ঢাকা ০৮:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪১:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • ১১ বার

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী এ কথা জানান।

উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীর নৈতিক একাডেমিক এবং নৈতিক শৃঙ্খলার তত্ত্বাবধান ও রক্ষার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, হলের সিট বাণিজ্য লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ থাকবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হতে পারবে না। কেউ যদি এখনো যুক্ত থাকে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় গেজেট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো হলো- যেসকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিগগিরই মামলা রুজু করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা আচরণবিধি ২০১৮ মোতাবেক জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেসকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কর্মস্থলে অনুপস্থিত তাদের ছুটি মঞ্জুর না করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষক, ৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৭২ জন শিক্ষার্থী অভিযুক্ত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধি অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরমধ্যে যে সকল শিক্ষার্থী ছাত্রত্ব শেষ করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হবে। আর যাদের ছাত্রত্ব আছে তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধের দাবিতে গণস্বাক্ষর করেছিলাম। আজ রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করলেন উপাচার্য স্যার। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বড় পাওয়া। আমরা চাই শহীদ আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে যেন কখনো আর লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি ফিরে না আসে।’

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জীম আক্তার বলেন, ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ঐতিহাসিক একটি বিষয় হয়ে থাকবে রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়টি। ক্যাম্পাসের এই সন্ত্রাস রাজনীতি বন্ধ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হলো আজ। আমরা খুব খুশি।’

প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। এরপর সারা দেশে আন্দোলন বেগমান হয়ে ওঠে এবং গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতি বন্ধের দাবি ওঠে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ

আপডেট টাইম : ০৫:৪১:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী এ কথা জানান।

উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীর নৈতিক একাডেমিক এবং নৈতিক শৃঙ্খলার তত্ত্বাবধান ও রক্ষার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, হলের সিট বাণিজ্য লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ থাকবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হতে পারবে না। কেউ যদি এখনো যুক্ত থাকে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় গেজেট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো হলো- যেসকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিগগিরই মামলা রুজু করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা আচরণবিধি ২০১৮ মোতাবেক জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেসকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কর্মস্থলে অনুপস্থিত তাদের ছুটি মঞ্জুর না করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষক, ৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৭২ জন শিক্ষার্থী অভিযুক্ত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধি অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরমধ্যে যে সকল শিক্ষার্থী ছাত্রত্ব শেষ করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হবে। আর যাদের ছাত্রত্ব আছে তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধের দাবিতে গণস্বাক্ষর করেছিলাম। আজ রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করলেন উপাচার্য স্যার। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বড় পাওয়া। আমরা চাই শহীদ আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে যেন কখনো আর লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি ফিরে না আসে।’

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জীম আক্তার বলেন, ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ঐতিহাসিক একটি বিষয় হয়ে থাকবে রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়টি। ক্যাম্পাসের এই সন্ত্রাস রাজনীতি বন্ধ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হলো আজ। আমরা খুব খুশি।’

প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। এরপর সারা দেশে আন্দোলন বেগমান হয়ে ওঠে এবং গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতি বন্ধের দাবি ওঠে।