ছাড়া কি পাওয়া সম্ভব

সমুদ্রসম হাওরের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে গ্রাম বা উচুঁ ভিটা সৃজন করে এ পুকুরে/জলাশয়ে সারা বছর জল ও স্থল ভাগে বিভিন্ন স্তরে মাছ হাঁস, মুক্তা ফল-ফলাদি চাষের মাধ্যমে নতুন দিগন্তের/ যুগের সূচনা হতে পারে। হোটেল, মোটেলসহ পর্যটনকে সামনে রেখে একে বিভিন্নভাবে সাজানো হবে। নৌ-ভ্রমন শেষে “স্বপ্ন ডিঙ্গা”, “সোনার তরী” এ ’জলপুরী’ বিনোদন স্পটে নোঙর করবে। এটা হাওরবাসির জন্য “গরিবী” কে জাদুঘরে পাঠাতে এবং আলোচিত ও সমালোচিত “টিপাইমুখ আগ্রাসন” মোকাবেলার রক্ষা কবজও হবে বলে আশা করা যায়। সস্তা জমি, উর্বর মাটি আর মুক্ত পরিবেশের জন্য লোকজন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে হাওরে বসতি গড়ে ছিল। কিন্তু বর্তমানে হাওর হতে অভিবাসনের উল্টো স্রোতকে এর মাধ্যমে রুখে দেয়া সম্ভব হবে। ঢাকার বড় বড় হাউজিং এবং এন্টারটেইন্টম্যান্ট সোসাইটিগুলো ’হাওর সমন্বিত গ্রাম সৃজন প্রকল্প- ’জলপুরী’ নিয়ে এগিয়ে আসতে পারে। নিঃসন্দেহে এটা একটা লাভজনক বিনিযোগ হবে। হাওরে বর্তমানে বিদ্যমান ঐতিহাসিক স্থাপনা ও অবকাঠামোগুলোকে নতুন সাজে সজ্জিত করে আকর্ষণীয় করে তোলা যেতে পারে। পর্যটন শিল্পের অপার সুযোগও এতে সৃষ্টি হবে। আমি দিব্য চোখে দেখছি, নিঃসন্দেহে এটা একটা সফল ও লাভজনক দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারি প্রকল্প হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হাওর এলাকাকে ভাটি অঞ্চলও বলা হয় ভাটির দেশ- বাংলাদেশ

আপডেট টাইম : ০১:০১:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৬

ভাটির দেশ- বাংলাদেশ। হাওর এলাকাকে ভাটি এলাকা বা ভাটি অঞ্চলও বলা হয়। বাংলার ষড় ঋতুর ঋতু বৈশিষ্ট্য, লীলা খেলা এত সুন্দর ও স্পষ্টভাবে হাওর ছাড়া দেশের আর কোথাও দেখা যায় না। হাওর হচ্ছে ঋতু বৈচিত্রের চারণ ভ’মি, লীলা নিকেতন।। বাংলার আদি ও আসল রূপ অপরূপ হয়ে একমাত্র হাওরেই দেখা সম্ভব। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সম্পদে ভরপুর, লোক সংস্কৃতি, ঐতিহ্যর লালন, পালন, ধারক ও বাহক হচ্ছে হাওর এলাকা। হাওরের দু’টি রূপ। শুষ্ক মৌসুমে-শীতকালে এবং বর্ষায় একে অপরের সম্পূর্ণ বিপরিত রূপ ও বৈশিষ্ট্য ধারণ করে হাওর হয়েছে রুপের রাণী। হাওরের এ রূপ সাগরে অবগাহনের অপার সম্ভাবনা আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকে।

