শেষ হলো চার দিনব্যাপী নিউ ইয়র্ক বাংলা বই মেলা। ১৭ জুলাই সোমবার মেলার শেষ দিনে জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্ট সেন্টার ছিল লোকে লোকারণ্য। পুরো দিনের কর্মসূচিতে শিশু-কিশোরদের প্রাধান্য ছিল। ৩২তম এই আসরে বাংলাদেশ থেকে ২৫টি প্রকাশনা সংস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্রের দশটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। আগের মেলার তুলনায় এবার বেশি স্টল ছিল। বিক্রিও হয়েছে প্রায় এক লাখ ডলার। এবার মুক্তধারা-জিএফবি সাহিত্য পুরষ্কার পেয়েছেন কবি আসাদ চৌধুরী।
সোমবার দিনটি রাখা হয়েছিল শিশু কিশোরদের জন্য। তাদের আয়োজনে এবং অংশগ্রহণে ছিল নাচ-গান, কবিতা আবৃত্তি, ছবি আঁকা। অংশগ্রহণকারী কিশোর ড্যানিয়েল সামি বলেন, এখানে এসে বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পেরে খুব ভালো লাগছে। অনেক নতুন বন্ধু পেয়েছি। তাদের সঙ্গে গান কবিতা আবৃত্তিতে অংশ নিয়ে সবার সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। এখানে একটি ভিন্ন জগৎ পেয়েছি।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও, কলকাতা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও লন্ডন থেকে লেখক-পাঠকরা যোগ দিয়েছেন মেলায়। চারদিনের এই মেলা হয়ে উঠেছিল বিশ্ব বাঙালির মিলন মেলা। এ ধরনের একটা আয়োজন করতে পেরে আয়োজকরা খুশি। ৩২তম নিউ ইয়র্ক বাংলা বইমেলার আহবায়ক ড. আব্দুন নূর বলেন, ৪ দিন সবাই মিলে একটি পরিবারের মত ছিলাম । যারা এসেছেন মেলায় বেশিরভাগই পরিবার নিয়েও এসেছিলেন। এ মিলন মেলা ভেঙে যাওয়ায় খারাপ লাগছে । একই সঙ্গে ভালো লাগছে মেলাটি সুন্দর ও সুচারুরূপে সম্পন্ন হয়েছে বলে।
এবার মুক্তধারা-জিএফবি সাহিত্য পুরষ্কার পেয়েছেন কবি আসাদ চৌধুরী। মেলার ৩য় দিন-রোববার সন্ধ্যায় কবি আসাদ চৌধুরীর পক্ষে ক্রেস্ট ও তিন হাজার ডলার প্রাইজমানি গ্রহণ করেন তাঁর সহধর্মিনী সাহানা চৌধুরী ও কন্যা নুসরাত জাহান চৌধুরী। পুরস্কারটি তুলে দেন জিএফবি গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক ভূঁইয়া । বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা সংস্থা থেকে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা শ্রেষ্ঠ প্রকাশনা’ পুরস্কার পেয়েছে নালন্দা ও কথাপ্রকাশ। এটি তুলে দেন সমাজসেবী ডাক্তার জিয়াউদ্দিন আহমেদ।
এবারের বইমেলায় বাংলাদেশের ২৫টি প্রকাশনা সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের দশটি প্রতিষ্ঠান স্টল নেয়। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত সাহা বলেন, চারদিনের বইমেলায় প্রায় এক লাখ ডলার বিক্রি হয়েছে। এরই মধ্যে অনেক দর্শনার্থী আমাদের অনুরোধ করেছেন মেলার সময় বাড়ানোর। আগামীতে সপ্তাহব্যাপী বইমেলা করা যায় কিনা সে বিষয়ে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন কমিটি চিন্তাভাবনা করছে।
মেলা প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীরা নিজেদের মতো করে গেয়েছেন গান। হয়েছে প্রতিবাদ অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের গাইবান্ধা স্টেডিয়াম সংলগ্ন রাষ্ট্র্রস্বীকৃত জেলার প্রধান বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবিতে ‘নিউইয়র্ক প্রবাসী গাইবান্ধাবাসী’র আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে বইমেলা প্রাঙ্গণে। বই বিক্রির পাশাপাশি মেলার সমরেশ মজুমদার মঞ্চে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক, কবিতা আবৃত্তি, সেমিনার, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ।