নতুন সামাজিক সঙ্কট

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রেমের টানে ছুটে আসছেন বাংলাদেশে। ভিনদেশী তরুণ কিংবা তরুণী। নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে ছুটে আসছেন তারা। বসছেন বিয়ের পিড়িতে। এ দেশে সংসারও পেতেছেন। কারও দাম্পত্য জীবন অত্যন্ত সুখের। কেউ বা বাংলাদেশি স্বামী কিংবা স্ত্রীকে নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন নিজ দেশে। ধর্ম, বর্ণ, জাতি, ভাষা, পেশা, আর্থিক অবস্থা, সামাজিক মর্যাদা, বয়সভেদ ঘুচিয়ে দু’টি মনের ‘মেলবন্ধন’ প্রায়ই চাঞ্চল্য সৃষ্টি করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে এমন ঘটনা বাড়ছে ক্রমশ। একটি ঘটনা আরও ঘটনায় উৎসাহ যোগাচ্ছে। পৃথিবীকে ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ আখ্যা দিয়ে বর্তমান প্রজন্ম বিষয়টির পক্ষে ইতিবাচক যুক্তি দাঁড় করাচ্ছেন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে দিচ্ছে সতর্ক থাকার পরামর্শ।

সমাজ বিজ্ঞানীরা এই প্রবণতাকে দেখছেন উদ্ভুত ‘নতুন সামাজিক সঙ্কট’ হিসেবে। কারণ প্রেমের টানে বাংলাদেশে ছুটে আসা এবং ঘটা করে দাম্পত্য জীবন শুরুর খবর যতটা না চাউর হচ্ছেÑ ততোটা প্রচার নেই পরবর্তী ঘটনা প্রবাহের। ‘শুরু’টা সংবাদ শিরোনাম হলেও খবর জানা যায় না প্রেমের ‘শেষ পরিণতি’র। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর তরুণ প্রেমকান্ত’র প্রেমের টানে বরিশাল ছুটে আসা এবং পরবর্তীতে প্রত্যাখ্যাত, লাঞ্ছিত ও মারধোরের শিকার হওয়ার ঘটনা সংবাদ মাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তবে এধরনের ঘটনার ক্রম: বিস্তার নতুন ভাবনায় ফেলেছে সমাজ বিশ্লেষকদের। এ জন্য শক্ত আইনি কাঠামোর অপরিহার্যতা ব্যক্ত করেন কেউ কেউ। ঘটনা পরম্পরায় দেখা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তামিলনাড়ুর তরুণ প্রেমকান্ত’র নাচ দেখে প্রেমে মজেন বরিশালের কলেজপড়ুয়া কিশোরী। প্রেমকান্তর ভিডিওতে ক্রমাগত লাইক-কমেন্ট করতেন তরুণী। ২০১৯ সালে ফেইসবুকের মাধ্যমে পরিচয়। শুরু ভাবের আদান-প্রদান। সম্পর্ক আরো গভীর হলে ৩ বছর ধরে চলে প্রেম। এমনকি উভয় পরিবারের মাঝেও গড়ে ওঠে সুসম্পর্ক। করোনার বাঁধা কাটিয়ে প্রেমকান্ত ওই তরুণীকে দেখতে গত ২৪ জুলাই ছুটে আসেন বরিশাল। ২৫ জুলাই একটি রেস্টুরেন্টে দু’জনের সাক্ষাৎ হয়। পরবর্তীতে ঘটে ঘটনার ‘ইউ-টার্ন’।

সাক্ষাতের পরদিন প্রেমকান্ত জানতে পারেন, স্থানীয় আরেক তরুণের সঙ্গে প্রেম রয়েছে কলেজছাত্রীর। হঠাৎই প্রেমিকা প্রেমকান্তের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। ভিনদেশী এই তরুণের অভিযোগ, মেয়েটির অন্য প্রেমিকের হাতে মারও খেয়েছেন। ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে তার টাকা-পয়সা। দুই দিন-দুই রাত কাটাতে হয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানা পুলিশের হেফাজতে। ভারতীয় হাইকমিশনের হস্তক্ষেপে মুক্ত হন তিনি। লাঞ্ছিত প্রেমকান্ত পরে আইনি প্রতিকার পাওয়ার আশায় ছুটে আসেন হাইকোর্টে। আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। অভিভাবকের দাবি মতে মেয়েটি ‘অপ্রাপ্ত বয়স্ক’। বাংলাদেশের অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের বিয়ে আইনসম্মত নয়। তাই আইনজীবীরা আপাত: দেশে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেন প্রেমকান্তকে।
একজন প্রেমকান্ত শুধু নন। প্রেমের টানে ভিনদেশী এমন অনেক তরুণ-তরুণীই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছুটে আসেন বাংলাদেশে। এর মধ্যে গত ৬ মাসে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন ভিনদেশী ১৩ তরুণ-তরুণী। এর মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইটালি, অস্ট্রিয়া, সউদী আরব, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, নেপাল ও ভারতের নাগরিক।

