নাশকতার দুই মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক নেতা মামুনুল হককে জামিন না দিয়ে তার দুটি আবেদনই ফিরিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তবে আবেদন নিয়ে এখতিয়ারসম্পন্ন অন্য বেঞ্চে যাবেন বলে জানিয়েছেন মামুনুল হকের আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা।
সাংবাদিকদের এ আইনজীবী বলেন, ‘হাইকোর্টের এই বেঞ্চ তাকে জামিন দিতে অনিচ্ছুক। তাই তার আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমরা অন্য বেঞ্চে এ আবেদন নিয়ে যাব।’
এ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।
২০২১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দুই দিনের বাংলাদেশ সফরে আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার এই সফরের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন ধর্মভিত্তিক কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ নিয়ে ওই বছরের ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে সংঘর্ষের জের ধরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতায় অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওই বছরের ৫ এপ্রিল পল্টন থানায় নাশকতার অভিযোগ এনে মামলা করেন খন্দকার আরিফুজ্জামান ও মো. রোম্মান শেখ। অবশ্য এ দুই মামলা হওয়ার দুই দিন আগে-অর্থাৎ ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় রিসোর্টে এক নারীকে নিয়ে অবস্থান করার সময় মামুনুল হককে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। তখন ওই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন মামুনুল।
ঘটনার ১৫ দিন পর ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ। আর রয়েল রিসোর্ট কাণ্ডের ২৭ দিন পর ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে মামলা করেন ওই নারী। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়।
রিসোর্টকাণ্ডের পর হেফাজতে ইসলামের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয় মামুনুল হককে। নাশকতা, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, নারী নির্যাতনের অভিযোগসহ মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ৪৮ মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি মামলায় তিনি জামিনে আছেন বলে জানান তার আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা।