ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারে কাজ করেছেন সিনেমাতেও। হয়েছেন প্রশংসিত। যদিও এখন তার অভিনয়ের ব্যস্ততা আগের মতো নেই। কাজ করেন খুব বেছে বেছে। যার খবর অভিনেত্রী নিজেই দিয়ে থাকেন তার ভক্ত- শুভাকাঙ্ক্ষীদের। আর এর জন্য তিনি বেছে নিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
ফারিয়ার সবশেষ কাজের খবর পাওয়া যায় তার ফেসবুকে। শুধু কাজই নয়, ব্যক্তিজীবনের নানা কথাও তিনি শেয়ার করেন এই মাধ্যমে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি লিখলেন তার জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার কথা।
গতকাল বুধবার এক ফেসবুক পোস্টে শবনম ফারিয়া লিখেছেন, ‘একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে কতই না উচ্ছ্বাসিত ছিলাম। আজ তার হলুদ অনুষ্ঠান। বিশেষ দিনটির জন্য একটি লেহেঙ্গাও বানানো হয়েছিল। দিন গুনছিলাম সেই আনন্দঘন মুহূর্তের জন্য। কিন্তু হঠাৎ রাতের মাঝেই শরীর কাঁপতে শুরু করল। ভোরে উঠে দেখি, ফ্লুতে কাবু হয়ে বিছানা থেকে উঠতেই পারছি না। এখন তো জানি-ই না বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে পারব কি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরকম ঘটনা আগেও ঘটেছে। অনেক আগের কথা, একবার একটি কনসার্টের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এক মাস আগেই পোশাক ঠিক করে ফেলেছিলাম। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই টিকিট নিশ্চিত করার জন্য আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগও করেছিলাম। উত্তেজনা দিন দিন বাড়ছিল। কিন্তু যখন সেই দিন এলো, স্টেডিয়ামের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো। ভেতরে আর প্রবেশ করতে পারিনি।
একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্পের কাজ হাতছাড়া হওয়ার কথাও তুলে ধরেছেন ফারিয়া। তার কথায়, ‘কয়েক বছর আগে একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। এটি ছিল আমার প্রথম বিশ্ব মঞ্চে কাজ করার সুযোগ। সবকিছু প্রস্তুত ছিল। কাগজপত্র জমা দেওয়ার চার দিন আগে দূতাবাস বন্ধ হয়ে গেল কোভিডের কারণে। ফ্লাইটও বন্ধ হলো। সেই সঙ্গে প্রকল্পটিও বাতিল হয়ে গেল।’
প্রথম সিনেমা ও বাবা হারানোর কথা স্মরণ করে এই অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘আমার প্রথম সিনেমা “দেবী” মুক্তির আগেও এমনই ঘটেছিল। পরিবারে অনেক সংগ্রামের পর অবশেষে একটি পেশা বেছে নিয়েছিলাম। বাবা-মাকে গর্বিত করার অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু সিনেমা মুক্তির ছয়-সাত মাস আগেই বাবা মারা গেলেন। তিনি কখনোই আমার কাজটি দেখতে পারলেন না।’
দীর্ঘ পোস্টে বাদ যায়নি তার প্রেমের বিষয়টিও। ফারিয়ার বলেন, ‘কয়েক বছর আগে গভীর প্রেমে পড়েছিলাম। মনে হয়েছিল জীবনের সব কঠিন মুহূর্ত আমাকে তার কাছে নিয়ে আসার জন্যই ছিল। এক বছর সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। হঠাৎ একদিন সে হারিয়ে গেল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পেল না। এক মাস পর জানতে পারলাম সে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়ে আশ্রয়ের আবেদন করেছে। আর কখনো ফিরে আসবে না।’
সবশেষ এই অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘জীবনে যখনই কিছু নিয়ে সত্যিকার অর্থে উত্তেজিত হই, তখনই সেটা ফসকে যায়। মনে হয়, জীবনের জন্য যেন ভিন্ন কোনো চিত্রনাট্য লেখা আছে। তবে নিজেকে সান্ত্বনা দিই এই ভেবে- আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ পরিকল্পনাকারী। হয়ত তিনি আমাকে এমন কিছু থেকে রক্ষা করেন যা আমি দেখতে পাই না। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়- কিভাবে উত্তেজিত হওয়া বন্ধ করব? কারণ উত্তেজনার পরের পতনটি যেন দ্বিগুণ কষ্টদায়ক।’