২০১৫ সাল থেকে ফেইসবুকে মিঠুন বিশ্বাসের প্রেম মার্কিন তরুণী এলিজাবেথের সঙ্গে। ২০১৭ সালের ২ জানুয়ানি প্রেমের টানে এলিজাবেথ উড়ে আসেন, বাংলাদেশের ঝিনাইদহের অজোপাড়ায়। ৯ জানুয়ারি এলিজাবেথ বিয়ে করেন মিঠুন বিশ্বাসকে। সুখী দাম্পত্য জীবনের প্রত্যাশায় গত বছর ফেব্রুয়ারিতে মিঠুনকে এলিজাবেথ নিয়ে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ওখানকার ভার্জিনিয়ায় সুখে কাটছে তাদের সংসার। দুই প্রতিষ্ঠানে দু’জন চাকরি করছেন।

২০১১ সালে জীবিকা অন্বেষণে মালয়েশিয়া যান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা এলাকার তারুণ আশিকুর রহমান। কিছুদিন পর পরিচয় হয়, সেখানকার কলেজছাত্রী ফাতেমার সঙ্গে। ২০১৫ সালে ছুটিতে দেশে আসেন আশিক। ফিরতে দেরি হওয়ায় ঢাকায় ছুটে আসেন ফাতেমা। ঢাকা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মাহবুব হাসানের চেম্বারে বিয়ে হয় তাদের। স্ত্রীকে আশিক গ্রামের বাড়ি নিয়ে যান। কিছুদিন পর তারা মালয়েশিয়া পাড়ি জমান। দুই সন্তান নিয়ে আশিক-ফাতিমার এখন সুখের সংসার মালয়েশিয়ায়।

ভিন্ন দেশ, ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির দূরত্ব ঘুচিয়ে দু’জনের চার হাত ‘এক’ হয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুর বরমী গ্রামের আহসানউল্লাহ খানের ছেলে ইমরান খান (২৮) এবং যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা অঙ্গরাজ্যের মেয়ে লিডিয়া লোজার (৩১)। ফেইসবুকের মাধ্যমে পরিচয় তাদের।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চার বছরের পরিচয়। প্রেমের টানে সাতক্ষীরা তালা উপজেলার জেঠুয়া গ্রামে রেজাউল ইসলাম আকুঞ্জির ছেলে ইব্রাহিম হোসেনের কাছে ছুটে আসেন, কলকাতার ব্যারাকপুরের মেয়ে বহ্নিশিখা। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করা বহ্নিশিখা ধর্মান্তরিত হয়ে নাম ধারণ করেন ফারজানা ইয়াসমিন। পরে শরীয়া মোতাবেক তাদের বিয়ে হয়।

জীবিকা অন্বেষণে জার্মানিতে অবস্থানকালে পরিচয় শুভ ও আলিশার। গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। উভয় পরিবারের সম্পত্তিতে সেখানেই বিয়ে হয় তাদের। গত ৪ মার্চ বরিশাল চরবাড়িয়া ইউনিয়নের শহিদুল ইসলামের পুত্র শুভ আলিশাকে নিয়ে আসেন দেশে।

গত ৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের মিশৌরী অঙ্গরাজ্যের রাইয়ান কফম্যান ছুটে আসেন গাজীপুর বাসান মধ্যপাড়ার তরুণী সাইদা ইসলামের (২৬) কাছে। ধর্মান্তরিত হয়ে রাইয়ান হয়ে যান রায়হান ইসলাম। শরীয়াহ আইনে তাদের বিয়ে হয়।

সাইদা জানান, ২০২১ সালের এপ্রিলে ডেটিং অ্যাপে রাইয়ান কফম্যানের সঙ্গে তার পরিচয়। পরে তারা নিজেদের ফোন নম্বর, ফেইসবুক আইডি ও ঠিকানা বিনিময় করেন। সেই থেকে নিয়মিত যোগাযোগ। ম্যাসেঞ্জার ও ফোন নম্বরে ভিডিও কলে কথা বলতে বলতে উভয়ে সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার।