পৃথিবীর তাবৎ সুস্থ ও সুন্দর বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো গড়ে উঠেছে পানিকে কেন্দ্র করে, পানির ধারে বা পানির মাঝে। আর সে পানি যদি হয় ’মিঠা পানি’, তবে তো সোনায় সোহাগা। হাওর হচ্ছে মিঠা পানির আল্লাহ প্রদত্ত এরকম এক অপার উৎস ও নিয়ামত। সারা পৃথিবীর মাঝে মিঠা পানির এত বড় একক ’ওয়াটার বডি’ আর দ্বিতীয়টি আছে বলে আমার জানা নেই। বর্ষার সাত মাসে এর আয়তন দাঁড়ায় প্রায় পাঁচ হাজার বর্গমাইল। কোন কুল কিনারা পাবেন না। চারিদিকে পানি শুধু অথৈ, থৈ থৈ পানি। প্রায় দুই কোটি লোক এখানে বসবাস করে। হাওর হচ্ছে সাগরেরই অপর রূপ। সাগরের সকল রূপ বৈশিষ্ট্য এতে রয়েছে। ’হাওর’ শব্দটির উৎপত্তিও সাগর থেকে সায়র; আর সায়র অপভ্রংশ হয়ে ’হাওর’ হয়েছে বলে ভাষা বিজ্ঞানীদের অভিমত।

হাওর হচ্ছে একটা বিশাল চ্যাপ্টা বাটির মতো, বেসিন বিশেষ, যাতে বর্ষায় পানি জমে সাগরের রূপধারণ করে। আর শুষ্কে দিগন্ত জোড়া নয়নাভিরাম মাঠে সবুজের সমারোহ। সবুজ ধান ক্ষেতের বুক চিড়ে বহমান সর্পিল মেঠু পথ বা ডুবা সড়ক বা কৃষকের ব্যস্ত কর্মযজ্ঞ দেখার আকর্ষণ, আপনাকে ঘুরে বেড়াতে হাতছানি দিযে ডাকবে। সাগরের মতো বিশাল ও ব্ড় বড় হাওরের মাঝে রয়েছে কচুরী পানার মতো ভাসমান দ্বীপ-গ্রাম। ’কাকের চোখে’র ন্যায় কালো ও স্বচ্ছ জলরাশির মাঝে ’আন্দামান দ্বীপে’র মতো এক একটি গ্রামের ছবি প্রতিবিম্ব হয়ে ভেসে উঠে। দুরে বহু দুরে ’নিরাগ দুপুরে’ বা রাতে পানিতে ’কুপি বাতি’র নিবু নিবু আলোর নাচন অথবা ’জোনাকি পোকা’র মতো সৌর বিদ্যুতের আলোর ছিটা মনটাকে বিমোহিত করবে । ”মন পবনের নাও” এ চড়ে নিরবে সোুতের অনুকূলে ভেসে ঘুরে বেড়াতে মন চাইবে। ভাগ্য ভাল হলে ’হাতির সুর’ দিয়ে উর্ধ্বাকাশে পানি তুলে নেয়ার বিরল দৃশ্য দেখার সুযোগও পেতে পারেন। হাওরের গ্রামীণ জীবন যাত্রা বড়ই কষ্টের। প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল কষ্ট সহিঞ্চু হাওরবাসির জীবন যাত্রা থেকেও আপনি জানবেন অনেক কিছু।

ভরা বর্ষা হচ্ছে হাওরের যৌবন ও ’নিদানকাল’। চারিদিকে পানি, শুধু পানি, থৈ থৈ করছে। টলমল, উচ্ছ্বাস জলে জলকেলি, পানির মধ্যে দাপা-দাপি বড়ই আনন্দের। সমুদ্রের সাথে হাওরের প্রার্থক্য হচ্ছে- সমুদ্রের গভীরে আপনি সাতার কাটা, ড্বু দেয়া, মাছ ধরা বা ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ খুব কম পাবেন। কিন্তু হাওরে এ সুযোগ অবারিত। ডুব সাতার দিয়ে কাঁেচর মতো স্বচ্ছ জলে ’পাতি হাঁসে’র সাথে পাল্লা দেয়ার কথা কি ভুলা যায় ? একবার যারা হাওরের এ জলে অবগাহন করেছেন, বার বার তারাঁ ফিরে আসে যেন কিসের এক অজানা আকর্ষনে। এখন আর রঙ বে-রঙের পাল তুলা সারি সারি নৌকা হয়ত হাওরে আর দেখা যাবে না। কিন্তু সাদা কালো ধূঁয়া তুলে বুদবুদ শব্দ করে পানি ছিটিয়ে, হাওরের বুক চিড়ে ইঞ্জিন চালিত ’গয়না নৌকা’র বা বেপারি নৌকার চলাচল নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা।

