ঢাকা ১২:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লন্ডনে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার নতুন জটিলতার কারণ খুঁজছে মেডিকেল বোর্ড

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৮:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১৫ বার
দ্য লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের নতুন জটিলতা দেখা দিয়েছে। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড সেটির কারণ খুঁজছে। এজন্য নতুন কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। চিকিৎসায় দ্রুত পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এ তথ্য জানিয়ে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য লন্ডন থেকে সময়ের আলোকে বলেন, জটিলতাটা হার্টে৷ কেন দেখা দিয়েছে তা এখনই সুনিশ্চিত বলা যাবে না৷ বোর্ড চেষ্টা করছে রিকোভার করার৷ নতুন কিছু পরীক্ষা দিয়েছে৷ এগুলো রিপোর্ট অনুয়ায়ী চিকিৎসা চলছে। আর ম্যাডাম লন্ডনে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছে না। বুধবার রাতে হঠাৎ শারিরীক অবস্থার কিছুটা অবনতি হয় তার। বলা যায় শারীরিক অবস্থা উঠানামা করছে৷
তিনি বলেন, লন্ডনে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা চলছে। নানা কারণে স্বাস্থ্যের প্যারামিটার ফল করতে পারে। এগুলো স্বাভাবিক। আর উনার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। দীর্ঘদিন উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। যদিও বড় উদ্বেগের কিছু নেই। মেডিকেল বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। তবে আশানুরূপ উন্নতি হয়নি বলে এখনও লিভার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়নি।
এই চিকিৎসক বলেন, লন্ডন ক্লিনিকে বললেই সবকিছু তাৎক্ষণিক হয়ে যায় না। সব প্রক্রিয়া মেনে করতে হয়। ম্যাডাম ছেলের বাসায়ও যেতে চাচ্ছেন। দীর্ঘদিন একটানা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে খাকাও কষ্টের।
এদিনে বৃহস্পতিবার লন্ডন ক্লিনিকের সামনে খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান তার ছেলে তারেক রহমান।
লন্ডনে দুইদিন আগে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) স্বাস্থ্যগত সব পরীক্ষার প্রতিবেদন আসার পরই ‘লিভার প্রতিস্থাপনের’ সিদ্ধান্ত নেবে মেডিকেল বোর্ড। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সনের শারীরিক ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ডা. জাহিদ বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে তার বয়স এখন ৭৯ বছর। এ কারণে আদৌ ‘লিভার প্রতিস্থাপন’ করার মতো শারীরিক অবস্থায় তিনি আছেন কি-না, বা কীভাবে করলে ম্যাডাম আরও ভালো থাকতে পারবেন— এসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে। তবে সেগুলো বিচার-বিশ্লেষণের সময় এখনো আসেনি। তার লিভার ডিজিজ এবং হার্টের যে সমস্যা রয়েছে সেগুলোর রিপোর্ট এখনো কমপ্লিট হয়নি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। উন্নত চিকিৎসকার জন্য গত ৮ জানুয়ারি তাকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে।
দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে যেতে হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ২০২০ সালে তিনি সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পেলেও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি হয়নি।
এরপর চার বছরে তাকে কয়েক দফা ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকরা ঢাকায় এসে খালেদা জিয়ার যকৃতে ‘ট্র্যান্সজাগুলার ইন্ট্রাহেপেটিক পোরটোসিসটেমিক শান্ট (টিপস)’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুই রক্তনালীর মধ্যে একটি নতুন সংযোগ তৈরি করে দিয়ে যান। তখন থেকেই বলা হচ্ছিল, বিদেশে নিয়ে খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা দরকার। গত অগাস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করে খালেদা জিয়াকে পুরোপুরি মুক্তি দিলে সেই সুযোগ তৈরি হয়।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

লন্ডনে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার নতুন জটিলতার কারণ খুঁজছে মেডিকেল বোর্ড

আপডেট টাইম : ১২:১৮:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
দ্য লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের নতুন জটিলতা দেখা দিয়েছে। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড সেটির কারণ খুঁজছে। এজন্য নতুন কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। চিকিৎসায় দ্রুত পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এ তথ্য জানিয়ে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য লন্ডন থেকে সময়ের আলোকে বলেন, জটিলতাটা হার্টে৷ কেন দেখা দিয়েছে তা এখনই সুনিশ্চিত বলা যাবে না৷ বোর্ড চেষ্টা করছে রিকোভার করার৷ নতুন কিছু পরীক্ষা দিয়েছে৷ এগুলো রিপোর্ট অনুয়ায়ী চিকিৎসা চলছে। আর ম্যাডাম লন্ডনে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছে না। বুধবার রাতে হঠাৎ শারিরীক অবস্থার কিছুটা অবনতি হয় তার। বলা যায় শারীরিক অবস্থা উঠানামা করছে৷
তিনি বলেন, লন্ডনে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা চলছে। নানা কারণে স্বাস্থ্যের প্যারামিটার ফল করতে পারে। এগুলো স্বাভাবিক। আর উনার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। দীর্ঘদিন উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। যদিও বড় উদ্বেগের কিছু নেই। মেডিকেল বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। তবে আশানুরূপ উন্নতি হয়নি বলে এখনও লিভার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়নি।
এই চিকিৎসক বলেন, লন্ডন ক্লিনিকে বললেই সবকিছু তাৎক্ষণিক হয়ে যায় না। সব প্রক্রিয়া মেনে করতে হয়। ম্যাডাম ছেলের বাসায়ও যেতে চাচ্ছেন। দীর্ঘদিন একটানা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে খাকাও কষ্টের।
এদিনে বৃহস্পতিবার লন্ডন ক্লিনিকের সামনে খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান তার ছেলে তারেক রহমান।
লন্ডনে দুইদিন আগে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) স্বাস্থ্যগত সব পরীক্ষার প্রতিবেদন আসার পরই ‘লিভার প্রতিস্থাপনের’ সিদ্ধান্ত নেবে মেডিকেল বোর্ড। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সনের শারীরিক ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ডা. জাহিদ বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে তার বয়স এখন ৭৯ বছর। এ কারণে আদৌ ‘লিভার প্রতিস্থাপন’ করার মতো শারীরিক অবস্থায় তিনি আছেন কি-না, বা কীভাবে করলে ম্যাডাম আরও ভালো থাকতে পারবেন— এসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে। তবে সেগুলো বিচার-বিশ্লেষণের সময় এখনো আসেনি। তার লিভার ডিজিজ এবং হার্টের যে সমস্যা রয়েছে সেগুলোর রিপোর্ট এখনো কমপ্লিট হয়নি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। উন্নত চিকিৎসকার জন্য গত ৮ জানুয়ারি তাকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে।
দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে যেতে হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ২০২০ সালে তিনি সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পেলেও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি হয়নি।
এরপর চার বছরে তাকে কয়েক দফা ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকরা ঢাকায় এসে খালেদা জিয়ার যকৃতে ‘ট্র্যান্সজাগুলার ইন্ট্রাহেপেটিক পোরটোসিসটেমিক শান্ট (টিপস)’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুই রক্তনালীর মধ্যে একটি নতুন সংযোগ তৈরি করে দিয়ে যান। তখন থেকেই বলা হচ্ছিল, বিদেশে নিয়ে খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা দরকার। গত অগাস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করে খালেদা জিয়াকে পুরোপুরি মুক্তি দিলে সেই সুযোগ তৈরি হয়।