হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্স মাঠে গতকাল শনিবার রেকর্ডের মালা গলায় পরেছেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে সফরকারীরা। উইকেটের ব্যবধানে এটাই সবচেয়ে বড় জয় বাংলাদেশের। ৫০ বল হাতে রেখে পাওয়া এই জয় দুই দলের শক্তির পার্থক্য পরিষ্কার করেছে।
কিন্তু এমন জয়ের পর কে বলবে, আগের দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ। তবু বিশ্বকাপের আগে এমন জয় হারানো আত্মবিশ্বাস কিছুটা হলেও ফেরাতে সাহায্য করবে নাজমুল হোসেনদের।ম্যাচ শেষে সে কথাই বললেন অধিনায়ক, ‘আমাদের জন্য এটা হতাশার। সত্যি কথা বলতে আমরা ভালো খেলতে পারিনি।
কিন্তু আমরা শেষটা ভালো করেছি। আমার মনে হয়, এই আত্মবিশ্বাস বিশ্বকাপে কাজে দেবে।’ একই সঙ্গে সতীর্থদের প্রশংসায় ভাসালেন নাজমুল, ‘ছেলেরা তাদের সামর্থ্য দেখিয়েছে। ম্যাচের আগে আমরা যা পরিকল্পনা করেছিলাম, প্রত্যেকে সেই পরিকল্পনা ভালোভাবে বাস্তবায়ন করেছে।
আধিপত্য দেখিয়ে পাওয়া জয়ে গতকাল সব কিছুই পক্ষে গেছে বাংলাদেশের। আইপিএলফেরত মুস্তাফিজুর রহমান আগের দুই ম্যাচে ৭২ রান দেওয়ার দুয়ো হজম করে শেষ ম্যাচে শুধু জ্বলে উঠলেন বললে হয়তো পুরোটা বলা হবে না। গড়লেন রেকর্ড। মাত্র ১০ রানে নেন ৬ উইকেট। নিজের ক্যারিয়ারসেরা তো বটেই, বাংলাদেশের পক্ষেও সেরা বোলিং ফিগার এটি।
ম্যাচসেরার সঙ্গে ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরার পুরস্কার হাতে তৃপ্তির ঢেকুর মুস্তাফিজের, ‘যেভাবে বোলিং করেছি তাতে আমি খুশি। আমি অনেক ভেরিয়েশন চেষ্টা করেছি। ম্যাচসেরা ও সিরিজসেরা হতে পেরে ভালো লাগছে।’মুস্তাফিজের তাণ্ডবে ৯ উইকেট হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইনিংস থামে ১০৪ রানে। অথচ টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীর ও আন্দ্রিয়াস গুসের ব্যাটে ৫ ওভারে ৪৬ রান তোলে তারা। পঞ্চম ওভারে শেষ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ (১৫ বলে ২৭) রানের মালিক আন্দ্রিয়াসকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। এতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড বইয়ে নাম তোলেন তিনি। সঙ্গে ১৪ হাজার রান। এমন অর্জন বিশ্ব ক্রিকেটে প্রথম। এরপর মুস্তাফিজ ৩ স্পেলে ৪ ওভারের কোটায় সব ধসিয়ে দেন। ১ উইকেট নেওয়া রিশাদ হোসেন ৪ ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে কৃপণ বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েন।
এদিকে অফ ফর্মে থাকা লিটন দাসকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ গতকাল তিন ওপেনার খেলালেও ইনিংস শুরু করেন দুই বাঁহাতি সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান। ইনিংসের প্রথম ওভার থেকে দাপট দেখান তাঁরা। আর কোনো ব্যাটারকে নামার সুযোগ না দিয়ে ওপেনিংয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০৮ রান তোলেন দুজন। তানজিদ ৫২ বলে ৫৮ এবং সৌম্য ২৮ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন। তাতে বিশ্বকাপের আগে টপ অর্ডার ঘিরে থাকা অস্বস্তিতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিতে পারলেন তানজিদ-সৌম্য।