প্রেমের টানে রাজশাহীর বিনোদপুর এলাকার জুলফিকারের কাছে ছুটে আসেন মালয়েশিয়ার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী স্যান্ডি (২০)। কুমিল্লার বরুড়ায় দীঘলগাঁও গ্রামের সাইফুল ইসলামের কাছে ছুটে আসেন মালয় তরুণী নূর আজিমা। দিনাজপুরের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে রুম্পার কাছে আসেন অস্ট্রিয়ার নাগরিক অ্যাড্রিয়ান বারিসো নীরা। তাদেরও বিয়ে হয়। বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদের প্রেমের টানে ভিনদেশীরা ছুটে আসছেন। সব সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করছে ঘটা করে বিয়েও করছেন। কিন্তু পরবর্তীতে সেই বিয়ে টেকেনিÑ এমন ঘটনাও কম নয়।

ফেইসবুকে পরিচয়-প্রণয়। সব তুচ্ছ করে প্রেমের টানেই বাংলাদেশে ছুটে এসেছিলেন ব্রাজিলের সাওপাউলোর বাসিন্দা সরকারি চাকরিজীবী জেইসা ওলিভেরিয়া সিলভা (২৯)। রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির জামালপুর গ্রামে ২০১৭ সালে বলাই ঘোষের ছেলে সঞ্জয় ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয় সিলভার। বিয়ে উপলক্ষে উৎসুক মানুষের ভিড় জমেছিল বাড়িতে। সামাল দিতে বাড়তি নিরাপত্তায় প্রয়োজন হয়েছিল পুলিশের। ১০ এপ্রিল ঢাকা ছেড়ে ব্রাজিল পাড়ি দেন সিলভা। তারপর সঞ্জয় ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন সিলভা। ফেসিবুক আইডি বন্ধ করে দেন। মাত্র চারদিনের সংসার তাদের। ফেসবুকে পরিচয়, প্রেম, বিয়ে, অতপর বিচ্ছেদ। সিনেমার সিকোয়েন্স যেন!

টাঙ্গাইল সখিপুরের মনিরুল ইসলামের কাছে ছুটে এসেছিলেন মালয় কন্যা জুলিজা বিনতে কামিস। ফেইসবুক সূত্রে পরিচয়, প্রেম ও প্রণয়। ২০১৭ সালের ঘটনা এটি। বিয়ের ১৫ দিনের মাথায় মনিরুল জানতে পারেন, মালয়েশিয়ায় জুলিজার আরও একটি সংসার রয়েছে। সেখানে চার সন্তান। সন্তানদের বাবাও বাংলাদেশি। ১৭ দিনের সংসার জীবন উদযাপন শেষে জুলিজা মালয়েশিয়ায় ফিরে যান প্রথম স্বামীর কাছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বহু বছর ধরেই পৃথিবীর নানা প্রান্তে এ ধরনের প্রেম ও বিয়ের সংস্কৃতি চালু আছে। কিন্তু এখনকার ইন্টাররনেট ও ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ কনসেপ্টে এ প্রবণতা ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। এটির ইতিবাচক-নেতিবাচক দু’টি দিকই রয়েছে। প্রযুক্তির বিস্তারের সঙ্গে বাড়ছে দ্রুত সম্পর্ক স্থাপন, কাছাকাছি আসা এবং পরে বিচ্ছেদের ঘটনা। বৃদ্ধি পেয়েছে ভিনদেশী স্বামী-স্ত্রীর আলাদা থাকার ঘটনাও। এসবের প্রভাব পড়ছে সন্তানদের মনোজগতে। মিশেল ধর্ম ও সাংস্কৃতিক কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সন্তানদের স্বাভাবিক বিকাশ। এ ক্ষেত্রে তারা জাপানি নারী ডা: নাকানো এরিকো এবং তার স্বামী বাংলাদেশ বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক ইমরান শরীফের পারিবারিক দ্বন্দ্বে তিন শিশু সন্তানের জিম্মার বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ানোর আলোচিত ঘটনার দৃষ্টান্ত টানেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. এ.আই মাহবুবের মতে, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোতে মূলত ভিনদেশী মেয়েদের সম্পর্ক গড়তে দেখা যায়। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, উন্নত দেশগুলোর ধারণা, এই অঞ্চলের পুরুষরা বিশ্বস্ত। জীবনসঙ্গী হিসেবেও দক্ষিণ এশিয়ার পুরুষ তাদের দেশের পুরুষদের তুলনায় অধিক যোগ্য। এ কারণেই এ আকর্ষণ।

