সাফজয়ী তারকা মাতসুসিমা সুমাইয়া ‘হত্যা ও ধর্ষণের’ হুমকি পাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। এবার এই অভিযোগ নিয়ে আইনি পথে হাঁটলেন তিনি। মতিঝিল থানায় বুধবার অভিযোগ নিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এই তারকা ফরোয়ার্ড।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) মিডিয়া এক্সিকিউটিভ খালিদ হাসান নওমি জিডি করার বিষয়টি একটি নিউজ পোর্টালকে নিশ্চিত করেছেন ।
তিনি বলেন, ‘মতিঝিল থানায় সকালে গিয়ে আমি ওসির সঙ্গে কথা বলেছিলাম জিডির ব্যাপারে। তিনি সব কথা শুনে সুমাইয়াকে নিয়ে থানায় যেতে বলেছিলেন। পরে তাকে নিয়ে থানায় যাওয়ার পর জিডি করা হয়েছে। বাফুফের পক্ষ থেকে আমরা গিয়েছিলাম আইনি প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার জন্য। আমরা মেয়েদের সবরকম সহযোগিতা করব।’
এর আগে গত মঙ্গলবার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি পোস্টে সুমাইয়া দাবি করেন, স্কুলজীবন থেকে ফুটবল শুরু, এরপর ক্রমান্বয়ে জাতীয় দলের অংশ হওয়া এবং সাফ জয়ের গল্প তুলে ধরেন। ফুটবলে ক্যারিয়ার গড়তে নিজের বাবা-মায়ের সঙ্গেও নাকি লড়তে হয়েছে এই নারী মিডফিল্ডারকে। তবে গত কয়েকদিনে পাওয়া হুমকির পর তিনি নিজের ফেলে আসা সেই সময়ের জন্য অনুশোচনা করছেন, বলছেন অকল্পনীয় এই পরিস্থিতির ট্রমায় আটকে গেছেন সুমাইয়া।
বাংলাদেশি এই ফুটবলার লিখেছেন ফেসবুক পোস্টে, ‘আমি মাতসুসিমা সুমাইয়া, বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড়। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে থাকাকালে ফুটবল খেলা শুরু এবং মালদ্বীপে ২০২৪ সাফ ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপে সাফল্য পাওয়ার এই যাত্রাটা বেশ অম্লমধুর। যখন আমি পথটি বেছে নিই, আমার স্বপ্ন ছিল তরুণ শিক্ষার্থীদেরও এই পথের স্বপ্ন দেখানো, যাদের বাবা-মা পড়ালেখাকেই কেবল গুরুত্ব দেন।’
‘আমি দেখাতে চেয়েছি আবেগ এবং নিবেদন থাকলে যেকোনো বাধা ভেঙে এগিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু এই মুহূর্তে আমার অনুশোচনা হচ্ছে। আক্ষেপ হচ্ছে এই কারণে যে আমি এমন এক দেশকে সেবা দিতে শিক্ষা, পরিবার, ঈদ সবকিছু বিসর্জন দিয়েছি; যেখানে এসব সংগ্রামের কোনো মূল্য-ই নেই।’
এরপরই অনাকাঙ্ক্ষিত হুমকির কথা জানিয়ে সুমাইয়া লিখেছেন, ‘ফুটবলে ক্যারিয়ার গড়তে আমাকে বাবা-মায়ের সঙ্গেও লড়তে হয়েছে, বিশ্বাস ছিল আমার দেশকে অন্তত পাশে পাব। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। কেউই সত্যিকার অর্থে একজন অ্যাথলেটের মানসিক স্বাস্থ্যকে পরোয়া করে না। আমি এবং আমার সতীর্থদের কী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে সে সম্পর্কে (ইংরেজি চিঠিতে) জানানো আমার ন্যূনতম সামর্থ্য আছে। কিন্তু গত কয়েকদিনে, আমি অসংখ্য হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি পেয়েছি– সেখানে এমনও শব্দ আছে, যা অকল্পনীয়ভাবে আমাকে বিধ্বস্ত করে দিচ্ছে।’