ঢাকা ০২:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ত্বকের যত্নে প্রতিদিন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১২:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০১৬
  • ৩৭৩ বার

এই রোদ এই বৃষ্টি, এমনটাই হলো এখনকার আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্য। আবহাওয়ার এই রকমভেদ প্রভাবিত করে ত্বককে। তাই এই সময় ত্বকের যত্ন বিশেষভাবে প্রয়োজন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিন্তু আমরা জোর দেই মুখের যত্নের প্রতি চোখ, নাক, ঠোঁটের গড়নের ওপর। মাঝে মাঝে ভুলেই যাই যে এই অঙ্গগুলোকে ধারণ করে রাখে যে ত্বক সেই ত্বক যদি সুন্দর না হয় তাহলে অন্য কিছুর কোন মূল্যই নেই।

ত্বকের পরিচর্যা সমন্ধে জানার আগে জেনে নেয়া দরকার কী কী কারণে ত্বক সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ত্বকের সব থেকে বড় শত্রু কিন্তু প্রখর সূর্যরশ্মি। তাই রোদ থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকাই ভাল। শীত-গ্রীষ্ম সারা বছরই বেরোতে হলে ছাতা ও রোদ চশমা ব্যবহার করুন। শুধু রোদ নয় ধুলো-বালি, ধোঁয়াতেও ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু আপনি ঘরে তো বসে থাকতে পারবেন না। আপনাকে বের হতেই হবে কাজকর্মও করতে হবে। সব কিছু করেও আপনাকে ত্বকচর্চার জন্য একটু সময় বের করে নিতে হবে। সামান্য কিছু নিয়ম বা অভ্যাসের পরিবর্তনে কিন্তু আপনার ত্বক হয়ে উঠবে ঝলমলে। সতেজ যা নজর কাড়বে। এর জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলুন-

স্বাভাবিকভাবেই আমাদের ত্বককে সুস্থ রাখতে, ত্বকের মৃত কোষগুলোকে সরিয়ে সতেজ আর প্রাণবন্ত করে তুলতে সেটাকে পরিষ্কার করা উচিত রোজ। অনেক সময় ত্বকের জন্য উপকারী দ্রব্য বা মেক-আপের মতন প্রসাধনীগুলোই অনেকক্ষণ ধরে রেখে দিলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে ত্বক। সেই সাথে বাইরের ধুলো-ময়লা তো আছেই। আর তাই খুব ভালো করে দিনে কয়েকবার পরিষ্কার করে নিন আপনার মুখমন্ডলের ত্বক। এক্ষেত্রে অবশ্যই সাবানকে এড়িয়ে চলুন। কারণ, নাহলে সাবান আপনার ত্বককে করে দেবে কর্কশ। এছাড়াও শুষ্ক ত্বকের জন্যে অ্যালকোহল মুক্ত, ক্রিমি কোনকিছু ব্যবহার করুন। তবে যেটাই ব্যবহার করুন না কেন খেয়াল রাখবেন যাতে সেটা অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে আপনার ত্বকের ওপর থাকে।

বেশিরভাগ মেয়েদেরই অভ্যাস থাকে, ঘুম থেকে উঠে মুখে-চোখে অল্প একটু পানি দিয়ে রান্নাঘরের কাজে লেগে যাওয়া। এটা কিন্তু একেবারে ঠিক নয়। রান্নাঘরের কাজ করতে গেলে চোখে-মুখে তাপ লাগবেই। আর এই তাপ ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। তাই রান্নাঘরে ঢোকার আগে মুখে গলায় হাতে ভালভাবে ময়েশ্চারাইজার মেখে নেবেন। হাতের কাছে ময়েশ্চারাইজার না থাকলে নারকেল তেলও মাখতে পারেন। রান্না হয়ে গেলে ভালভাবে গোসল করে তেল বা ময়েশ্চারাইজার তুলে ফেলবেন।

গোসলের সময় শক্ত কাপড় দিয়ে শরীর ভালভাবে ঘষে নিন। এর ফলে শুকনো ত্বক বা মরা চামড়া উঠে গিয়ে ত্বক পরিষ্কার হয়ে যাবে। এতে রক্তসঞ্চালন দ্রুত হয়ে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়বে।

যারা চাকরি করেন তারা গোসলের পর বাইরে বেরুনোর আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করবেন। মেকআপের বেস হিসেবেও এর ব্যবহার জরুরী। যারা বাড়িতে থাকেন তারা যে কোন বডি লোশন সারা শরীরে মেখে নিতে পারেন। সন্ধ্যাবেলা অফিস থেকে ফিরেই মুখটা ভালভাবে ডিপক্লেনজিং মিল্ক দিয়ে পরিষ্কার করে নেবেন। সাবান দিয়ে ধোবেন হাত-পাও। তারপর যে কোন নাইটক্রিম লাগান মুখ হাত পা এবং গলায়। শোবার আগে আবার ভিজে তুলো দিয়ে নাইট ক্রিম মুছে নেবেন। ভারি ক্রিম মুখে লাগিয়ে কখনোই শোবেন না।

