ভারত সিরিজের আগে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন জাতীয় ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। গতকাল সকাল ৯টায় অনুশীলনে আসার সময় মিরপুর ১১নং সেকশনের কালশি রোডে তাকে বহনকারী রিকশাকে বাস ধাক্কা দেয়। এই সময় মাশরাফি জীবন বাঁচাতে রিকশা থেকে লাফিয়ে পড়লে তার দুই হাতের তালুতে আঘাত লাগে। তালু ছিলে যাওয়া ছাড়াও হাতের কিছুটা মাংসও উঠে গেছে বলে জানান তিনি। দুপুর ১২টার পর মাশরাফি হাতের ব্যান্ডেজ নিয়েই হাজির হন সংবাদ মাধ্যমের সামনে। দুর্ঘটনায় কারণে ব্যথায় তখন ঠিকমতো কথা বলতে না পারলেও হাসতে হাসতে জানালেন চিন্তার কোন কারণ নেই। তিনি বলেন, ‘আমি রিকশায় করে আসছিলাম অনুশীলনে। এমন সময় দেখতে পাই একটি বাস রিকশাটিকে ধাক্কা দিচ্ছে। তখনই আমি লাফ দিয়ে নামতে গিয়ে পড়ে যাই। এতে অল্প ব্যথা পেলেও বড় কোন দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছি। এখন চিন্তার কোন কারণ নেই। ওয়ানডে সিরিজের আগে সময় আছে আশা করি দ্রুতই ভাল হয়ে যাবো।’ তবে তার এই দুর্ঘটনায় বড় কোন ক্ষতি না হলেও চিন্তিত প্রধান কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্ট।
মাশরাফির ডান হাতের বুড়ো আঙুলের নিচে তালু কেটে গেছে। আর বাঁ-হাতের কিছু অংশ ছিলে গেছে। মাশরাফি বলেন, ‘চিড় বা ফাঁটা নাই, ছিলে গেছে। আশা করি, এই মুহূর্তে তেমন বিপদ নেই।’ তবে কথাগুলো বলার সময় বারবারই হাঁটুর ব্যথাতে উহ্ শব্দ করছিলেন। মাশরাফির বেশির ভাগ কাটা-ছেঁড়া এই হাঁটুর উপর দিয়েই গেছে। ক্যারিয়ারের লম্বা একটি সময় তিনি ক্রিকেটের বাইরে থেকেছেন হাঁটুর ইনজুরির কারণেই। হাঁটুর ইনজুরি নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘বড় চোট পেলে টের পেতাম কিন্তু তেমন কিছু অনুভব করছি না। মনে হচ্ছে না এটা বড় কিছু। আগামী পরশু থেকে জিমে অনুশীলন শুরু করবো। আশা করছি, আগামী ১২ই জুন বগুড়ায় হাই পারফরমেন্স ইউনিটের প্রস্তুতি ম্যাচে খেলতে পারবো।’
অন্যদিকে জাতীয় দলের ফিজিও বায়েজিদ ইসলাম খান বলেন, ‘মাশরাফির চোট খুব একটা বড় কিছু নয়। তবে আমরা তাকে ভালভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়েছি। আশা করি নিয়মিত ড্রেসিং করলেই মাশরাফি সেরে উঠবেন।’ ভারতের বিপক্ষে ১০ই জুন টেস্ট ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে সিরিজ। এরপরই ১৮ই জুন তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ মাঠে গড়াবে। এর আগেই মাশরাফি ফিট হয়ে মাঠে ফিরবেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তবে তার হাতের চোট নিয়ে চিন্তিত দলের প্রধান কোচ হাথুরু সিংহে। বিশেষ করে করে ডান হাতি বোলারের হাতের তালুর আঘাতের কারণে তার এই চিন্তা। তিনি বলেন, ‘টেস্ট সিরিজ আগে। তাই ওয়ানডে সিরিজ শুরু হতে সময় লাগবে। আমি আশা করি এরই মধ্যে সে (মাশরাফি সেরে উঠবে। আমি যতটুকু দেখেছি চোট খুব একটা বড় নয়। তবে হাতের তালুর চোট নিয়ে কিছুটা চিন্তার কারণতো আছে। আমি আশা করবো তার সেরে ওঠার সর্বোচ্চ সুযোগ দেয়া হবে।’ মাশরাফি বেশির ভাগ সময় মোটর সাইকেল চালিয়ে অনুশীলনে আসেন। মাঝে মধ্যে রিকশায় আসেন। তার বাসা থেকে স্টেডিয়ামের দূরত্ব দুই কিলোমিটারের মতো। গাড়ি সাধারণত পরিবারের কাজে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া তার গাড়ির ব্রেকটি বর্তমানে অকেজো।
অন্যদিকে মাশরাফির রিকশাকে ধাক্কা দেয়া বাস ও চালককে আটক করেছিল পুলিশ। কিন্তু জাতীয় দলের অধিনায়ক অনেকটা দয়া করেই পুলিশের হাত থেকে বাসটি ছাড়িয়ে দেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার যেখানে দুর্ঘটনা হয় সেখানেই পুলিশ ছিল। তারা বাসটিকে আটক করে। কিন্তু আমি বাসচালককে ছাড়িয়ে দিয়েছি। এমনকি রিকশাচালককেও কিছু টাকা দিয়ে বিদায় করে দিয়ে পুলিশকে অনুরোধ করি মাঠে পৌঁছে দেয়ার জন্য। পুলিশ তখন তাদের গাড়িতে করে আমাকে মাঠে পৌঁছে দেয়।’
সংবাদ শিরোনাম
রিকশায় চড়ার খেসারত
- Reporter Name
- আপডেট টাইম : ০৫:২০:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুন ২০১৫
- ৩৩২ বার
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