ঢাকা ০৬:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ময়মনসিংহে জমিদারদের ঐতিহ্য আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০১৬
  • ৫৮১ বার

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার জমিদারদের যে সকল স্থাপনা এখনো পর্যটকদের কৌতুহল জাগায় তার মধ্যে আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল (বর্তমানে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ), শশী লজ (বর্তমানে মহিলা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ) অন্যতম।

আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল লোহার কুঠি বলে পরিচিত। বাড়িটি তৈরি করতে লোহার পরিমাণ বেশি লাগায় এই নামকরণ।

১৮৭৯ সালে ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে এ জমিতে নির্মাণ করা হয় বাংলো আদলের সুরম্য বাগানবাড়ি লোহার কুঠি বা ‘আলেকজান্দ্রার ক্যাসেল’। মহাত্মা গান্ধী, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহসহ অনেক জমিদার ও রাজপরিবারের সদস্যরা আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল মহারাজ শশীকান্তের আমন্ত্রণে ময়মনসিংহ আসেন। পৃথিবী বিখ্যাত বহু ব্যক্তি এই বাড়িতে রাত কাটিয়েছেন। কিন্তু পরে রবীন্দ্রনাথ স্মৃতি বিজড়িত এ ক্যাসেলের শ্বেত পাথরগুলো একে একে খোয়া যায়।

স্মৃতির সঙ্গে এই প্রতারণাপূর্ণ বুদ্ধি মানুষকে ব্যথিত করে। এই ব্যথা পেরিয়ে সামনে কিছু দূরেই বিরাট প্রাচীর ঘেরা ফটক। ফটক পেরুলেই ফোয়ারা। ফোয়ারার মাঝে নার্সি সাস ভঙ্গীর নারী মূর্তি। এটিই শশীলজ। আজ এই লজে নেই বিষ্ময়কর সেই মিউজিক্যাল সিঁড়ি। যা বেয়ে উঠতে গেলেই বেজে ওঠতো মধুময় সঙ্গীত।

১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে এ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ধ্বংস হয়ে যায় মিউজিক্যাল সিঁড়ি। যার জন্য শশীকান্ত ব্যয় করেছিলেন তৎকালীন ৩ লক্ষ টাকা। জানা যায়,বীরেন্দ্র কিশোর শশীকান্ত নামে পরিচিত ছিলেন। তার নির্মিত শশী লজ এখনো অনেকর মনে বিস্ময় জাগায়। তিনি রাজা থেকে মহারাজা পর্যন্ত উপাধি পেয়েছিলেন।

বাংলা ১৯২০ সালে বাংলার গভর্নর রোনাল্ড তাকে মহারাজা উপাধি দেন। তিনি ছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। এ বংশের জমিদারদের জন্যই ময়মনসিংহ শহর জমিদারদের শহর বলে পরিচিত। ময়মনসিংহে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছিলেন মহারাজ শশী কান্তের আমন্ত্রণে। ১৯২৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি কবি ময়মনসিংহে আসেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অবস্থান করেন। কবি গুরু সূর্যকান্তের বাগান বড়ি আলেকজান্দ্রা ক্যাসেলে অবস্থান গ্রহণ করেন। কবি গুরুর ময়মনসিংহে আগমন ময়মনসিংহবাসীর জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ময়মনসিংহে জমিদারদের ঐতিহ্য আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল

আপডেট টাইম : ১২:০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০১৬

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার জমিদারদের যে সকল স্থাপনা এখনো পর্যটকদের কৌতুহল জাগায় তার মধ্যে আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল (বর্তমানে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ), শশী লজ (বর্তমানে মহিলা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ) অন্যতম।

আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল লোহার কুঠি বলে পরিচিত। বাড়িটি তৈরি করতে লোহার পরিমাণ বেশি লাগায় এই নামকরণ।

১৮৭৯ সালে ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে এ জমিতে নির্মাণ করা হয় বাংলো আদলের সুরম্য বাগানবাড়ি লোহার কুঠি বা ‘আলেকজান্দ্রার ক্যাসেল’। মহাত্মা গান্ধী, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহসহ অনেক জমিদার ও রাজপরিবারের সদস্যরা আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল মহারাজ শশীকান্তের আমন্ত্রণে ময়মনসিংহ আসেন। পৃথিবী বিখ্যাত বহু ব্যক্তি এই বাড়িতে রাত কাটিয়েছেন। কিন্তু পরে রবীন্দ্রনাথ স্মৃতি বিজড়িত এ ক্যাসেলের শ্বেত পাথরগুলো একে একে খোয়া যায়।

স্মৃতির সঙ্গে এই প্রতারণাপূর্ণ বুদ্ধি মানুষকে ব্যথিত করে। এই ব্যথা পেরিয়ে সামনে কিছু দূরেই বিরাট প্রাচীর ঘেরা ফটক। ফটক পেরুলেই ফোয়ারা। ফোয়ারার মাঝে নার্সি সাস ভঙ্গীর নারী মূর্তি। এটিই শশীলজ। আজ এই লজে নেই বিষ্ময়কর সেই মিউজিক্যাল সিঁড়ি। যা বেয়ে উঠতে গেলেই বেজে ওঠতো মধুময় সঙ্গীত।

১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে এ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ধ্বংস হয়ে যায় মিউজিক্যাল সিঁড়ি। যার জন্য শশীকান্ত ব্যয় করেছিলেন তৎকালীন ৩ লক্ষ টাকা। জানা যায়,বীরেন্দ্র কিশোর শশীকান্ত নামে পরিচিত ছিলেন। তার নির্মিত শশী লজ এখনো অনেকর মনে বিস্ময় জাগায়। তিনি রাজা থেকে মহারাজা পর্যন্ত উপাধি পেয়েছিলেন।

বাংলা ১৯২০ সালে বাংলার গভর্নর রোনাল্ড তাকে মহারাজা উপাধি দেন। তিনি ছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। এ বংশের জমিদারদের জন্যই ময়মনসিংহ শহর জমিদারদের শহর বলে পরিচিত। ময়মনসিংহে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছিলেন মহারাজ শশী কান্তের আমন্ত্রণে। ১৯২৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি কবি ময়মনসিংহে আসেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অবস্থান করেন। কবি গুরু সূর্যকান্তের বাগান বড়ি আলেকজান্দ্রা ক্যাসেলে অবস্থান গ্রহণ করেন। কবি গুরুর ময়মনসিংহে আগমন ময়মনসিংহবাসীর জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়।