ঢাকা ১০:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওরে ভাসছে সরকারি পাম্প

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৩১:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুন ২০১৫
  • ৩৮৩ বার

কথায় আছে, ‘সরকারি মাল দরিয়ায় ঢাল।’ কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলা বিএডিসির ভাসমান তিনটি সেচ পাম্পের ক্ষেত্রে কথাটি শতভাগ সত্য। এক মাসের বেশি সময় ধরে হাওরের পানিতে বেওয়ারিশভাবে ভাসছে বিএডিসির প্রায় দেড় কোটি টাকা দামের তিনটি সেচ পাম্প। এসব পাম্প বা বোট বিএডিসি কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধান ও সংরক্ষণের কথা। কিন্তু ১৫০ থেকে ২০০ কিলোমিটার নৌপথ পাড়ি দিয়ে পাম্পগুলো ভাটি অঞ্চলে ভেসে বেড়ালেও কর্তৃপক্ষ এসব পাম্প উদ্ধার কিংবা সংরক্ষণে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। এতে পাম্পগুলো যেকোনো সময় চুরি হয়ে যেতে পারে।

জানা গেছে, হবিগঞ্জ জেলা বিএডিসির আজমিরীগঞ্জ ইউনিটের ২৫ কিউসেক ক্ষমতার একটি ভাসমান সেচপাম্প প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ভাসার পর কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের মাইজচর গ্রামের কাছে ঘোড়াউত্রা নদীর চরায় আটকে যায়। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ জেলা বিএডিসির মিঠামইন ইউনিটের ২৫ কিউসেক ক্ষমতার একটি ভাসমান সেচপাম্প আটকে আছে মিঠামইনের ঢাকী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের কাছে। সাড়ে ১২ কিউসেক ক্ষমতার আরেকটি পাম্প আটকা পড়েছে নিকলীর ছাতিরচর গ্রামের কাছে।

এ ব্যাপারে বিএডিসির মিঠামইন ইউনিটের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. ফরিদুজ্জামান জানান, মিঠামইনের হাটুরিয়া নদীর পানি সেচের জন্য দুটি প্রকল্পের আওতায় দুটি সেচপাম্প গত বোরো মৌসুমে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। শর্ত অনুযায়ী প্রকল্পের ব্যবস্থাপকরা পাম্পগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করায় সেগুলো স্রোতের টানে ভেসে গেছে। তবে নদীতে ভেসে যাওয়ার খবর পেয়ে পাম্প দুটি আটকে রাখা হয়েছে। হাওরের পানি বাড়লে যথাস্থানে এগুলো নিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ইউনিটের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহিনী মোহন ত্রিবেদী জানান, তাঁদের পাম্পটি আজমিরীগঞ্জের কাকাইলছেঁও ইউনিয়নের বছিরা নদীর পাড়ে বাঁধা ছিল। প্রবল স্রোতের টানে দুই সপ্তাহ আগে পাম্পটি ভেসে গিয়ে মিঠামইনে আটকা পড়ে। সেখান থেকে বাজিতপুরের চরে গিয়ে আটকে যায়। পাম্পটির পেছনে এরই মধ্যে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দ্রুতই পাম্পটি নেওয়ার জন্য লোক পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষকরা জানান, ছোট সেচ পাম্পগুলো বিএডিসির সংশ্লিষ্ট গুদামে সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকায় তাঁরা সেচ মৌসুম শেষে সেগুলো ফিরিয়ে দেন। কিন্তু ভাসমান বড় সেচ পাম্পগুলো বিএডিসি কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে না নিয়ে পরের বছর ভাড়া দেওয়ার আগ পর্যন্ত সেচ প্রকল্পের আওতায় ফেলে রাখে। কৃষকরা জরুরিভিত্তিতে পাম্পগুলো উদ্ধার করে যথাযথভাবে সংরক্ষণের দাবি জানান।

বিএডিসি কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী শীবেন্দ্র নারায়ণ গোপ জানান, প্রবল ঝড় বা স্রোতের কারণে ভাসমান সেচপাম্প ভেসে যেতে পারে। এ তিনটি সেচপাম্পের ক্ষেত্রেও এমনটিই হয়েছে। ভেসে যাওয়া সেচপাম্পগুলো দ্রুত বিএডিসির তত্ত্বাবধানে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।

নিকলী থানার ওসি মাহাবুব আলম জানান, এলাকার এক কৃষকের কাছ থেকে বিএডিসির পাম্প নদীতে ভেসে যাওয়ার খবর পেয়ে ছাতিরচর ইউনিয়নের এক চৌকিদারকে সেটি আটক করতে বলেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হাওরে ভাসছে সরকারি পাম্প