আমাদের শরীরের বেশিরভাগই পানি। আর তাই প্রতিদিন বেশ খানিকটা পানি নিয়ম করে পান করা উচিত। অন্যথায় শরীরের ভেতরকার জীবাণুগুলো ভেতরেই জমে থাকবে। শরীর শুষ্ক হয়ে পড়বে। দূর্বলতা দেখা দেবে শরীরে। আর সবচাইতে বাজে প্রভাব পড়বে ত্বকে। ত্বকের নানা রকম রোগে পড়তে হবে আপনাকে। ত্বক হয়ে পড়বে নিস্তেজ। তাই ত্বককে ভালো রাখার জন্যে প্রতিদিন অন্তত ২ লিটার পানি পান করুন ( হাউ স্টাফ ওয়ার্কস )।

খুব বেশি পরিবর্তন নয়, বরং বাড়তি কিছু প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এ্যাসিডকে খাদ্যতালিকায় যোগ করে নিন। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৬ আপনাকে সাহায্য করবে। এগুলো পাওয়ার জন্যে খাদ্যতালিকায় যোগ করুন পোল্ট্রি, খাবার তেল, শস্যের মতন উপাদানগুলো। এগুলো শরীরে লিপিড দ্বারা তৈরি কোষ ঝিল্লি গড়ে উঠতে সাহায্য করে। যেটা কিনা ত্বকের জন্যে খুবই উপকারী।

সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচাতে রোদ প্রতিরোধক ক্রিম ব্যবহার করতে অবশ্যই ভুলবেননা। কারণ এটি ছোটখাটো সমস্যা থেকে শুরু করে ত্বকের ক্যান্সার অব্দি তৈরি করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন ঘরের বাইরে বেরোবার আগে মুখমন্ডলে রোদ প্রতিরোধক ক্রিম অর্থাৎ সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

ত্বক ভাল রাখার জন্য ঘুম খুব জরুরী। প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমাবেন। ঘুম যাতে ভাল হয় সেজন্য রাতের খাবার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খেয়ে নেয়া ভাল। যদি সম্ভব হয় খাওয়ার পর একটু হেঁটে আসা ভাল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ত্বকের যত্নে প্রতিদিন

আপডেট টাইম : ০১:১২:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০১৬

এই রোদ এই বৃষ্টি, এমনটাই হলো এখনকার আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্য। আবহাওয়ার এই রকমভেদ প্রভাবিত করে ত্বককে। তাই এই সময় ত্বকের যত্ন বিশেষভাবে প্রয়োজন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিন্তু আমরা জোর দেই মুখের যত্নের প্রতি চোখ, নাক, ঠোঁটের গড়নের ওপর। মাঝে মাঝে ভুলেই যাই যে এই অঙ্গগুলোকে ধারণ করে রাখে যে ত্বক সেই ত্বক যদি সুন্দর না হয় তাহলে অন্য কিছুর কোন মূল্যই নেই।

ত্বকের পরিচর্যা সমন্ধে জানার আগে জেনে নেয়া দরকার কী কী কারণে ত্বক সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ত্বকের সব থেকে বড় শত্রু কিন্তু প্রখর সূর্যরশ্মি। তাই রোদ থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকাই ভাল। শীত-গ্রীষ্ম সারা বছরই বেরোতে হলে ছাতা ও রোদ চশমা ব্যবহার করুন। শুধু রোদ নয় ধুলো-বালি, ধোঁয়াতেও ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু আপনি ঘরে তো বসে থাকতে পারবেন না। আপনাকে বের হতেই হবে কাজকর্মও করতে হবে। সব কিছু করেও আপনাকে ত্বকচর্চার জন্য একটু সময় বের করে নিতে হবে। সামান্য কিছু নিয়ম বা অভ্যাসের পরিবর্তনে কিন্তু আপনার ত্বক হয়ে উঠবে ঝলমলে। সতেজ যা নজর কাড়বে। এর জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলুন-

