সরকারের গঠনমূলক সমালোচনাকারীদের জন্যও বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) দরজা খোলা থাকবে এবং বিটিভিতে সরকারের যৌক্তিক সমালোচনা করা যাবে। বিটিভি জনগণের মিডিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
বুধবার বিটিভির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
বিটিভির উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, সরকারকে সন্তুষ্ট করা বিটিভির কাজ হতে পারে না। জনগণকে সন্তুষ্ট করাই বিটিভির প্রধান কাজ।
ফ্যাসিবাদ ও গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা বাদে সবাই বিটিভিতে আসতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, বিটিভিকে বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে। বেসরকারি টিভি চ্যানেলের চেয়ে উন্নত কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। এ লক্ষ্যে বিটিভিকে কাজ করতে হবে।
বিগত সরকারের আমলে বিটিভির ভূমিকা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বিটিভি ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রচারে ব্যস্ত ছিল। বিটিভিকে এই নীতি থেকে বের হতে হবে। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা বিবেচনা করে বিটিভিতে অনুষ্ঠান তৈরি করতে হবে। জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও নতুন কুঁড়ির মতো সাড়া জাগানো সৃজনশীল অনুষ্ঠান নির্মাণ করতে হবে।
তিনি বিটিভির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কলাকুশলীদের পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা বিটিভির ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো ও স্টুডিও দ্রুত সংস্কার করার আশ্বাস দেন এবং বিটিভির সার্বিক উন্নয়নে সংস্কার প্রস্তাব প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা বিটিভির সাংগঠনিক কাঠামো সংস্কার, শিল্পী সম্মানি বৃদ্ধি, পুড়ে যাওয়া অবকাঠামো সংস্কারসহ বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যার বিষয় উপস্থাপন করেন। সভায় বিটিভির মহাপরিচালক মো. মাহবুবুল আলম, উপমহাপরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সাঈদ-উর-রহমান, উপমহাপরিচালক (অনুষ্ঠান) ড. সৈয়দা তাসমিনা আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী মো. মাসুদ ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভার আগে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত বিটিভি ভবন ও বিভিন্ন স্টুডিও পরিদর্শন করেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের বিবৃতি
পোশাক শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ ও নিহতের ঘটনায় প্রতিবাদ
আশুলিয়ায় আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ এবং শ্রমিক কাউসার হোসেন খান নিহতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন।
বুধবার ফেডারেশনটির সভাপতি কামরূল আহসান ও সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু মিয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রতারিত শ্রমিকরা নিজ অধিকার প্রশ্নে বিভিন্ন সময়ে কর্মক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক অধিকার, ন্যায্য মজুরি ও সামাজিক নিরাপত্তার দাবিতে পথে নেমেছে। কিন্তু অতীতের মতোই এই শিল্পের মালিকেরা শ্রমিকদের আন্দোলনকে নাশকতা, অন্তর্ঘাত ও বাজার হারানোর ভয় দেখিয়ে সরকারের আনুকূল্যে শ্রম আইনের ১৩(১) ধারার মতো অগণতান্ত্রিক আইনের অপপ্রয়োগ করে কারখানা বন্ধ করার কারণে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে।’
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘পূর্বঘোষিত দিনে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও বকেয়া পাওনা পরিশোধ করলে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হতো না। মালিকরা কথিত শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে অনৈতিক আর্থিক লেনদেন করে সংশ্লিষ্ট দিনের পরিবর্তে নতুন তারিখ ঘোষণা করলে শ্রমিকরা বিক্ষুদ্ধ হয়। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন ঘটনার জন্য দায়ী মালিকপক্ষকে গ্রেফতার না করে শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে হত্যা ও জখম করে অত্যন্ত অন্যায় ও নিন্দনীয় কাজ করেছে, যা ফ্যাসিবাদী আচরণ ছাড়া অন্য কিছু নয়। যা বৈষম্যমূলক।’
এসব ঘটনার জন্য দায়ী মালিকদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনা এবং নিহত ও আহত শ্রমিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহত শ্রমিকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার দাবি জানান নেতারা।