ঢাকা ১২:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেই মীর গ্রুপ চিনি বিক্রি করছে ৫০ টাকায়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৩৪:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুন ২০১৬
  • ৩০৮ বার

জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত দেশের বড় ভোগ্যপণ্য বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বেশি দামে চিনি বিক্রি করায় বুধবার মীর গ্রুপের মালিক আব্দুস ছালাম ও ম্যানেজার জানে আলমকে ২০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেছিল। আর এতেই পাল্টে গেছে পরিস্থিতি। মীর গ্রুপ ওই দিন খাতুনগঞ্জে যে চিনি পাইকারিতে ৫৮ টাকায় বিক্রি করেছিল বৃহস্পতিবার তা-ই ৫০ টাকায় বিক্রি করছে!
ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বুধবারের অভিযান প্রসঙ্গে বলেন, মীর গ্রুপের মেসার্স হাজি মীর আহমেদ সওদাগর নামের প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে কর্ণফুলীর ওপারের এস আলম চিনি কারখানা থেকে ৪৬ টাকা ৮ পয়সায় চিনি কিনে। সেই চিনি ৫৮ টাকা ২ পয়সায় বিক্রি করছে। প্রতি কেজিতে তারা ১২ টাকা লাভ করছে। এরপর কয়েক হাত ঘুরে খুচরা বাজারে সেই চিনি বিক্রি হচ্ছিল ৬৫ টাকা। চিনি নিয়ে এ ধরনের ইচ্ছেকৃত কারসাজির অভিযোগে মীর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম ও সেলস ম্যানেজার জানে আলমকে ১০ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরে দুই টাকা লাভে চিনি বিক্রির মুচলেকা দেন তারা। এছাড়া আটক দুই কর্মচারী মফিজুল হক ও সজল সেনগুপ্তকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
তাহমিলুর রহমান আরো জানান, মীর গ্রুপ ২৬ জুন পর্যন্ত কারখানা থেকে ১০টি লটে ২০ হাজার মেট্রিকটন চিনি কিনে রেখেছে প্রতি কেজি ৪৬ টাকা ৮ পয়সা দরে। অথচ বাজারে চিনি বিক্রি করছে ৫৮ টাকা কেজি। তাদের দুটি গুদামে মজুদ আছে ১১২ টন চিনি। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে একেকটি লটে তারা ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা আয় করে। পরিবহন, গুদাম ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, ব্যাংক ঋণের সুদ ইত্যাদি বাবদ ৪০ লাখ টাকা বাদ দিলেও ২ কোটি টাকা লাভ করছে।
মীর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম জানিয়েছেন, ৫০ টাকা কেজি দরে খাতুনগঞ্জের পাইকারদের কাছে চিনি বিক্রি করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া শর্ত অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি সংরক্ষণ করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ৫ বস্তা (২৫০ কেজি) করে চিনি বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া নিয়মিত পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে গাড়ি (৩২০ বস্তা) করে চিনি।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে জেলা প্রশাসনের তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও র‌্যাবের অভিযানের একদিন পরই বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেট কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। গ্রেফতার ও জরিমানা এড়াতেই এখন ন্যায্যমূল্যে ভোগ্য পণ্য বিক্রি করছে। বাজার পরিদর্শনে এমনটা দেখা গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সেই মীর গ্রুপ চিনি বিক্রি করছে ৫০ টাকায়

আপডেট টাইম : ০৮:৩৪:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুন ২০১৬

জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত দেশের বড় ভোগ্যপণ্য বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বেশি দামে চিনি বিক্রি করায় বুধবার মীর গ্রুপের মালিক আব্দুস ছালাম ও ম্যানেজার জানে আলমকে ২০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেছিল। আর এতেই পাল্টে গেছে পরিস্থিতি। মীর গ্রুপ ওই দিন খাতুনগঞ্জে যে চিনি পাইকারিতে ৫৮ টাকায় বিক্রি করেছিল বৃহস্পতিবার তা-ই ৫০ টাকায় বিক্রি করছে!
ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বুধবারের অভিযান প্রসঙ্গে বলেন, মীর গ্রুপের মেসার্স হাজি মীর আহমেদ সওদাগর নামের প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে কর্ণফুলীর ওপারের এস আলম চিনি কারখানা থেকে ৪৬ টাকা ৮ পয়সায় চিনি কিনে। সেই চিনি ৫৮ টাকা ২ পয়সায় বিক্রি করছে। প্রতি কেজিতে তারা ১২ টাকা লাভ করছে। এরপর কয়েক হাত ঘুরে খুচরা বাজারে সেই চিনি বিক্রি হচ্ছিল ৬৫ টাকা। চিনি নিয়ে এ ধরনের ইচ্ছেকৃত কারসাজির অভিযোগে মীর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম ও সেলস ম্যানেজার জানে আলমকে ১০ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরে দুই টাকা লাভে চিনি বিক্রির মুচলেকা দেন তারা। এছাড়া আটক দুই কর্মচারী মফিজুল হক ও সজল সেনগুপ্তকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
তাহমিলুর রহমান আরো জানান, মীর গ্রুপ ২৬ জুন পর্যন্ত কারখানা থেকে ১০টি লটে ২০ হাজার মেট্রিকটন চিনি কিনে রেখেছে প্রতি কেজি ৪৬ টাকা ৮ পয়সা দরে। অথচ বাজারে চিনি বিক্রি করছে ৫৮ টাকা কেজি। তাদের দুটি গুদামে মজুদ আছে ১১২ টন চিনি। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে একেকটি লটে তারা ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা আয় করে। পরিবহন, গুদাম ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, ব্যাংক ঋণের সুদ ইত্যাদি বাবদ ৪০ লাখ টাকা বাদ দিলেও ২ কোটি টাকা লাভ করছে।
মীর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম জানিয়েছেন, ৫০ টাকা কেজি দরে খাতুনগঞ্জের পাইকারদের কাছে চিনি বিক্রি করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া শর্ত অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি সংরক্ষণ করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ৫ বস্তা (২৫০ কেজি) করে চিনি বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া নিয়মিত পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে গাড়ি (৩২০ বস্তা) করে চিনি।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে জেলা প্রশাসনের তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও র‌্যাবের অভিযানের একদিন পরই বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেট কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। গ্রেফতার ও জরিমানা এড়াতেই এখন ন্যায্যমূল্যে ভোগ্য পণ্য বিক্রি করছে। বাজার পরিদর্শনে এমনটা দেখা গেছে।