আপডেট টাইম : ০৩:৩১:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুন ২০১৫

কথায় আছে, ‘সরকারি মাল দরিয়ায় ঢাল।’ কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলা বিএডিসির ভাসমান তিনটি সেচ পাম্পের ক্ষেত্রে কথাটি শতভাগ সত্য। এক মাসের বেশি সময় ধরে হাওরের পানিতে বেওয়ারিশভাবে ভাসছে বিএডিসির প্রায় দেড় কোটি টাকা দামের তিনটি সেচ পাম্প। এসব পাম্প বা বোট বিএডিসি কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধান ও সংরক্ষণের কথা। কিন্তু ১৫০ থেকে ২০০ কিলোমিটার নৌপথ পাড়ি দিয়ে পাম্পগুলো ভাটি অঞ্চলে ভেসে বেড়ালেও কর্তৃপক্ষ এসব পাম্প উদ্ধার কিংবা সংরক্ষণে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। এতে পাম্পগুলো যেকোনো সময় চুরি হয়ে যেতে পারে।

জানা গেছে, হবিগঞ্জ জেলা বিএডিসির আজমিরীগঞ্জ ইউনিটের ২৫ কিউসেক ক্ষমতার একটি ভাসমান সেচপাম্প প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ভাসার পর কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের মাইজচর গ্রামের কাছে ঘোড়াউত্রা নদীর চরায় আটকে যায়। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ জেলা বিএডিসির মিঠামইন ইউনিটের ২৫ কিউসেক ক্ষমতার একটি ভাসমান সেচপাম্প আটকে আছে মিঠামইনের ঢাকী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের কাছে। সাড়ে ১২ কিউসেক ক্ষমতার আরেকটি পাম্প আটকা পড়েছে নিকলীর ছাতিরচর গ্রামের কাছে।

এ ব্যাপারে বিএডিসির মিঠামইন ইউনিটের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. ফরিদুজ্জামান জানান, মিঠামইনের হাটুরিয়া নদীর পানি সেচের জন্য দুটি প্রকল্পের আওতায় দুটি সেচপাম্প গত বোরো মৌসুমে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। শর্ত অনুযায়ী প্রকল্পের ব্যবস্থাপকরা পাম্পগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করায় সেগুলো স্রোতের টানে ভেসে গেছে। তবে নদীতে ভেসে যাওয়ার খবর পেয়ে পাম্প দুটি আটকে রাখা হয়েছে। হাওরের পানি বাড়লে যথাস্থানে এগুলো নিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ইউনিটের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহিনী মোহন ত্রিবেদী জানান, তাঁদের পাম্পটি আজমিরীগঞ্জের কাকাইলছেঁও ইউনিয়নের বছিরা নদীর পাড়ে বাঁধা ছিল। প্রবল স্রোতের টানে দুই সপ্তাহ আগে পাম্পটি ভেসে গিয়ে মিঠামইনে আটকা পড়ে। সেখান থেকে বাজিতপুরের চরে গিয়ে আটকে যায়। পাম্পটির পেছনে এরই মধ্যে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দ্রুতই পাম্পটি নেওয়ার জন্য লোক পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষকরা জানান, ছোট সেচ পাম্পগুলো বিএডিসির সংশ্লিষ্ট গুদামে সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকায় তাঁরা সেচ মৌসুম শেষে সেগুলো ফিরিয়ে দেন। কিন্তু ভাসমান বড় সেচ পাম্পগুলো বিএডিসি কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে না নিয়ে পরের বছর ভাড়া দেওয়ার আগ পর্যন্ত সেচ প্রকল্পের আওতায় ফেলে রাখে। কৃষকরা জরুরিভিত্তিতে পাম্পগুলো উদ্ধার করে যথাযথভাবে সংরক্ষণের দাবি জানান।

বিএডিসি কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী শীবেন্দ্র নারায়ণ গোপ জানান, প্রবল ঝড় বা স্রোতের কারণে ভাসমান সেচপাম্প ভেসে যেতে পারে। এ তিনটি সেচপাম্পের ক্ষেত্রেও এমনটিই হয়েছে। ভেসে যাওয়া সেচপাম্পগুলো দ্রুত বিএডিসির তত্ত্বাবধানে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।

নিকলী থানার ওসি মাহাবুব আলম জানান, এলাকার এক কৃষকের কাছ থেকে বিএডিসির পাম্প নদীতে ভেসে যাওয়ার খবর পেয়ে ছাতিরচর ইউনিয়নের এক চৌকিদারকে সেটি আটক করতে বলেছেন।