ঢাকা ০৩:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সংঘর্ষের ১০ দিনেও নিখোঁজ ইয়াসিন জীবিত অথবা মৃত ফেরত পেতে এলাকবাসীর মানববন্ধন সোনালি ক্ষেতে ঢেউ ভাঙা বসন্ত হাওয়া প্রধান উপদেষ্টা আজ পুলিশের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কথা শুনবেন আদালতের রায় উপেক্ষা দুই শতাধিক ভেনেজুয়েলার নাগরিককে এল সালভাদরে পাঠালেন ট্রাম্প কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে টিকিট ব্যবস্থা চালু কাজে ফিরলেন মেট্রোরেল কর্মীরা ধর্ষণ নিয়ে বক্তব্য ডিএমপি কমিশনারের দুঃখ প্রকাশ বায়ুদূষণের শীর্ষে লাহোর, ঢাকার অবস্থান কত জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলে সুদিনের স্বপ্ন নিয়ে আজ আসছেন হামজা চৌধুরী অবশেষে ৭৫ লাখ রুপিতে আইপিএলে দল পেলেন মুস্তাফিজের ‘শিষ্য’

বন্যাপ্রবণ এলাকা বিস্তৃত হচ্ছে বারবার চার জেলায়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৫:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৪৮ বার

টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে উত্তরাঞ্চলে বন্যার কবলে পড়েছেন লাখো মানুষ৷ রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে৷ অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন৷ এতে আতঙ্কে আছেন নদীপাড়ের মানুষ৷-ডয়েচে ভেলে

দীর্ঘস্থায়ী বন্যাকে চিন্তার কারণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷ অনেকে এটাকে কৃত্রিম বন্যা বললেও বিশেষজ্ঞরা এটাকে বন্যা বলতেই রাজি নন৷ অন্যদিকে এই বন্যাকে অসময়ের বন্যা বলতেও রাজি নন পানি বিশেষজ্ঞরা৷ তাদের মতে, মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বন্যার মৌসুম৷ ফলে এই সময়ের মধ্যে যে কোনো সময় দেশের যে কোনো এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে৷ সেজন্য পূর্ব প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন৷

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা কোনোভাবেই অসময়ের বন্যা নয়৷ এখন তো বন্যার মৌসুম চলছে৷ টানা কয়েকদিন আমাদের এখানেও বৃষ্টি হয়েছে, উজানে পাহাড়েও বৃষ্টি হয়েছে৷ ফলে অতিবৃষ্টির কারণে এই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ এর সঙ্গে অন্য কিছুর কোনো সম্পর্ক নেই৷ তবে এখন থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে, অবনতি হওয়ার আর কোনো আশঙ্কা নেই৷’’

আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে এসেছে৷ আগামী ৩ দিন পর্যন্ত তিস্তা নদীর ‘পানি সমতল’ কমতে শুরু করবে৷ অপরদিকে ধরলা ও দুধকুমার নদীর ‘পানি সমতল’ আগামী ১৮ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী ২ দিন হ্রাস পেতে পারে৷ আগামী ১২ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদী সংলগ্ন চরাঞ্চল এবং কতিপয় নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থেকে পরবর্তীতে উন্নতি হতে পারে৷ পরবর্তী ২ দিনে তিস্তা নদীর ‘পানি সমতল’ হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হতে পারে৷ অপরদিকে আগামী ৩ দিন পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে৷

হঠাৎ করে বন্যার কারণে অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে গবাদি পশুসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে সড়ক ও বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন৷ দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট৷ সোমবার সন্ধ্যায় নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছে, যদিও আগের দিন বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়৷ পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, উজানে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় পানিপ্রবাহ কমলেও ভাটি এলাকা কাউনিয়ায় আরও বাড়তে পারে৷ তবে পানি নামতে শুরু করলে নদী পাড়ে ভাঙন বাড়ে৷ এ কারণে ওই এলাকার নদী পাড়ের মানুষ ভাঙন আতঙ্কে আছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা৷

আবহাওয়া-বিদরা বলছেন, বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় জুলাইয়ে৷ এ বছর তুলনামূলক বেশি বৃষ্টি হয়েছে৷ ফলে এ মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদী বন্যা হয়েছে৷ জুলাইয়ের পর আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে অতিবৃষ্টির কারণে মৌসুম ছাড়াই দীর্ঘমেয়াদি বন্যা হয়েছে৷ বর্ষাকাল ছাড়া অন্য সময়ের বন্যা বড় চিন্তার কারণ৷

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তিস্তার পানি নামতে শুরু করেছে৷ আশা করছি, এখন থেকে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাবে৷ উজানে পাহাড়েও বৃষ্টি কমে এসেছে৷ ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে৷”

