ফিলিস্তিনির মুক্তিকামী সংগঠন হামাসকে নির্মূলে গাজায় গেল এক মাসে আড়াই হাজারেরও বেশি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রতিরক্ষাবাহিনী- আইডিএফের তথ্য বলছে, এসব হামলায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডারসহ হামাসের ৫৫ সদস্য। এর বিপরীতে প্রাণ দিতে হয়েছে ৪ হাজার শিশুসহ সাড়ে ১০ হাজারেরও বেশি নিরীহ ফিলিস্তিনিকে। ব্যস্তুচ্যুত ১৩ লাখ মানুষ। ইসরাইলি গোলা থেকে বাদ যায়নি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল।
হামাসকে চিরতরে নির্মূল করতে গেল ৭ অক্টোবর গাজায় প্রথমে বিমান হামলা, এরপর স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলী বাহিনী। আইডিএফ বলছে, প্রায় এক মাসে আড়াই হাজারের বেশি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে তারা।
প্রশ্ন উঠেছে- এ পর্যন্ত কতোজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করতে পেরেছে ইসরায়েল? প্রেস ব্রিফিংসহ এক্সে দেয়া পোস্টে-এখন পর্যন্ত হামাসের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডারের নাম-ছবি প্রকাশ করেছে আইডিএফ। নিহতের তালিকায় রয়েছে মাত্র ৫৫ হামাস সদস্যের নাম।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের তথ্য মতে, গাজায় হামাস সদস্য ৫০ হাজারেরও বেশি। এরমধ্যে শীর্ষ নেতাদের বেশিরভাগই গাজার বাইরে থাকেন, এমনকি হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয়ও বাইরে।
এ অবস্থায় ইসরায়েলী হামলায় এ পর্যন্ত নিহত সাড়ে ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রায় সবাই বেসামরিক নাগরিক। শিশুই ৪ হাজারের বেশি, নারী আড়াই হাজার।
আইডিএফ বলছে, সব হামলাই হামাসের স্থাপনা লক্ষ্য করে চালাচ্ছে তারা। তবে বাস্তব চিত্র কি? জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা বলছে, এ পর্যন্ত ইসরায়েলী হামলায় বিধ্বস্ত ৪০ হাজারের বেশি আবাসিক ভবন, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি। বাস্তুচ্যুত ১৩ লাখের বেশি।
ইউনিসেফ বলছে, বিধ্বস্ত স্কুলের সংখ্যা ২৫৮টি, যা গাজার মোট স্কুলের অর্ধেকেরও বেশি। এসব স্কুলের বেশিরভাগই ব্যবহৃত হচ্ছিল আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে। বর্তমানে শিক্ষা বঞ্চিত ৬ লাখের বেশি শিশু।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, এক মাসে বিধ্বস্ত ১০২টি হাসপাতাল, যেখানে নিহত ৫ শতাধিক মানুষ। বাকি ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে ১৪টি বিদ্যুৎ সংকটে বন্ধ, ১৩টিকে খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল।
স্কুল-হাসপাতাল, আবাসিক ভবন ছাড়াও গির্জা, মসজিদ ও শরণার্থী ক্যাম্পও বিমান হামলা থেকে রেহাই পায়নি। প্রতিটি হামলায় বেসামরিক মানুষের প্রাণ ঝরেছে।