ঢাকা ০১:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৩:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২১ বার

৭৫ এর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিলে ২৪-এ এসে আওয়ামী লীগের এই করুণ পরিণতি হতো না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।

তিনি বলেছেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না। কোনো হত্যাকাণ্ডই শেখ হাসিনার সম্মতি ছাড়া হয়নি। আওয়ামী লীগ আমলে ভিন্নমত পোষণকারীদের নির্মমভাবে দমন করা হতো। তারা গুম, হত্যা, টর্চার সেল ও আয়নাঘরের মতো নির্যাতন কেন্দ্র করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।

শুক্রবার (৪ জানুয়ারি) এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক ছায়া সংসদে এসব কথা বলেন তিনি।

আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি ধাপে ধাপে দূষিত হয়েছে। ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ বিচার ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করে দলীয় বিবেচনায় বিচারকদের নিয়োগ দিয়েছে। হাইকোর্ট ডিভিশন ও সুপ্রিমকোর্ট থেকে যে সব রাজনৈতিক মামলার রায় হয়েছে সে সব রায়ের প্রতি মানুষের আস্থা ছিল না। ফলে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা কমে যায়। শেখ মুজিবের সঙ্গে ইয়াহিয়া খানের টেলিফোনে যোগাযোগ ছিল। তাকে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য তাজউদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম বার বার বললেও তিনি বাসা ছেড়ে কোথাও যেতে সম্মত হননি।

তিনি বলেন, শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধে যাননি। আওয়ামী লীগ শেখ মুজিবকে ইতিহাসের নায়ক করতে গিয়ে অনেক জাতীয় নেতার অবদান ইতিহাস থেকে মুছে ফেলেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার কারণে ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ হয়েছে। সে সময় প্রতিদিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অনেক ক্ষুধার্ত মানুষকে মারা যেতে দেখা গেছে।

ছায়া সংসদে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেলেও রেখে গেছে হত্যাযজ্ঞের নির্মম চিহ্ন। রক্তে আঁকা এই ইতিহাস দেশের সবচেয়ে বড় কালো দাগ। এই গণহত্যার দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না। জুলাই বিপ্লবে শহীদরা জাতীয় বীর হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার পরিবার পরিজনসহ বেশিরভাগ নেতাকর্মী গণহত্যা চালিয়ে পালিয়ে যাবার পর ছন্নছাড়া হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ নামক দলটি। হতবাক ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে দলটির নেতাকর্মীরা। জুলাই গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ সামাজিক, রাজনৈতিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের পরাজয় ঘটেছে।

জুলাই হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পরাজয়ের চেয়ে সামাজিক পরাজয় বেশি হয়েছে শীর্ষক ছায়া সংসদে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকদের পরাজিত করে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব কে এম মাহমুদ হাসান, সাংবাদিক জাহানারা পারভিন।

প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না

আপডেট টাইম : ১২:০৩:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫

৭৫ এর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিলে ২৪-এ এসে আওয়ামী লীগের এই করুণ পরিণতি হতো না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।

তিনি বলেছেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না। কোনো হত্যাকাণ্ডই শেখ হাসিনার সম্মতি ছাড়া হয়নি। আওয়ামী লীগ আমলে ভিন্নমত পোষণকারীদের নির্মমভাবে দমন করা হতো। তারা গুম, হত্যা, টর্চার সেল ও আয়নাঘরের মতো নির্যাতন কেন্দ্র করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।

শুক্রবার (৪ জানুয়ারি) এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক ছায়া সংসদে এসব কথা বলেন তিনি।

আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি ধাপে ধাপে দূষিত হয়েছে। ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ বিচার ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করে দলীয় বিবেচনায় বিচারকদের নিয়োগ দিয়েছে। হাইকোর্ট ডিভিশন ও সুপ্রিমকোর্ট থেকে যে সব রাজনৈতিক মামলার রায় হয়েছে সে সব রায়ের প্রতি মানুষের আস্থা ছিল না। ফলে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা কমে যায়। শেখ মুজিবের সঙ্গে ইয়াহিয়া খানের টেলিফোনে যোগাযোগ ছিল। তাকে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য তাজউদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম বার বার বললেও তিনি বাসা ছেড়ে কোথাও যেতে সম্মত হননি।

তিনি বলেন, শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধে যাননি। আওয়ামী লীগ শেখ মুজিবকে ইতিহাসের নায়ক করতে গিয়ে অনেক জাতীয় নেতার অবদান ইতিহাস থেকে মুছে ফেলেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার কারণে ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ হয়েছে। সে সময় প্রতিদিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অনেক ক্ষুধার্ত মানুষকে মারা যেতে দেখা গেছে।

ছায়া সংসদে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেলেও রেখে গেছে হত্যাযজ্ঞের নির্মম চিহ্ন। রক্তে আঁকা এই ইতিহাস দেশের সবচেয়ে বড় কালো দাগ। এই গণহত্যার দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না। জুলাই বিপ্লবে শহীদরা জাতীয় বীর হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার পরিবার পরিজনসহ বেশিরভাগ নেতাকর্মী গণহত্যা চালিয়ে পালিয়ে যাবার পর ছন্নছাড়া হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ নামক দলটি। হতবাক ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে দলটির নেতাকর্মীরা। জুলাই গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ সামাজিক, রাজনৈতিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের পরাজয় ঘটেছে।

জুলাই হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পরাজয়ের চেয়ে সামাজিক পরাজয় বেশি হয়েছে শীর্ষক ছায়া সংসদে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকদের পরাজিত করে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব কে এম মাহমুদ হাসান, সাংবাদিক জাহানারা পারভিন।

প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।