গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্ট ২০২৪ অনুসারে, হেরফের করা তথ্য এবং মিথ্যা তথ্য এখন বিশ্বের সবচেয়ে গুরুতর স্বল্পমেয়াদি ঝুঁকি। আগামী দুই বছরে ভুল তথ্য এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।এদিকে সারা বিশ্বে এ বছর প্রায় তিন বিলিয়ন মানুষ নির্বাচনে অংশ নেবেন।
গণতন্ত্র এবং সামাজিক সংহতির জন্য হুমকির বাইরে এআইয়ের সম্ভাব্য নেতিবাচক দিকগুলো গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্ট ২০২৪-এ আরেকটি ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
রিপোর্টে স্বল্পমেয়াদি হিসেবে এআই সম্পর্কিত ঝুঁকিগুলো তীব্রতার দিক থেকে ২৯তম স্থানে রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি হিসেবে এটি দ্রুত এগিয়েছে এবং সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে এআই সংযুক্ত হওয়ায় র্যাংকিংয়ে হুমকিটি ছয় নম্বরে উঠে গেছে। মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর পাশাপাশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ব্যাপন চাকরি হারানো, সামরিক ব্যবহারের জন্য এআইয়ের অস্ত্রায়ন, সাইবার আক্রমণে এআইয়ের অপরাধমূলক ব্যবহার এবং ব্যবসায়িক ও জাতি-রাষ্ট্রের ব্যবহৃত এইআই সিস্টেমে অন্তর্নিহিত পক্ষপাত।
নিয়ন্ত্রণের জন্য সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এআই সম্পর্কিত আরো ঝুঁকি উদ্ভূত হয়। কারণ এ পর্যন্ত এআইয়ের সম্ভাব্য ফলাফল সম্পর্কে অনিশ্চয়তার মুখে সতর্কতার চেয়ে উদ্ভাবনকে সমর্থন করা হয়েছে।
৩. কেন্দ্রীভূত প্রযুক্তিগত শক্তি
বেসামরিক এবং সামরিক ক্ষেত্রে অগণিত সম্ভাব্য অ্যাপ্লিকেশনসহ এআই মানুষের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রযুক্তি হিসেবে দ্রুত আবির্ভূত হচ্ছে। এ ধরনের একটি শক্তিশালী ও রূপান্তরকারী প্রযুক্তি কিভাবে তৈরি হচ্ছে, তার প্রকৃতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্ট ২০২৪-এ বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী সমন্বিত সরবরাহ শৃঙ্খলে কয়েকটি কম্পানি এবং দেশের পক্ষে এআই প্রযুক্তির উৎপাদন অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত ও অনন্য। এতে সরবরাহ শৃঙ্খল উল্লেখযোগ্যভাবে ঝুঁকিতে পড়বে, যা আগামী দশকে দৃশ্যমান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই ঝুঁকিগুলোর মধ্যে রয়েছে এআই উন্নয়নে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া, মুদ্রাস্ফীতির কারণে খনিজ, সেমিকন্ডাক্টরসহ বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং মুনাফা বাড়ানোর জন্য প্রতিযোগিতাবিরোধী অনুশীলন।
রিপোর্ট অনুসারে, ইইউ ইতিমধ্যে এআইয়ের উন্নয়নে ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ‘ডিজিটাল গেটকিপারদের’ ক্ষমতার লাগাম টেনে ধরতে প্রবিধান বিবেচনা করছে।
সন্দেহ নেই যে এআই স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং বিনোদনের মতো বৈচিত্র্যময় ক্ষেত্রে মানুষের অভিজ্ঞতা বাড়ানোর বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করে। কিন্তু গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্ট ২০২৪ দৃষ্টিগোচর করেছে, এই উদীয়মান প্রযুক্তি নতুন ঝুঁকি তৈরি করছে। এটি যদি সাবধানে পরিচালনা না করা হয়, তাহলে এটি এমন কিছু বড় হুমকির কারণ হতে পারে, যা আগামী দশকগুলোতে মানবজাতির মুখোমুখি হতে পারে।