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের আট উপজেলায় ৬০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি৷ লালমনিরহাট সদরের তিস্তা রেলস্টেশনের কাছে রেললাইনে পানি ওঠায় ব্যাহত হয় লালমনিরহাট-ঢাকা ট্রেন চলাচল৷ দুর্গত এলাকার আমন ও শাকসবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে৷ ভারতের গজাল-ডোবা ব্যারাজ উন্মুক্ত করে দেওয়ায় পানির চাপ সামলাতে ভাটিতে থাকা তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেয় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ৷

নদী ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটাকে তো আমি বন্যা বলতেই চাই না৷ কারণে নদীর পানি প্রবাহিত হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কিছু এলাকা আছে৷ নদীর পাশেও চর এলাকা থাকে৷ এখানে তো ওই চর এলাকা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে৷ সেখানে কোনো বসতি থাকলে ডুবতে পারে৷ তিস্তার দুই পাড়ে তিন কিলোমিটার চর এলাকা পানি প্রবাহের স্থান৷ তার মধ্য দিয়েই এই পানি যাচ্ছে৷ যদি রংপুর শহর ডুবে যেতো তাহলে বলতাম বন্যা হয়েছে৷ তেমন কিছু তো হয়নি, এমনকি কোনো বাঁধও ভেঙে যায়নি৷ ফলে এটা কোনো বন্যা না৷’’

এদিকে স্বৈরাচার-মুক্ত হওয়ার পর বন্যার কবলে পড়েছে দেশ৷ কুমিল্লা-নোয়াখালী-ফেনী পার্বত্য এলাকার বন্যার ক্ষত শুকানোর আগেই ডুবতে বসেছে দেশের উত্তরাঞ্চল৷ এসব নিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবু সাদিক কায়েমের একটি মন্তব্য আলোচনার জন্ম দিয়েছে৷

তিনি লিখেছেন, একের পর এক কৃত্রিম বন্যা সৃষ্টি করে ভারত পানি সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়েছে৷ তার ভাষ্য, এর উদ্দেশ্য একটাই – বাংলাদেশের মানুষকে বিপ্লবের জন্য শাস্তি দেওয়া৷ একের পর এক কৃত্রিম বন্যা সৃষ্টি করে এদেশে আবারও ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে৷ রবিবার রাতে সাদিক কায়েম তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে এ মন্তব্য করেন৷ শিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরও একজন গুরুত্বপূর্ণ সমন্বয়ক৷

এটা কৃত্রিম বন্যা কিনা জানতে চাইলে প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অবশ্যই না৷ প্রত্যেকটা ব্যারেজের পানির ধারণ ক্ষমতা থাকে৷ এর বেশি হলে গেইট খুলে দিতে হয়৷ আমরাও তো পানির চাপে তিস্তা ব্যারাজের গেইটগুলো খুলে দিয়েছি৷ আর রংপুরে যেটা হয়েছে, সেটা তো বন্যাই না৷ ফলে এই ধরনের চিন্তা অমূলক৷’’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সংঘর্ষের ১০ দিনেও নিখোঁজ ইয়াসিন জীবিত অথবা মৃত ফেরত পেতে এলাকবাসীর মানববন্ধন

বন্যাপ্রবণ এলাকা বিস্তৃত হচ্ছে বারবার চার জেলায়

আপডেট টাইম : ১১:৩৫:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে উত্তরাঞ্চলে বন্যার কবলে পড়েছেন লাখো মানুষ৷ রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে৷ অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন৷ এতে আতঙ্কে আছেন নদীপাড়ের মানুষ৷-ডয়েচে ভেলে

দীর্ঘস্থায়ী বন্যাকে চিন্তার কারণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷ অনেকে এটাকে কৃত্রিম বন্যা বললেও বিশেষজ্ঞরা এটাকে বন্যা বলতেই রাজি নন৷ অন্যদিকে এই বন্যাকে অসময়ের বন্যা বলতেও রাজি নন পানি বিশেষজ্ঞরা৷ তাদের মতে, মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বন্যার মৌসুম৷ ফলে এই সময়ের মধ্যে যে কোনো সময় দেশের যে কোনো এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে৷ সেজন্য পূর্ব প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন৷

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা কোনোভাবেই অসময়ের বন্যা নয়৷ এখন তো বন্যার মৌসুম চলছে৷ টানা কয়েকদিন আমাদের এখানেও বৃষ্টি হয়েছে, উজানে পাহাড়েও বৃষ্টি হয়েছে৷ ফলে অতিবৃষ্টির কারণে এই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ এর সঙ্গে অন্য কিছুর কোনো সম্পর্ক নেই৷ তবে এখন থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে, অবনতি হওয়ার আর কোনো আশঙ্কা নেই৷’’

আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে এসেছে৷ আগামী ৩ দিন পর্যন্ত তিস্তা নদীর ‘পানি সমতল’ কমতে শুরু করবে৷ অপরদিকে ধরলা ও দুধকুমার নদীর ‘পানি সমতল’ আগামী ১৮ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী ২ দিন হ্রাস পেতে পারে৷ আগামী ১২ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদী সংলগ্ন চরাঞ্চল এবং কতিপয় নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থেকে পরবর্তীতে উন্নতি হতে পারে৷ পরবর্তী ২ দিনে তিস্তা নদীর ‘পানি সমতল’ হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হতে পারে৷ অপরদিকে আগামী ৩ দিন পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে৷

হঠাৎ করে বন্যার কারণে অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে গবাদি পশুসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে সড়ক ও বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন৷ দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট৷ সোমবার সন্ধ্যায় নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছে, যদিও আগের দিন বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়৷ পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, উজানে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় পানিপ্রবাহ কমলেও ভাটি এলাকা কাউনিয়ায় আরও বাড়তে পারে৷ তবে পানি নামতে শুরু করলে নদী পাড়ে ভাঙন বাড়ে৷ এ কারণে ওই এলাকার নদী পাড়ের মানুষ ভাঙন আতঙ্কে আছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা৷

আবহাওয়া-বিদরা বলছেন, বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় জুলাইয়ে৷ এ বছর তুলনামূলক বেশি বৃষ্টি হয়েছে৷ ফলে এ মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদী বন্যা হয়েছে৷ জুলাইয়ের পর আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে অতিবৃষ্টির কারণে মৌসুম ছাড়াই দীর্ঘমেয়াদি বন্যা হয়েছে৷ বর্ষাকাল ছাড়া অন্য সময়ের বন্যা বড় চিন্তার কারণ৷

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তিস্তার পানি নামতে শুরু করেছে৷ আশা করছি, এখন থেকে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাবে৷ উজানে পাহাড়েও বৃষ্টি কমে এসেছে৷ ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে৷”

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের আট উপজেলায় ৬০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি৷ লালমনিরহাট সদরের তিস্তা রেলস্টেশনের কাছে রেললাইনে পানি ওঠায় ব্যাহত হয় লালমনিরহাট-ঢাকা ট্রেন চলাচল৷ দুর্গত এলাকার আমন ও শাকসবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে৷ ভারতের গজাল-ডোবা ব্যারাজ উন্মুক্ত করে দেওয়ায় পানির চাপ সামলাতে ভাটিতে থাকা তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেয় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ৷

নদী ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটাকে তো আমি বন্যা বলতেই চাই না৷ কারণে নদীর পানি প্রবাহিত হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কিছু এলাকা আছে৷ নদীর পাশেও চর এলাকা থাকে৷ এখানে তো ওই চর এলাকা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে৷ সেখানে কোনো বসতি থাকলে ডুবতে পারে৷ তিস্তার দুই পাড়ে তিন কিলোমিটার চর এলাকা পানি প্রবাহের স্থান৷ তার মধ্য দিয়েই এই পানি যাচ্ছে৷ যদি রংপুর শহর ডুবে যেতো তাহলে বলতাম বন্যা হয়েছে৷ তেমন কিছু তো হয়নি, এমনকি কোনো বাঁধও ভেঙে যায়নি৷ ফলে এটা কোনো বন্যা না৷’’

এদিকে স্বৈরাচার-মুক্ত হওয়ার পর বন্যার কবলে পড়েছে দেশ৷ কুমিল্লা-নোয়াখালী-ফেনী পার্বত্য এলাকার বন্যার ক্ষত শুকানোর আগেই ডুবতে বসেছে দেশের উত্তরাঞ্চল৷ এসব নিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবু সাদিক কায়েমের একটি মন্তব্য আলোচনার জন্ম দিয়েছে৷

তিনি লিখেছেন, একের পর এক কৃত্রিম বন্যা সৃষ্টি করে ভারত পানি সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়েছে৷ তার ভাষ্য, এর উদ্দেশ্য একটাই – বাংলাদেশের মানুষকে বিপ্লবের জন্য শাস্তি দেওয়া৷ একের পর এক কৃত্রিম বন্যা সৃষ্টি করে এদেশে আবারও ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে৷ রবিবার রাতে সাদিক কায়েম তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে এ মন্তব্য করেন৷ শিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরও একজন গুরুত্বপূর্ণ সমন্বয়ক৷

এটা কৃত্রিম বন্যা কিনা জানতে চাইলে প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অবশ্যই না৷ প্রত্যেকটা ব্যারেজের পানির ধারণ ক্ষমতা থাকে৷ এর বেশি হলে গেইট খুলে দিতে হয়৷ আমরাও তো পানির চাপে তিস্তা ব্যারাজের গেইটগুলো খুলে দিয়েছি৷ আর রংপুরে যেটা হয়েছে, সেটা তো বন্যাই না৷ ফলে এই ধরনের চিন্তা অমূলক৷’’