হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েল নতুন ধরনের মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেছেন, ইসরায়েলের চলমান হামলায় মানুষজন যে ধরনের ক্ষত ও জখমের শিকার হচ্ছেন, তা তিনি আগে কখনও দেখেননি।
আল জাজিরাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে আবু সালমিয়া আরও বলেছেন, চলমান যুদ্ধে মানুষজনের ঘায়েল হওয়ার ধরনটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের। এটি গাজার জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল ‘নতুন মারাত্মক অস্ত্র’ ব্যবহার করার ফল।
কিছুদিন আগেই গাজায় হামলায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সাদা ফসফরাস ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। গাজার ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) নিষিদ্ধ সাদা ফসফরাস ব্যবহারের প্রমাণ মেলার দাবি করেছিল যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যানুসারে, গাজা উপত্যকায় গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বিমানের নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৯১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অবরুদ্ধ অঞ্চলটির বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। নিহত ৫ হাজার ৭৯১ জনের মধ্যে শিশুর সংখ্যা হলো ২ হাজার ৩৬০ জন। অর্থাৎ ইসরায়েলের হামলায় যেসব ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন তার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু।
ইসরায়েল বলছে, হামাসকে নির্মূল করতেই তারা হামলা চালাচ্ছে। তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে উল্টোটা। গাজায় হামলা চালানোর ক্ষেত্রে কোনো বাছবিচার করছে না তারা। অবিরাম বোমাবর্ষণে নিমেষে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে আবাসিক ভবন, শরণার্থীশিবির, মসজিদ, গির্জা, হাসপাতালসহ নানা অবকাঠামো।
এছাড়া গত ৯ অক্টোবর থেকে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধও আরোপ করেছে ইসরায়েল। তাদের অবরোধের কারণে গাজায় খাদ্য, পানি ও জ্বালানির মতো অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন উপত্যকাটির ২৩ লাখ বাসিন্দা। তবে আন্তর্জাতিক চাপে গত শনিবার থেকে স্বল্প পরিমাণ ত্রাণ পৌঁছানো শুরু হয়েছে গাজায়। শনি থেকে সোমবার পর্যন্ত মিসর থেকে রাফাহ ক্রসিং হয়ে মাত্র ৫৪ ট্রাক ত্রাণসামগ্রী গাজায় পৌঁছেছে। সংঘাত শুরুর আগে এক দিনেই গড়ে ৪৫০ ট্রাক ত্রাণ পেতেন গাজাবাসী। গাজায় বর্তমানে প্রবেশ করা ত্রাণের পরিমাণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।