ঢাকা ১১:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঋণ দিতে পারবে না এস আলমের ৬ ব্যাংক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৮:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
  • ১৫ বার

দেশের যেসব ব্যাংক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে আছে, সেসবের মধ্যে ছয়টি ব্যাংকের ঋণ বিতরণ ও ঋণপত্র (এলসি) খোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব ব্যাংক ঋণ বিতরণ ও এলসি খুলতে পারবে না। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সোমবার (১৯ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, যেসব ব্যাংক ঋণ বিতরণ ও এলসি খুলতে পারবে না, সেগুলো হলো— ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব ব্যাংক নতুন করে ঋণ বিতরণ করতে পারবে না, ঋণপত্র খুলতে পারবে না। আগের ঋণ নবায়নও করতে পারবে না। তবে কৃষি, চলতি মূলধন, এসএমই, আমানতের বিপরীতে ঋণ ও প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত দিতে পারবে। ৫ কোটি টাকার বেশি হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে।

বিদায়ী সরকারের আমলে ব্যাংক খাতে ঋণ কেলেঙ্কারি, দখল, লুটপাট ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। ইসলামী ব্যাংকসহ প্রায় আটটি ব্যাংক দখলে নেয় এস আলম গ্রুপ। এসব ব্যাংক দখলে নেওয়ার পর থেকে নামে-বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয় এস আলম গ্রুপ। ফলে, চরম আর্থিক সঙ্কটে রয়েছে ব্যাংকগুলো। শুধু ঋণ নয়, এসব ব্যাংকের মালিকানা নিজেদের কব্জায় রাখতে নামে-বেনামে কোম্পানি খুলে শেয়ার ধারণ করেছে প্রভাবশালী গ্রুপটি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মুখে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইসলামী ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের নগদ টাকা সরাতে গিয়ে ব্যর্থ হয় এস আলম গ্রুপ। এর পরেই গত সপ্তাহে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ব্যাংকসহ মোট নয়টি ব্যাংকের ইস্যুকৃত ১ কোটি টাকা বা তার বেশি টাকার চেক অন্য কোনো ব্যাংকের মাধ্যমে নগদায়ন বন্ধের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন এসব ব্যাংক আমানতের চেয়ে বেশি ঋণ দেওয়ায় চলতি হিসাবের ঘাটতি অনেক বেড়েছে। এতদিন বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ বিবেচনায় এসব ব্যাংককে জামানত ছাড়াই টাকা ধার দিয়েছে এবং লেনদেন হিসাব চালু রেখেছে। এ কারণেই এসব ব্যাংকের আর্থিক সঙ্কট আরও চরম আকার ধারণ করে। এখন ঋণ বিতরণ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জানা গেছে, প্রভাবশালী এ গ্রুপকে ব্যাংক লুটপাট ও শেয়ার কেলেঙ্কারিতে সহায়তা করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও বিএসইসি’র সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। তারা দুজন সরকার পতনের পর গদত্যাগ করলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সরকার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ঋণ দিতে পারবে না এস আলমের ৬ ব্যাংক

আপডেট টাইম : ১০:৪৮:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

দেশের যেসব ব্যাংক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে আছে, সেসবের মধ্যে ছয়টি ব্যাংকের ঋণ বিতরণ ও ঋণপত্র (এলসি) খোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব ব্যাংক ঋণ বিতরণ ও এলসি খুলতে পারবে না। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সোমবার (১৯ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, যেসব ব্যাংক ঋণ বিতরণ ও এলসি খুলতে পারবে না, সেগুলো হলো— ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব ব্যাংক নতুন করে ঋণ বিতরণ করতে পারবে না, ঋণপত্র খুলতে পারবে না। আগের ঋণ নবায়নও করতে পারবে না। তবে কৃষি, চলতি মূলধন, এসএমই, আমানতের বিপরীতে ঋণ ও প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত দিতে পারবে। ৫ কোটি টাকার বেশি হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে।

বিদায়ী সরকারের আমলে ব্যাংক খাতে ঋণ কেলেঙ্কারি, দখল, লুটপাট ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। ইসলামী ব্যাংকসহ প্রায় আটটি ব্যাংক দখলে নেয় এস আলম গ্রুপ। এসব ব্যাংক দখলে নেওয়ার পর থেকে নামে-বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয় এস আলম গ্রুপ। ফলে, চরম আর্থিক সঙ্কটে রয়েছে ব্যাংকগুলো। শুধু ঋণ নয়, এসব ব্যাংকের মালিকানা নিজেদের কব্জায় রাখতে নামে-বেনামে কোম্পানি খুলে শেয়ার ধারণ করেছে প্রভাবশালী গ্রুপটি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মুখে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইসলামী ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের নগদ টাকা সরাতে গিয়ে ব্যর্থ হয় এস আলম গ্রুপ। এর পরেই গত সপ্তাহে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ব্যাংকসহ মোট নয়টি ব্যাংকের ইস্যুকৃত ১ কোটি টাকা বা তার বেশি টাকার চেক অন্য কোনো ব্যাংকের মাধ্যমে নগদায়ন বন্ধের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন এসব ব্যাংক আমানতের চেয়ে বেশি ঋণ দেওয়ায় চলতি হিসাবের ঘাটতি অনেক বেড়েছে। এতদিন বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ বিবেচনায় এসব ব্যাংককে জামানত ছাড়াই টাকা ধার দিয়েছে এবং লেনদেন হিসাব চালু রেখেছে। এ কারণেই এসব ব্যাংকের আর্থিক সঙ্কট আরও চরম আকার ধারণ করে। এখন ঋণ বিতরণ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জানা গেছে, প্রভাবশালী এ গ্রুপকে ব্যাংক লুটপাট ও শেয়ার কেলেঙ্কারিতে সহায়তা করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও বিএসইসি’র সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। তারা দুজন সরকার পতনের পর গদত্যাগ করলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সরকার।