বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতনকে ঘিরে সৃষ্ট অস্থিরতার রেশ এখনও কাটেনি বাংলাদেশে। এই অস্থির সময়ে মানুষের মনে কিছুটা স্বস্তি ফেরাতে পারে ক্রিকেট। দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ দল এখন পাকিস্তানে। আজ রাওয়ালপিন্ডিতে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। আগেরদিন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছিলেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে ভালো খেলে দেশের মানুষের মন ভালো করতে মুখিয়ে আছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। কাল ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সেই ভালো খেলার অর্থটা জানিয়ে দিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত এই টেস্ট দুটি।
দুদলের আগের ছয়টি টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের প্রাপ্তি অতি সামান্য। ১৩ টেস্টের ১২টিই জিতেছে পাকিস্তান। একমাত্র ড্র টেস্টের স্মৃতিতেও জমেছে নয় বছরের ধুলো। এবার বিশেষ কিছু করে বিবর্ণ এই রেকর্ড বদলাতে চান নাজমুল, ‘রেকর্ড বদলাতেই পারে। কাজটা সহজ না হলেও এবার আমাদের দল ভারসাম্যপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি, এবার আমরা বিশেষ কিছু করতে পারব। ভালো প্রস্তুতি নিতে পেরেছি। আশা করছি, এবার ব্যাটিং বিভাগ হিসাবে ভালো করব। টেস্ট জেতার জন্য বোলিংও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সব মিলিয়ে দল হিসাবে এবার খুব ভালো সুযোগ আছে আমাদের।’
রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টের পাঁচ দিনেই সকালে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। পেসবান্ধব উইকেটে চার পেসার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে পাকিস্তান। বৃষ্টিভেজা কন্ডিশনে শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহদের সামলানো আরও চ্যালেঞ্জিং হবে নাজমুলদের জন্য। তবে অনুকূল কন্ডিশনে বাংলাদেশের পেসাররাও বাবর আজমদের ঘুম কেড়ে নিতে পারেন বলে মনে করছেন নাজমুল, ‘গত কয়েক বছর ধরে আমাদের পেসাররা খুবই ভালো করছে। বিশ্বমানের তিন-চারজন স্পিনারও আছে আমাদের। সকালে উইকেট দেখে আমরা একাদশ সাজাব। আমাদের কোনো বিভাগেই ঘাটতি নেই। তবে এখানে পেসাররা বাড়তি সহায়তা পায়। তাই এক কন্ডিশনে ভালো করার জন্য মুখিয়ে আছে আমাদের পেসাররা।’
এদিকে নতুন কোচ জেসন গিলেস্পির অধীনে নিজেদের নতুন শুরু জয় দিয়ে করতে উন্মুখ পাকিস্তানও। তাই বলে প্রতিপক্ষকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ, ‘বাংলাদেশ সব বিভাগেই চ্যালেঞ্জিং প্রতিপক্ষ। অভিজ্ঞ ও বিশ্বমানের কয়েকজন ক্রিকেটার আছে তাদের। আমাদের মতো তারাও নিজেদের সেরাটা খেলার চেষ্টা করবে। তবে নিজেদের সামর্থ্যে পুরো আস্থা আছে আমাদের।’
বাংলাদেশের পেস আক্রমণে অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকলেও দলে আছেন সাকিব আল হাসান (২৩৭ উইকেট), তাইজুল ইসলাম (১৯৫ উইকেট) ও মেহেদী হাসান মিরাজের (১৬৪ উইকেট) মতো অভিজ্ঞ তিন স্পিনার। সেখানে একাদশে কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার রাখেনি পাকিস্তান। এর ব্যাখ্যায় কাল শান মাসুদ বলেন, ‘রাওয়ালপিন্ডির উইকেট ও কন্ডিশনে স্পিন বোলিং সেই অর্থে কোনো হুমকি নয়। আমরা নতুন কিছু করতে চাই না।’