স্বাভাবিকভাবেই আমাদের ত্বককে সুস্থ রাখতে, ত্বকের মৃত কোষগুলোকে সরিয়ে সতেজ আর প্রাণবন্ত করে তুলতে সেটাকে পরিষ্কার করা উচিত রোজ। অনেক সময় ত্বকের জন্য উপকারী দ্রব্য বা মেক-আপের মতন প্রসাধনীগুলোই অনেকক্ষণ ধরে রেখে দিলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে ত্বক। সেই সাথে বাইরের ধুলো-ময়লা তো আছেই। আর তাই খুব ভালো করে দিনে কয়েকবার পরিষ্কার করে নিন আপনার মুখমন্ডলের ত্বক। এক্ষেত্রে অবশ্যই সাবানকে এড়িয়ে চলুন। কারণ, নাহলে সাবান আপনার ত্বককে করে দেবে কর্কশ। এছাড়াও শুষ্ক ত্বকের জন্যে অ্যালকোহল মুক্ত, ক্রিমি কোনকিছু ব্যবহার করুন। তবে যেটাই ব্যবহার করুন না কেন খেয়াল রাখবেন যাতে সেটা অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে আপনার ত্বকের ওপর থাকে।

বেশিরভাগ মেয়েদেরই অভ্যাস থাকে, ঘুম থেকে উঠে মুখে-চোখে অল্প একটু পানি দিয়ে রান্নাঘরের কাজে লেগে যাওয়া। এটা কিন্তু একেবারে ঠিক নয়। রান্নাঘরের কাজ করতে গেলে চোখে-মুখে তাপ লাগবেই। আর এই তাপ ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। তাই রান্নাঘরে ঢোকার আগে মুখে গলায় হাতে ভালভাবে ময়েশ্চারাইজার মেখে নেবেন। হাতের কাছে ময়েশ্চারাইজার না থাকলে নারকেল তেলও মাখতে পারেন। রান্না হয়ে গেলে ভালভাবে গোসল করে তেল বা ময়েশ্চারাইজার তুলে ফেলবেন।

গোসলের সময় শক্ত কাপড় দিয়ে শরীর ভালভাবে ঘষে নিন। এর ফলে শুকনো ত্বক বা মরা চামড়া উঠে গিয়ে ত্বক পরিষ্কার হয়ে যাবে। এতে রক্তসঞ্চালন দ্রুত হয়ে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়বে।

যারা চাকরি করেন তারা গোসলের পর বাইরে বেরুনোর আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করবেন। মেকআপের বেস হিসেবেও এর ব্যবহার জরুরী। যারা বাড়িতে থাকেন তারা যে কোন বডি লোশন সারা শরীরে মেখে নিতে পারেন। সন্ধ্যাবেলা অফিস থেকে ফিরেই মুখটা ভালভাবে ডিপক্লেনজিং মিল্ক দিয়ে পরিষ্কার করে নেবেন। সাবান দিয়ে ধোবেন হাত-পাও। তারপর যে কোন নাইটক্রিম লাগান মুখ হাত পা এবং গলায়। শোবার আগে আবার ভিজে তুলো দিয়ে নাইট ক্রিম মুছে নেবেন। ভারি ক্রিম মুখে লাগিয়ে কখনোই শোবেন না।

আমাদের শরীরের বেশিরভাগই পানি। আর তাই প্রতিদিন বেশ খানিকটা পানি নিয়ম করে পান করা উচিত। অন্যথায় শরীরের ভেতরকার জীবাণুগুলো ভেতরেই জমে থাকবে। শরীর শুষ্ক হয়ে পড়বে। দূর্বলতা দেখা দেবে শরীরে। আর সবচাইতে বাজে প্রভাব পড়বে ত্বকে। ত্বকের নানা রকম রোগে পড়তে হবে আপনাকে। ত্বক হয়ে পড়বে নিস্তেজ। তাই ত্বককে ভালো রাখার জন্যে প্রতিদিন অন্তত ২ লিটার পানি পান করুন ( হাউ স্টাফ ওয়ার্কস )।

খুব বেশি পরিবর্তন নয়, বরং বাড়তি কিছু প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এ্যাসিডকে খাদ্যতালিকায় যোগ করে নিন। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৬ আপনাকে সাহায্য করবে। এগুলো পাওয়ার জন্যে খাদ্যতালিকায় যোগ করুন পোল্ট্রি, খাবার তেল, শস্যের মতন উপাদানগুলো। এগুলো শরীরে লিপিড দ্বারা তৈরি কোষ ঝিল্লি গড়ে উঠতে সাহায্য করে। যেটা কিনা ত্বকের জন্যে খুবই উপকারী।

সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচাতে রোদ প্রতিরোধক ক্রিম ব্যবহার করতে অবশ্যই ভুলবেননা। কারণ এটি ছোটখাটো সমস্যা থেকে শুরু করে ত্বকের ক্যান্সার অব্দি তৈরি করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন ঘরের বাইরে বেরোবার আগে মুখমন্ডলে রোদ প্রতিরোধক ক্রিম অর্থাৎ সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

ত্বক ভাল রাখার জন্য ঘুম খুব জরুরী। প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমাবেন। ঘুম যাতে ভাল হয় সেজন্য রাতের খাবার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খেয়ে নেয়া ভাল। যদি সম্ভব হয় খাওয়ার পর একটু হেঁটে আসা ভাল।