গাজীপুরের শ্রীপুরে আব্দুল্লাহ (২৬) নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (৯ মার্চ) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ্ জামান। এর আগে একইদিন বিকেলে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের বাঁশবাড়ী গ্রামের বাঁশবাড়ী বাজারে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত যুবক আব্দুল্লাহ উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের বাঁশবাড়ী গ্রামের মো. শাহাদাত আলীর ছেলে। তিনি ইউরিনিট নামক একটি স্পিনিং কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
ওসি বলেন, হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ছুরিকাঘাতে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে সেখান থেকে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শহিদুল ইসলাম বলেন, শনিবার বিকেলে স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান চলাকালে এক দফা ধস্তাধস্তি হয়। এরপর লোকজন তাদের দুজনকে দুই দিকে সরিয়ে দিয়ে ঝামেলা মীমাংসা করে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর শহীদ (৪৫) ও ছেলে এহসান (১৮) আব্দুল্লাহকে জোরপূর্বক রাস্তার পাশে তুলে নেয়। মারধরের পর ধারালো ছুরি বের করে কয়েকটি আঘাত করে। আমার ডাক-চিৎকারে খুনিরা পালিয়ে যায়। গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের মামা সাইদুল ইসলাম বলেন, আব্দুল্লাহ দুপুরের পরপরই স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান দেখতে যায়। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলাকালে অভিযুক্তরা পূর্বশত্রুতার জেরে কয়েকজন এসে তাকে ধরে নিয়ে রাস্তায় পাশে নিয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এ সময় তার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে ছুরি দিয়ে পরপর আরও কয়েকটি আঘাত করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত শহীদের সঙ্গে নিহত আব্দুল্লাহর অর্থ লেনদেন রয়েছে। পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে এই খুনের ঘটনা।
নিহতের বাবা শাহাদাত আলী বলেন, অভিযুক্ত শহীদ জমি ক্রয় করে দেওয়ার জন্য আমার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নেয়। এরপর আমাকে চার মাস ধরে সে টালবাহানা করে ঘোরাচ্ছ। আমি চাপ সৃষ্টি করলে কয়েক দিন ধরে আমাকে এবং আব্দুল্লাহকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক নাজমুল হুদা বলেন, রক্তাক্ত যুবককে তার স্বজনেরা মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে নিয়ে আসার পূর্বেই তার মৃত্যু হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।