অভিনয়ের ব্যস্ততা না থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সরব থাকেন ঢাকাই চলচিত্রের জায়েদ খান। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে নেটদুনিয়ায় আলোচনায় থাকেন তিনি। এবার ‘জাতিসংঘের পুরস্কার’ পাওয়ার খবর নিয়ে আলোচনায় এসেছেন। যদিও আলোচিত এই খবরটি অসত্য বলে জানিয়েছে সমসাময়িক আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করা পোর্টাল ব্লিটজ।
গতকাল শুক্রবার হঠাৎ ফেসবুকে আলোচনার মধ্যমণি হয়ে ওঠেন জায়েদ খান। খবর পাওয়া যায়, তিনি আমেরিকায় জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠান ‘ইনস্টিটিউট অব পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি রিসার্চ’ থেকে একটি পুরস্কার পেয়েছেন। জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকেই এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। দেশের প্রথম সারির পোর্টালগুলো ছাড়াও নানা অখ্যাত মাধ্যমেও খবরটি বেশ ফলাও করে ছাপাও হয়। তবে বিষয়টি নিয়ে যাচাই-বাছাই শুরু করে সমসাময়িক আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করা পোর্টাল ব্লিটজ। বিষয়টি জানতে জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করে এই মাধ্যমটি।
এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে ব্লিটজ জানায়, জায়েদ খানকে পুরস্কার দেওয়া ‘ইনস্টিটিউট অব পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি রিসার্চ’ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে জাতিসংঘের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মূলত জাতিসংঘের একটি হলরুম ভাড়া করে বিভিন্নজনকে পুরস্কৃত করে এই প্রতিষ্ঠানটি। কিছু পেশাদার ব্যক্তির উদ্যোগে ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এই সংগঠনটির নামে একটি ডোমেইন কিনে পরে ওয়েবসাইট চালু করা হয়। যাত্রা শুরুর পর থেকেই বিপুলসংখ্যক মানুষকে ‘আজীবন সম্মাননা’ পুরস্কার দিয়েছেন আয়োজকেরা। পুরস্কারের তালিকায় অনেক বড় বড় ব্যক্তিও রয়েছেন। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নাম রয়েছে এই তালিকায়। তবে এই পুরস্কারের বিষয়ে হোয়াইট হাউস থেকেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যমতে, নিউইয়র্কে একটি অফিস ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির সুইজারল্যান্ড এবং লুক্সেমবার্গেও অফিস রয়েছে। যদিও সুইজারল্যান্ড ও লুক্সেমবার্গের অফিসের কোনো সুনির্দিষ্ট ঠিকানা প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখ করতে পারেনি।
২০২২ সালে ওয়েবসাইট চালু হলেও প্রতিষ্ঠানটি দাবি করে ২০১৭ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কার্লোস ম্যানুয়েল প্যারেজ গঞ্জালেস নামে এক ব্যক্তি এই প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট এবং ড. অ্যান্ড্রিজ বেস নামে আরেকজন এটির প্রতিষ্ঠাতা। আন্তর্জাতিক পরিচালক হিসেবে নাম উল্লেখ আছে ফ্রেডেরিক অর্ডিন্স নামে একজনের।
বিষয়টির অনুসন্ধান করতে গেলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র ব্লিটজকে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের নামসর্বস্ব অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলো মূলত আফ্রো-আমেরিকানরা পরিচালনা করেন। মূলত অর্থের বিনিময়ে সম্মাননা দিয়ে তারা আয় করেন। আর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতেই তাঁরা জো বাইডেনের মতো বড় বড় ব্যক্তিদের নামও পুরস্কারের তালিকায় যুক্ত করেন।