হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণেই মূল্যস্ফীতি কমানো, তথা বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। একদিকে, পণ্যের বার বার হাতবদল হচ্ছে; সক্রিয় চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেটও। বাজারের এসব অব্যবস্থাপনা দূর করতে পারলেই সুফল মিলবে বলছেন তারা।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, প্রতি কেজি বেগুনের উৎপাদন খরচ ১০ টাকার কিছু বেশি। কিন্তু রাজধানীর খুচরা বাজারে সেই বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬-৭ গুণ বেশি দামে। প্রায় একই চিত্র অন্যান্য সবজির ক্ষেত্রেও। কৃষক থেকে ভোক্তার হাত পর্যন্ত পৌঁছাতেই দাম বেড়ে যাচ্ছে কয়েক গুন।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাষী থেকে ভোক্তা পর্যন্ত কৃষিপণ্য পৌঁছাতে সাধারণত আড়ৎ, পাইকার ও খুচরা বিক্রেতার অংশগ্রহণ থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে একটি পণ্য এর চেয়েও বেশি হাতবদল হয়। তার ওপর রয়েছে পণ্যবাহী পরিবহন এবং বিক্রয় স্থলকেন্দ্রিক কয়েক ধাপ চাঁদাবাজি।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সভাপতি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, “সবমিলে ১২-১৫শ’ টাকার সবজি নিয়ে বসে, তার দোকানের ভাড়া দিতে হয় ৩শ’ টাকা। ভ্যানে নিতে লাগে ৭-৮শ’ টাকা। আবার চাঁদাবাজি আছে। দিন শেষে সবকিছু ওই পণ্যের উপর পরে।”
এদিকে, আমদানি পণ্যের বাজারেও নেই পূর্ণপ্রতিযোগিতা। সেখানেও সিন্ডিকেট করার অভিযোগ আছে।
মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, “সরকারকে অথবা সেই সংস্থাকে খেয়াল রাখতে হবে যে কখন আমদানিটা করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি যদি করতে না পারে তাহলে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবেনা।”
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ক্যাব বলছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যেসব অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন ছিল তা নেয়া হয়নি। এর ফলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, “মুদ্রা সরবরাহ, সুদ নীতি, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার ইত্যাদি। যদি মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে মুদ্রাস্ফীতির কমে আসার সম্ভাবনা খুব কম।”
নির্বাচনের আগে সরকার বড় কোনো নীতি সংস্কারের চিন্তা না করার সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেন এই বাজার বিশ্লেষক।