রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে গমের সোনালি রঙের মেলা। ক্ষেতে ক্ষেতে দোল খাচ্ছে পরিপুষ্ট গমের শিষ। কয়েক দিন পরেই মাঠে গম কাটা শুরু করবেন চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার গমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ।
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে গমের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন হয়েছে। গম চাষে খরচ কম। অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ার আশায় কৃষকদের গম চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, গেল বছরের তুলনায় এবার ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে গম চাষাবাদ বেশি হয়েছে। গত বছর রাজশাহী অঞ্চলে গমের আবাদ হয়েছিল ৯২ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৮৮ হাজার ২৬৮ মেট্রিকটন। এ বছর আবাদ হয়েছে ৯৩ হাজার ৮৬৭ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৪৮ মেট্রিকটন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি গম উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
পবা উপজেলার পুকুরিয়ার গমচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের দেওয়া উন্নত জাতের গম বীজ ও সার দিয়ে এবারের চাষাবাদ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত গম অনেক সুন্দর আছে। পোকার সেভাবে আক্রমণও নেই। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ২০ মণ পর্যন্ত গম পাওয়া যাবে।
গোদাগাড়ী উপজেলার সাহাব্দিপুর গ্রামের কৃষক শরিফুল আলম বলেন, এ বছর ১৫ বিঘা জমিতে গম চাষাবাদ করেছেন। বিঘাপ্রতি ১৫ মণ গম উৎপাদনের আশা করছি। এর আগের বছরে ৮ বিঘা জমিতে চাষ করা হয়েছিল। এবার তা বাড়ানো হয়েছে।
আরেকজন গম চাষি জসিম উদ্দিন বলেন, গম চাষে এবার পাঁচ বিঘা জমিতে প্রায় বিঘাপ্রতি সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধারণা করছি, গমের ফলন ভালো হবে এবং বাজারে গম বিক্রি করে বেশি দাম পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক উম্মে ছালমা জানান, রবি ফসলের মধ্যে গম একটি লাভজনক আবাদ। কৃষকদের গম চাষে আগ্রহী করতে তালিকাভুক্ত চাষিদের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ও উচ্চফলনশীল উন্নত জাতের গম বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গম চাষ করতে কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।