২০৩০ সালে চাঁদে বাস করবে মানুষ!

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চাঁদে দীর্ঘ সময় বসবাসের জন্য একটি জ্বালানির উৎস তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে বসবাস করতে পারবে মানুষ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আর্টেমিস প্রোগ্রাম ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে এই আউটপোস্ট নির্মাণে আশাবাদী। ইতোমধ্যে তার জন্য পরমাণু জ্বালানি ডিজাইন করে ফেলেছেন বাঙ্গোর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। এগুলোর আকৃতি হবে পোস্তদানার মতো। এর মাধ্যমে চাঁদে জ্বালানি সরবরাহ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের সদস্য অধ্যাপক সাইমন মিডেলবার্গ বলেন, কাজটি খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল, কিন্তু দারুণ মজারও ছিল।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চাঁদে নভোচারীদের এই বসবাসকে মঙ্গলগ্রহের জন্য পরীক্ষামূলক বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। মঙ্গলগ্রহে আধুনিক প্রযুক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। তাই সেখানও গবেষণার জন্য ঘাঁটি গড়তে চান বিজ্ঞানীরা।

রোলস রয়েস, নাসা, যুক্তরাজ্যের মহাকাশ সংস্থার সঙ্গে কাজ করে বাঙ্গোরের গবেষক দল। বাঙ্গোর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ফিউচার ইনস্টিটিউটের গবেষণাগারে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে বিবিসি। সেটি পরিদর্শন শেষে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, চাঁদের কিছু অংশে তাপমাত্রা মাইনাস ২৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত আছে। কারণ সেখানে উষ্ণ থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। বাঙ্গোর বিশ্ববিদ্যালয়ের দলটি জ্বালানি তৈরি ও জীবনধারনের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে।

অধ্যাপক মিডেলবার্গ আশা করছেন আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পরমাণু জ্বালানি পুরোপুরি পরীক্ষা করা সম্ভব হবে।

গবেষকরা ইতোমধ্যে পরমাণু জ্বালানি সেলগুলো পরীক্ষার জন্য সহযোগীদের কাছে পাঠিয়েছে। রোলস রয়েসের তৈরি মাইক্রো পরমাণু জেনারেটরে এই সেল পরীক্ষা করা হতে পারে। অধ্যাপক মিডেবার্গ বলেন, তাদের এই জেনারেটরের আকৃতি ছোট একটি গাড়ির সমান। এটি বহনযোগ্য। তাই চাইলে রকেটের সঙ্গে এই জেনারেটর যুক্ত করা যেতে পারে।

মহাকাশে যেসব যান পাঠানো হয়, সেগুলোতে পরীক্ষা করার পরই বোঝা যাবে ২০৩০ সালে চাঁদের ঘাঁটি জন্য সেলটি প্রস্তুত কি না। মিডেলবার্গ বলেন, ‘আপনি যদি এগুলো মহাকাশেও পাঠান, ঠিকঠাক কাজ করবে, এমনকি চাঁদে পাঠালেও।’

গত ২৩ আগস্ট প্রথম কোনো দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে ভারতের চন্দ্রযান। তাদের লক্ষ্য ছিল অনাবিস্কৃত চন্দ্রপৃষ্ঠে পানির সন্ধান। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি সম্ভব হলে ভবিষ্যতে চাঁদে বসবাসের পরিকল্পনা করতে পারবে মানবজাতি।

সাংবাদিক ও ভূরাজনীতি বিশেষজ্ঞ টিম মার্শাল বলেছেন, পরমাণু জ্বালানির আবিষ্কার মানবজাতির জন্য আরেকটি মাইলফলক হবে। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে ২০৩০ এর দশকে চাঁদে মানুষ বাস করতেত পারবে। হয়তো যুক্তরাষ্ট, হয়তো চীন। কেউ করবেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘চীন ২০২৮ সালকে লক্ষ্য করে কাজ করছে। হয়তো প্রথমে তারা যাবে। তবে আমার বিশ্বাস ২০৩০ এর দশকে দুই দেশই সেখানে ঘাঁটি গড়তে পারবে।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর