নিজাম (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীপুর তহুরা আমিন (টি আমিন) সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দখল করে পশুর হাট বসানোর লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাঠ রক্ষার্থে গরু-ছাগলের হাট বন্ধের দাবি জানিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু পশুর হাটের নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করেই খেলার মাঠ নষ্ট করে পশুর হাটের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে একটি প্রভাবশালী মহল।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, মদন উপজেলার একমাত্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় জাহাঙ্গীপুর তহুরা আমিন সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। সেই বিদ্যালয়ের মাঠে জাতীয় দিবসের সকল প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। এর সাথে জাতীয় পর্যায়ের সকল ধরণের খেলাধুলা ঐ মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এ দিকে বিদ্যালয়ের পাশেই মদন উপজেলা সর্ববৃহৎ দেওয়ার বাজার। দেওয়ান জাহের বখত গং নামের ওয়াকফস্টেইট বাজার পরিচালনা করেন। সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই দুই দিন দেওয়ান বাজারে হাট বসে। প্রতি বৃহস্পতিবার ঐ বাজারে পশুর হাট বসলেও বিদ্যালয়ের মাঠ ব্যবহার হয়না।
কিন্ত ঈদুল আযহার উপলক্ষ্যে প্রকাশিত কোরবানীর পশুর হাটের জন্য প্রতিবছরেই বিদ্যালয়ের মাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। গত সোমবার থেকে পুরো খেলার মাঠ জুড়ে খুঁটি পুতে দখল করা হয়েছে। মাঠ রক্ষার্থে পশুর হাট বন্ধের দাবি জানিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ৮ জুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেলও এখন পর্যন্তও বিদ্যালয়ের মাঠটি বাজারের দখলে রয়েছে। অপর দিকে বটতলা জামে মসজিদ ও দারুল উলুম মাদ্রাসার নামে ওয়াকফস্টেইট গঠন করে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে পশুর হাট বসিয়ে আসছে। জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার পশুর হাট বসিয়েছে একটি চক্র।
জানতে চাইলে দেওয়ার জাহের বখত গং ওয়াকফস্টেইট’র মোতাওয়াল্লী দেওয়া মোদাচ্ছের হোসেন শফিক জানান, বিদ্যালয়ের মাঠের জায়গাটি আমি দান করেছি। প্রতি বছর আমি মাঠ সংস্কার করে দিই। কিন্তু পশুর হাটের জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ বছর আমার কাছে এক লক্ষ টাকা দাবি করেছে। টাকা না দেয়ায় সে অভিযোগ করেছে। বিদ্যালয়ের মাঠে পশুর হাট যাতে না বসে প্রয়োজনে আমি মাইকিং করবো।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ জানান, বিদ্যালয়ের মাঠ রক্ষার্থে পশুর হাট বন্ধের জন্য আমি প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগ দেয়ার পর দেওয়ান শফিক সাহেব আমাকে ডেকেছিল। আমার কয়েকজন শিক্ষক নিয়ে তাঁর সাথে দেখা করি। বিদ্যালয়ের মাঠে পশুর হাট বসানোর জন্য তিনি আমাকে ৩০ হাজার টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেন। আমি কোন টাকা দাবি করিনি।
এ ব্যাপারে মদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ শাহ আলম মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে পশুর হাট বন্ধের জন্য ১১ জুন একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সহকারি কমিশনার (ভূমি) এ.টি.এম. আরিফ’কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে হাট ও বাজারের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো কাগজপত্র দুইটি ওয়াকফস্টেইট দেখাতে পারেনি।