পক্ষান্তরে আমাদের দেশের পুুরুষদের ধারণা, থাই, ফিলিপিনো কিংবা জাপানি মেয়েরা বেশি স্বামীভক্ত। তাই এসব দেশের নারীদের সঙ্গে ঘর বাঁধতে চান বাংলাদেশের তরুণরা। এ ছাড়া অভিবাসন ও উন্নত দেশে নাগরিকত্বের আশায় ভিনদেশী কাউকে বিয়ের ঘটনা তো আমাদের এখানে যুগ যুগ ধরেই প্রচলিত। শুধু নাগরিকত্ব কিংবা উন্নত জীবনযাপনের সুযোগের আশায় অনেকে কাগজ-কলমেও বিয়ে করে থাকেন। এ ধরনের বিয়ে থেকেই পরবর্তীতে বিচ্ছেদের ঘটনাগুলোর উদ্ভব। পশ্চিমা দেশগুলোতে পারিবারিক বিচ্ছেদ মামুলি বিষয়। অন্যদিকে বাংলাদেশ, ভারত এবং এর আশপাশের দেশগুলোতে পারিবারিক বন্ধন এখনও সুদৃঢ়। তাই এখানকার ছেলেদের জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিতে চান পশ্চিমা তরুণীরা। তবে পশ্চিমারা অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়। একারণেই তারা ঘর বাঁধতে ছুটে আসছেনÑ গ্রাম-বাংলার অজোপাড়া গাঁয়ে।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ব্যক্তিগত বৈধ সম্পর্ক সংবিধান স্বীকৃত। তবে ঘটনাগুলো ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আর্থিক বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই এতে নতুন সামাজিক সঙ্কট সৃষ্টি করারও আশঙ্কা রয়েছে। ‘স্পেশাল ম্যারিজ অ্যাক্ট’ নামে একটি আইনি কাঠামো রয়েছে। কিন্তু সেটি সাম্প্রতিক সময়ের প্রবণতা রোধে যথেষ্ট নয়। ফেইসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হচ্ছে। মোহে পড়ে ভিনদেশী তরুণ-তরুণীরা ছুটে আসছেন। হুটহাট বিয়েও হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যখনই বিদেশি একটা মানুষ অজোপাড়া গাঁয়ে এসে দেখছে, তার মনের মানুষটির বাড়িতে আধুনিক টয়লেট সুবিধাটি পর্যন্ত নেই। অস্বাস্থ্যকর, মানবেতর জীবন যাত্রা। তখন অল্প সময়েই মোহ কেটে যাচ্ছে। সম্পর্কগুলো আর টিকছে না। প্রতারিত হচ্ছেন বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরা। তাই বিদেশি কারও সঙ্গে বিয়ের আগে সতর্ক হওয়ার দরকার। তিনি বলেন, বিশ্বের কোনো দেশে গিয়ে অন্যদেশের নাগরিক এতো সহজে বিয়ে করতে পারেন না। যা শুধু এ দেশেই সম্ভব হচ্ছে। তাই বিষয়টির প্রতি সরকারের নজর দেয়া উচিত।

মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সুপ্রিম কোর্টের তরুণ আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, বিদেশিরা বাংলাদেশে আসছেন ট্যুরিস্ট ভিসায়। তাদের কাছে বিয়েটা একটা থ্রিল। এখনকার জেনারেশন তাদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করছে অভিভাবকদের অজান্তেই। ফলে বিদেশি নাগরিক সম্পর্কে তারা তেমন কিছুই জানছেন না। এখানে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, বিয়ে করে অনেক তরুণীকে বিদেশ নিয়ে ভারত কিংবা মধ্যপ্রাচ্যে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। প্রতারিত হয়ে তরুণীরা যখন দেশে ফিরছে- পরিস্থিতি তখন জটিল হয়ে পড়ছে। অনেকে আইনি প্রতিকারের জন্য আমাদের কাছে আসেন। তখন তেমন কিছুই করার থাকে না। নতুন জেনারেশনকে এ বিষয়ে সচেতন করার দরকার। তিনি বলেন, স্পেশাল ম্যারিজ অ্যাক্টের বিধান পুরো সমস্যাকে কাভার করে না। তাই এসব ঘটনাকে আইনি কাঠামোয় ফেলে দেখা দরকার।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর