সকাল থেকেই সরগরম থাকে ভোলার বাজারগুলো। এসব বাজারে পুকুর, ঘের, নদী ও সাগরের বিভিন্ন ধরনের প্রচুর মাছ আসে। বিক্রেতারা সেসব মাছ সাজিয়ে বসে থাকেন। ক্রেতারাও ছুটে আসেন কেনার আশায়। কিন্তু বাজারে এসেই দাম শুনে মাছ কেনার সাধ উধাও হয়ে যায়।
ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে প্রচুর মাছ উঠলেও বিক্রেতারা ইচ্ছামতো দাম চান। এ ক্ষেত্রে তেমন কোনো তদারকি না থাকায় সাধারণ ক্রেতাদের হিমশিম খেতে হয়।
শনিবার ভোলা শহরের কিচেন মার্কেটসহ বিভিন্ন মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মাঝারি সাইজের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০০-১৪০০ টাকা, বড় ইলিশের কেজি ১৬০০-১৮০০ টাকা। আর কোরাল ১০০০-১১৫০ টাকা, নদীর পাঙাশ ৭৫০-৮৫০ টাকা, চিংড়ি ৬০০-১৮০০ টাকা ও পুকুর-ঘেরের রুই-কাতলা ৩৮০-৪৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০-৫৫০ টাকা, বালিয়া ৬০০-৭৫০ টাকা, কই ৩৮০-৭৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০-৩৩০ টাকা ও চাষের পাঙাশ ২০০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ কিনতে আসা মো. মিজানুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, বিধান সরকার, রাহাত হোসেন, আরজু বেগম ও মিনারা আক্তাররা জানান, চারদিকে নদী থাকায় মাছে পরিপূর্ণ ভোলা। এছাড়া চলমান বর্ষার মৌসুম হওয়ায় বাজারে প্রচুর পরিমাণ মাছের সরবরাহ হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। এতে মাছ কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে ক্রেতাদের।
আরেক ক্রেতা মো. বাবলু ও নজরুল ইসলাম বলেন, ভোলার বাজারে যেসব মাছ উঠছে সব মাছই আমাদের পুকুর-ঘের, নদী ও সাগরের। এখানে মাছ তো অন্য কোনো জেলা থেকে কিনে পরিবহন করে আনা হয় না। বিক্রেতারা পুকুর-ঘেরের মালিকদের কাছ থেকে সরাসরি মাছ কিনে আনেন। আর নদী ও সাগরের মাছগুলো ভোলা সদরের তুলাতুলি মৎস্য ঘাট, নাছির মাঝি মৎস্য ঘাট, ইলিশা জংশন মৎস্য ঘাট, কাঠির মাথা মৎস্য ঘাট, ভোলার খাল মৎস্যসহ বিভিন্ন ঘাট থেকে বিক্রেতারা নিলামের মাধ্যমে কিনে বাজারে নিয়ে আসেন। তারপরও তারা নানা অজুহাতে বাজারে মাছের দাম ইচ্ছামতো বাড়িয়ে বিক্রি করছেন।
এদিকে পুকুর ও ঘেরের মাছ বিক্রেতা মো. আব্দুল রহমান, মো. বাচ্চু ও মো. সিদ্দিক বলেন, আমরা পুকুর ও ঘেরের মালিকদের কাছ থেকে রুই-কাতলা, পাবদা, চিংড়ি, কই, পাঙাশ, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন মাছ কিনে আনি। আর পুকুর ও ঘেরের মালিকরা মাছের খাবারের দাম বেশির অজুহাতে আমাদের থেকে আগের চেয়ে ২০-১০০ টাকা বেশি নিচ্ছেন। আমরাও বাধ্য হয়ে তাদের কাছ থেকে বেশি দামে ক্রয় করে খুচরায় একটু বেশি দামে বিক্রি করছি।
নদী ও সাগরের মাছ বিক্রেতা মো. জয়নাল, মো. নাগর ও মহসিনরা জানান, বর্তমানে ভোলার ঘাটগুলোতে মাছের সরবরাহ বেশি থাকলেও বিভিন্ন স্থানের খুচরা ও পাইকারি ক্রেতা আসায় নিলামে দামে বেশি উঠে যায়। বিশেষ করে ইলিশ, কোরাল, পাঙাশ ও চিংড়ি মাছের দাম।
ভোলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. মোস্তফা সোহেল বলেন, ভোলার চারদিকে নদী থাকায় বিভিন্ন ধরনের মাছের সরবরাহ বেশি থাকে। কেউ যদি অজুহাত দেখিয়ে কারসাজির মাধ্যমে মাছের দাম বেশি দাবি করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।