বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের সংযমী ও অতি মুনাফা করতে নিষেধ করলেও গরু ও মুরগির দাম কমছে না। ব্রয়লার মুরগির সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না। গরুর মাংসের দামও লাগাম টানা যাচ্ছে না। তবে ডাল, ছোলা, আদা, রসুন এবং পেঁয়াজ কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
শনিবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর টাউনহল বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্ট খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এখনো ব্রয়লার মুরগির কেজি ২৬০ টাকা
মুরগির দাম বাড়তে থাকলে ভোক্তা অধিদপ্তর ফার্ম মালিক থেকে পাইকারি ও খুচরা মুরগি ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারও করে। তারপরও বাজারে তার প্রভাব নেই।
গত সপ্তাহের মতোই ব্রয়লার মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, কক ৩৬০ ও দেশি মুরগি ৬০০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। হাসেম পোলট্রি হাউজের হাসেমসহ অন্য মুরিগ ব্যবসায়ীরা ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, বেশি দামে কেনা। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সরকার, ম্যাজিস্ট্রেট শুধু আমাদের ধরে। আমরা কী বেশি দাম নিতে পারি? পাকিস্তানি মুরগির দামও ৩০ টাকা বেড়ে ৩৬০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহের মতোই গরুর মাংসও ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১০০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে মতিন মাংস বিতানের বিক্রেতা জানান। তবে মুরগির দাম বাড়লেও ডিমের দাম আগের সপ্তাহের মতো ১২০-১২৫ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে।
আগের সপ্তাহের মতোই রুই, কাতলা, ইলিশসহ প্রায় মাছই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। মাছ বিক্রেতারা জানান, রুই ও কাতলার কেজি ২৫০-৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৫০০-১২০০ টাকা কেজি, টেংরা, বোয়াল, আইড় ৫০০-৮০০ টাকা, কাচকি ৩০০-৩৫০ টাকা, শিং ৪০০-৬০০, কাজলি ও বাতাসি ৬০০ টাকা, পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া ১৫০-২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
এ ছাড়া, ইলিশের দাম বেড়ে আকারভেদে ১২০০-১৪০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আর হাফ কেজির ইলিশ ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
১০৮ টাকার চিনি ১২০
মিলমালিকরা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দাম বাড়িয়ে খোলা চিনির কেজি ১০৭ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১১২ টাকা করেছেন। তারপরও বাজারে সে দামে পাওয়া যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে মনির স্টোরের মনিরসহ অন্যান্য মুদি ব্যবসায়ীরা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আগে চিনি রাখতাম না। কারণ মিল থেকেই দিত না। আবার দিলেও দাম বেশি রাখত। কিন্তু কয়েক দিন থেকে রমজান মাস ঘনিয়ে আসায় পাওয়া যাচ্ছে চিনি। কিন্তু বেশি দামে কেনা। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তবে আগের মতোই ১ লিটার সয়াবিন তেল ১৮৫-১৮৭ টাকা, ২ লিটার ৩৭০-৩৮০ টাকা ও ৫ লিটার ৮৭০-৯০৫ টাকা, মসুর ডাল ৯৫-১৪০ টাকা কেজি, প্যাকেট আটা ২ কেজি ১৩০ টাকা ও খোলা আটার কেজি ৬০ টাকা, ময়দা ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ডালের দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে ১০০ থেকে ১৩৫ টাকা ও ছোলার দামও কেজিতে ৫ টাকা কমে ৮৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যান্য মুদি আইটেম এ সপ্তাহে বাড়েনি।
কম দামে পেঁয়াজ, আদা ও রসুন বিক্রি
অন্য জিনিসে দাম বেশি হলেও দেশে বেশি পরিমাণ উৎপাদন হওয়ায় কম দামেই পাওয়া যাচ্ছে পেঁয়াজ। প্রতি কেজি ৩০-৪০ টাকা, দেশি রসুনের কেজি ১০০ টাকা, চায়না রসুনের দামও কমে ২৪০ টাকা কেজি, দেশি আদা ১১০-১৪০ টাকা ও বিদেশি আদা ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
বেশি দামেই চাল বিক্রি
বিভিন্ন কোম্পানির বস্তার চালের কেজি ৭২ টাকায় বিক্রি করা হলেও আকিজ, রূপচাঁদা, প্রাণ, সিটি গ্রুপসহ বিভিন্ন কোম্পানির বস্তার মিনিকেট চাল ৭৫ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ওই সব কোম্পানিরই ৫ কেজি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা। চাল ব্যবসায়ীরা জানান, মোটা স্বর্ণা চাল ৪৪ থেকে ৫০ টাকা, ২৮ ও পাইজাম ৫৬ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
কমছে করলা,পটল ও ঢেঁড়সের দাম
সপ্তাহের ব্যবধানে পটল ও ঢেঁড়সের দাম কমে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। টমেটো ৩০ টাকা, আলু ২৫-৩০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২০-৪০ টাকা, লাউ ৬০ টাকা, শিমের কেজি ২৫-৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৩০ টাকা, মুলা ও পেঁপের কেজি ২০-৩০ টাকা। শসা ও গাঁজরের দাম ৩০-৪০ টাকা, লাল ও পালং শাকের আঁটি ১০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে তবে ১০০-১২০ টাকা মরিচের কেজি কমে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে সজনার কেজি ১৫০ টাকা বলে বিক্রেতারা জানান।