বিয়ের বা বরযাত্রার নৌকা- কলা গাছ আর রঙিণ কাগজে সাজানো, সানাই বা বাদ্য যন্ত্র, মাইকের উচ্চ শব্দে, রাতে তা জেনারেটরের সাহায্যে আলোক সজ্জায় সজ্জ্বিত চলমান আলোর নাচন বলেই মনে হবে। কচুরি পানা বা রাজহাঁস’র দলের ভেসে বেড়ানো অথবা প্রচন্ড বড় ঢেউ এ ’আফালেলের তাফালিং’ এর সাথে যুদ্ধ করে ভিজে একাকার হয়ে ’হাতে প্রাণ’ নিয়ে ছোট ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে আগুয়ান হওয়া তাঁদের সংগ্রামী জীবনের কথাই মনে করে দিবে। জেলেদের ’টঙ্গ’ বানিয়ে ’বান্দইরা’ জালসহ বিভিন্ন প্রকার জাল, বড়শি বা ডুব দিয়ে অথবা অমাবশ্যার রাতে ’হ্যাজাক লাইট’র আলো’তে ’কুচ’ দিয়ে মাছ ধরা বড় আনন্দের। কোথাও কোথাও ’জলি ধান’ বা জলজ ঘাষে মাছের ’ঠোকরানো’র ফলে ’নরা’/নাড়াচারা দেখে মাছের অবস্থান বুঝে ’কুচ’ দিয়ে ’নিরাগ’ মারার সুযোগও পেতে পারেন। হাওরের খোলা আকাশ, নির্মল মুক্ত বাতাস আপনাকে প্রশান্তি এনে দেবে। পলো দিয়ে মাছ ধরার মজাই আলাদা।

লাফানো তাজা ফ্রেশ মাছ ভেজে খেতে পারেন। বিভিন্ন রকম নকশি আঁকা পিঠা পুলির জন্যও হাওর বিখ্যাত। বিখ্যাত নকশি কাথাঁ ও কুটির শিল্পের বিকাশও সম্ভব। প্রাচীন গ্রন্থে পূর্ব বঙ্গ কে ’ঊড়া পঙ্খির দ্যাশ’ বলে অভিহিত করা হতো। হাওর এলাকাকে ’ঊড়া পঙ্খির দ্যাশ’ নামেও ডাকা হয়। পুটি মাছে ঠোকর দেবার আশায় এক টেঙ্গে দাড়াঁনো ’ধ্যান মগ্ন ঋষি বক’, গাঙ্গ চিলের মাছ নিয়ে কাড়াকাড়ি, পান কৌড়ির ডুব, চিলের ছোঁ মারা, বিচিত্র রঙের, বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কিচির মিচির, ডানা জাপ্টার ’কান ফাটা’ শব্দ শুধূ হাওরেই শুনা সম্ভব। সুদুর সাইবেরিয়ার প্রচন্ড শীত হতে বাঁচতে, ’আধার করতে’, ডিমে তা দিতে বা একটু ’উম’ এর আশায় ঊড়া পঙ্খি বা অথিতি পাখিরা ছুটে আসে হাওরে। মেঘ মুক্ত নীলাকশে, সাঁঝ বেলায়, মুক্তার মালার মতো দল বেঁধে জঙ্গলী পাখির ঊড়াউড়ি কেবল ’ঊড়া পঙ্খির দ্যাশ’ নামে পরিচিত হাওর-এ-ই সম্ভব।

হাওরের বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত ’নৌকা বাইচ’ এর ’তলা’ তে বিভিন্ন সাইজের, আকৃতির, রঙের ’দৌড়ের নাও’ এ মাঝি মাল্লারা রঙ বেরঙের পোষাক পরিধান করে, ড্যামি বাঘ, ভাল্লুক, হাতি ঘোড়া, মুখে ’সারি গান’ ’লা-শারিক’ আল্লাহ বলে প্রতিযোগিতায় মেতে উঠতো। হাওরে পর্যটনকে কেন্দ্র করে এ ঐতিহ্যকে পুনরিজ্জ্বিত করার সুযোগ রয়েছে এখনো। আমাদের পার্বত্য এলাকা ও বিশ্বের অনেক স্থানে আমি দেখেছি, পেশাধার দল দিয়ে পর্যটকদের সামনে নিজস্ব লোকজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে উপস্থাপন করতে। ’মৈমনসিংহ গীতিকা’র চারণ ভূমি হচ্ছে হাওর এলাকা। হাওরের আলো বাতাস, জলীয় পরিবেশ ও বর্ষার অফুরন্ত অলস সময় হয়তো মানুষকে ভাবুক করে সৃষ্টি করেছে অনেক জগত বিখ্যাত মনীষিদেও জন্ম এ হাওরে।

ভাটি-বাংলার বীর হিসাবে খ্যাত বীর ইশা খাঁ’র মতো স্বাধীন চেতা মানুষ বা বর্তমান যুগের সাধক পুরুষ শাহ আব্দুল করিম, হাছন রাজার মতো মনীষিদের জন্ম এ হাওর ভাটি এলাকায়। ’হাওর কালচারাল একাডেমী’ প্রতিষ্ঠা করে এগুলোকে লালন, পালন ও টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা নেয়া উচিত। মাত্র কয়েক লক্ষ ক্ষুদ নৃ-গোষ্টির জন্য ’উপজাতি কালচারাল একাডেমী’ হলেও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ দুই কোটি হাওরবাসির জীবন, কৃষ্টি, কালচার ও ঐতিহ্য রক্ষায় কিছুই করা হয়নি। ড. দীনেশ সেন বা সদ্য প্রয়াত ড. হুমায়ুন আহমেদ হাওরের কালচারাল খনি হতে কিছু মনি আহরণের চেষ্ঠা করেছিলেন। এতেই বিশ্ববাসি বিস্মিত, চমৎকিত। কিন্তু এর বিশাল ভান্ডার একনো অনাহরিত রয়েছে। সংরক্ষণ না করলে, বর্তমান পরিস্থিতিতে না চর্চায় কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে। পর্যটন বিনেদনের অন্যতম উপাদান হতে পারে এঁরা। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এবং হাওর উন্নয়ন বোর্ডকে হাওরের দিকে নজর ও গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে আসা দরকার।

পানির মাঝে আকন্ড নিমজ্জিত হিজল তমাল, জলজ বৃক্ষের বাগ এবং জল পাখির উড়াউড়ি, আর মাছ নিয়ে কাড়াকাড়ি আপনাকে অবাক করে দিবে। বর্ষায় পানির মধ্যে পূর্ণিমা রাতে চাঁদের চিকমিক আলোর নাচন, পানি ও চাঁদের মিতালি, চাঁদের টানে পানি ফুলে ফেঁপে উঠা আপনার মনের উপর বিরাট প্রভাব ফেলবে, নিঃসন্দেহে। ভাবুক হয়ে গেয়ে উঠবেন,” মন মাঝি তুর বৈ টানে রে, আমি আর বাইতে পারলাম না”। বর্ষায় পানির ’চান কপাইল্লা’ ঢেউ, আর শীতে সবুজ ধান ক্ষেতে বাতাসের ঢেউ ঢেউ খেলা বড়ই মনোমুগ্ধকর। চাদঁনী রাতে ’পালা গান’ ’বাউল গান’, ভাটিয়ালি, জারি সারি, যাত্রা দলের আসর, ঘাটুর গান, কীর্তন, লাঠি খেলা বা ’কিচ্ছার আসর’ ’বাউলের বাহাস’ এক সময় ছিল বেকার আর অলস বর্ষায় হাওরে নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। ’পানসি নৌকা’ হযত এখন আর পাবেন না কিন্তু বড় বড় গয়না নাও, ট্রলার, লঞ্চ বা স্টিমার জাতীয় জলযানে ভরা বর্ষায় পূর্ণিমার রাতে পরিকল্পিত ’নৌ-ভ্রমণ’ রোমাঞ্চকর ঘটনা হবে। এত হরেক রকমের আয়োজন থাকবে।

দ্বি-মুখীরা বলে থাকেন, আমাদের বিপরিতমুখী রাজনীতিবিদদের ভরা বর্ষায় পূর্ণিমার রাতে হাওরে ভাসমান জলযান ’সোনার তরী’র খোলা ছাদে ভ্রমনের ব্যবস্থা করেন, দেখবেন, তাঁদের মাঝে ’ভাব’ হয়ে গেছে। আলোচিত সমালোচিত ’হিযবুল বাহার’ সমুদ্র ভ্রমন ছিল শুধু ঘুরে বেড়ানো। শূণ্য এ বুকে চারিদিকে শব্দ ধ্বসি প্রতি ধ্বনিত হতো। কিন্তু আমি স্বপ্ন দেখছি, হাওরে ’সোনার তরী’ ’স্বপ্ন ডিঙ্গা’ ভ্রমন হবে বৈচিত্রপূর্ণ, চিত্তাকর্ষক, মনোমুগ্ধ ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতায় ভরপুর। নোঙ্গর করবে এ ’স্বপ্ন ডিঙ্গা’ সমুদ্রের টিপ, সিংহল দ্বীপ সম হাওরের কৃত্রিম ও পুর্ব পরিকল্পিতভাবে সৃষ্ট ”জলপুরি’তে। পানিকে কেন্দ্র করে একে ’জলপুরী’ হিসাবে গড়ে বিনোদনের সকল উপকরণ ও অবকাঠামো দিয়ে সাজানো হবে। জলপুরির পাশে পাখি ও মাছের জন্য অভয়ারন্য তৈরী করে এগুলোর জীবন্ত চিড়িয়াখানায় রূপান্তর করা যেতে পারে। পর্যটকগণ মন ভরে উপভোগ করবেন এর সৌন্দর্য, লীলা খেলা ও বিচরণ-আচরণ। উপরে বর্ণিত পর্যটন বিনোদনের এত রসত, উপকরণ এক জায়গায় একত্রে এবং সহজে হাওর ছাড়া কি পাওয়া সম্ভব

সমুদ্রসম হাওরের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে গ্রাম বা উচুঁ ভিটা সৃজন করে এ পুকুরে/জলাশয়ে সারা বছর জল ও স্থল ভাগে বিভিন্ন স্তরে মাছ হাঁস, মুক্তা ফল-ফলাদি চাষের মাধ্যমে নতুন দিগন্তের/ যুগের সূচনা হতে পারে। হোটেল, মোটেলসহ পর্যটনকে সামনে রেখে একে বিভিন্নভাবে সাজানো হবে। নৌ-ভ্রমন শেষে “স্বপ্ন ডিঙ্গা”, “সোনার তরী” এ ’জলপুরী’ বিনোদন স্পটে নোঙর করবে। এটা হাওরবাসির জন্য “গরিবী” কে জাদুঘরে পাঠাতে এবং আলোচিত ও সমালোচিত “টিপাইমুখ আগ্রাসন” মোকাবেলার রক্ষা কবজও হবে বলে আশা করা যায়। সস্তা জমি, উর্বর মাটি আর মুক্ত পরিবেশের জন্য লোকজন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে হাওরে বসতি গড়ে ছিল। কিন্তু বর্তমানে হাওর হতে অভিবাসনের উল্টো স্রোতকে এর মাধ্যমে রুখে দেয়া সম্ভব হবে। ঢাকার বড় বড় হাউজিং এবং এন্টারটেইন্টম্যান্ট সোসাইটিগুলো ’হাওর সমন্বিত গ্রাম সৃজন প্রকল্প- ’জলপুরী’ নিয়ে এগিয়ে আসতে পারে। নিঃসন্দেহে এটা একটা লাভজনক বিনিযোগ হবে। হাওরে বর্তমানে বিদ্যমান ঐতিহাসিক স্থাপনা ও অবকাঠামোগুলোকে নতুন সাজে সজ্জিত করে আকর্ষণীয় করে তোলা যেতে পারে। পর্যটন শিল্পের অপার সুযোগও এতে সৃষ্টি হবে। আমি দিব্য চোখে দেখছি, নিঃসন্দেহে এটা একটা সফল ও লাভজনক দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারি প্রকল্প হবে।