এএসআই হুমায়ূনকে খুন করে মডেল-অভিনেত্রী বনে যান রিয়া

শাহআলী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হুমায়ূন কবিরের হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। তাকে খুন করে নাম পাল্টে মডেল ও অভিনেত্রী বনে যান ফজিলাতুন্নেসা অধরা। নতুন নাম ধারণ করেন সুহাসিনী অধরা (২৯)। বৃহস্পতিবার রাতে মেরুল বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ার থেকে রিয়াকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৩।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব ৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

রাজধানীর মিরপুরে ২০১৩ সালে খুন হন শাহআলী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হুমায়ূন কবির। হত্যা মামলার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ এই মডেল-অভিনেত্রীর শেষ রক্ষা হয়নি। দীর্ঘদিন পর তার মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। তিনি এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জালে।

র‌্যাব জানায়, ২০১৩ সালে মিরপুরের পূর্ব মনিপুরের ১০৫০/৩ কাঁঠালতলার একটি ভবন থেকে শাহআলী থানায় কর্মরত এএসআই হুমায়ূন কবিরের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে বিষ ক্রিয়ার ইনজেকশন দিয়ে ও শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করে রিয়া ও তার বন্ধু রাফা-এ-মিষ্টি। মিষ্টি এই হত্যা মামলার দ্বিতীয় আসামি। তাকে গত বছর গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

হুমায়ূন হত্যা মামলায় মিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাইনুল ইসলাম তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
ওই তিনজন হলেন— হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের নার্স রহিমা সুলতানা রুমি, তার বন্ধু মো. রাফা এ মিষ্টি এবং রিয়া।

২০১৫ সালের ১৪ মে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করে। বিচার শেষে ২০১৭ সালের ৩০ মে রায় দেন ঢাকার চার নম্বর দ্রুত ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রহমান সরদার।

রায়ে রুমি ও মিষ্টির মৃত্যুদণ্ড হয়, রিয়ার হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। রুমি ও মিষ্টি সে সময় কারাগারে থাকলেও রিয়া মামলার শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন।

এ মামলায় এতদিন রিয়াকে খুঁজছিল পুলিশ। কথিত এই মডেল তার স্বামীসহ হুমায়ূন কবিরের বাসায় সাবলেট থাকতেন।
র‌্যাব ৩-এর অধিনায়ক জানান, ২০১৩ সালে এএসআই হুমায়ূন হত্যাকাণ্ডের পর পালিয়ে নারায়ণগঞ্জর ফতুল্লায় চলে যান ফজিলাতুন্নেসা। সেখানে গিয়ে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন।

পরে রঙিন দুনিয়ায় আসক্ত হন এ সুদর্শনী। ২০১৫ সালে নাম-পরিচয় পরিবর্তন করেন। জাল এসএসসি সার্টিফিকেট তৈরি করে ঢাকার একটি মাল্টিমিডিয়া কোম্পানির বিক্রয় কর্মী হিসেবে চাকরি শুরু করেন তিনি।

২০১৬ সাল থেকে মডেল ও অভিনেত্রী হিসেবে ছোট-বড় পর্দায় নিজের নাম লেখান। তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম ফজিলাতুন্নেসা রিয়া থেকে কৌশলে সুহাসিনী অধরা করেন। নিজেকে মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। বসবাস শুরু করেন রাজধানীর মেরুল বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর