চট্টগ্রাম থেকে আ.লীগ কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন যারা

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২২-২৩ অক্টোবর। এই নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে তৈরি হয়েছে উদ্দীপনা। বিশাল বাজেট, বর্ণাঢ্য আয়োজন, ব্যাপক প্রস্তুতিতে দলটির নেতাকর্মীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে। কাউন্সিলে কার কপাল পুড়ছে আবার কার কপাল খুলছে, এই নিয়ে সারাদেশে চলছে জল্পনা-কল্পনা।কাউন্সিলকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে নানা প্রস্তুতি চলছে চট্টগ্রামেও। কাঙ্খিত পদ পেতে চট্টগ্রামের নেতারা ইতিমধ্যে দৌড়ঝাপ শুরু করেছে। বলতে গেলে বেশিরভাগ নেতারাই এখন ঢাকাতে অবস্থান করছে। যে যার যার মত করে দলের নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।

২০ তম কা্উন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের যে নতুন নির্বাহী কমিটি গঠন করা হবে, তাতে নতুনদের বেশি প্রাধান্য দেওয়ার ঘোষণা আসায় সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতারা কেন্দ্রেবেশি ভিড় জমাচ্ছেন। এরই মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা দৌড়ঝাঁপ শুরু করলেও চট্টগ্রাম থেকে এক ডজন নতুন মুখ এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন বলে দলের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একটি সূত্রে জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম থেকে বর্তমান কমিটিতে যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে পদোন্নতি দেয়া হবে। সবমিলে এবাররের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে চট্টগ্রামে নতুন-পুরাতন মিলে দুই ডজন নেতা সম্পাদক, সহ সম্পাদক, সদস্য ও উপ-কমিটিতে স্থান পেতে যাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের আগামী কমিটিতে চট্টগ্রাম থেকে স্থান পেতে পারেন বেশ কয়েকটি নতুন মুখ। এরমধ্যে ১৬ জন সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা নতুন কমিটিতে নিজেদের নাম লেখাতে নানামুখী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের কয়েকজন বর্ষিয়ান নেতার সন্তানেরা নতুন কমিটিতে স্থান করে নিচ্ছেন বলে সূত্র জানায়। এদের মধ্যে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষনেতা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য-গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বড় ছেলে মাহবুবুর রহমান রুহেল এবং নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নাম শোনা যাচ্ছে।

এছাড়াও চট্টগ্রাম থেকে আরো যারা নতুন মুখ কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেতে যাচ্ছেন তারা হলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাদা মহিউদ্দিন, সবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সীমান্ত তালুকদার, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম নুরু, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি-বর্তমান আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সহ সম্পাদক সালাউদ্দিন মাহমুদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ-বর্তমান আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সহ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন।

আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে নিজের জায়গাটি ধরে রাখছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। উপদেষ্টা কমিটিতে আবারো থাকার সম্ভাবনা রয়েছে- বর্তমান উপদেষ্টা কমিটির সদস্য প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. অনুপম সেনের। নতুন করে যুক্ত হতে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান।

কেন্দ্রীয় কমিটিতে চট্টগ্রাম থেকে যাদের পদোন্নতি হতে পারে তারা হলেন, বর্তামান কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক-সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন।

চট্টগ্রামের এমপিদের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেতে পারেন, রাউজানের এমপি ফজলে করিম, সীতাকুণ্ডের এমপি দিদারুল ইসলাম ও পটিয়ার এমপি সামশুল হক চৌধুরী। তবে এদের মধ্যে অনেকেই সম্পাদকীয় পদ, অনেকেই কার্যকরী সদস্য, অনেকেই আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সহ সম্পাদক পদে আসতে পারেন এমনটাও ধারনা করা হচ্ছে।

এদিকে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলকে সামনে রেখ বেশ জোড়েসোরে প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার শীর্ষ নেতারা কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে যোগ দিতে পৃথক-পৃথকভাবে প্রস্তুতি শুরু করেছেন তারা। বর্ধিত সভা ডেকে দলের সাংগঠনিক রিপোর্টসহ কাউন্সিলে যোগদানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক জেলা কমিটি।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগে সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী জানান, চট্টগ্রাম মহানগর ইতিমধ্যে কাউন্সিলে যোগদানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। চট্টগ্রাম মহানগর থেকে ১১১ জন প্রতিনিধি কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে যোগদান করবে।

কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে যোগদানের ব্যাপারে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী জানান, আমাদের উত্তর জেলায় ১১০ জন কাউন্সিলর অংশ নিবে। গত ৪ অক্টোবর বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বর্ধিত সভার পর আমরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ঢাকায় গিয়ে আমাদের সাংগঠনিক রিপোর্ট জমা দিবো। এরপর কাউন্সিলে দলের নেতাদের নিয়ে যোগ দিব।

এদিকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন জানান, আমি এত দিন দেশের বাইরে ছিলাম। ২/১ দিনের মধ্যে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা ডাকা হবে। এরপর ডেলিগেট নির্ধারণ করে কাউন্সিলে যোগদান করবো। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ডেলিগেট নির্ধারণ করবো।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর