বিজয় দাস, প্রর্তিনিধি নেত্রকোনাঃ অতিরিক্ত তাপদাহে অতিষ্ঠ নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুরবাসী। আর সেইসাথে বাড়ছে নানা রোগব্যধি। অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অনেকেই। ঈদের পর থেকেই প্রচন্ড তাপদাহ শুরু হয়েছে অত্র এলাকায়। প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে তাপমাত্রা। তীব্র গরমে শিশু-বৃদ্ধসহ বাড়ছে অসুস্থতার হার। হাসপাতালে থাকা রোগির মধ্যে ৩০% রোগিই জ্বরের। এছাড়াও রয়েছে ডায়রিয়া, কলেরা এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত।
বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯ জন জ্বর ও ৯ জন ডায়েরিয়া রোগের চিকিৎসা নিতে এসেছেন।
এদিকে, সারাদিনের তীব্র তাপদাহে পৌরশহরের ব্যস্ততম এলাকা গুলো জনশুন্যে পরিণত হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে দুর্গাপুরের তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। সাধারণ মানুষ নানা রোগব্যধির ভয়ে বাজারে আসছে না। প্রচন্ড গরমে রাস্তা-ঘাটে ডাব ও বিভিন্ন ফলের শরবত খেয়ে নিজেকে সতেজ রাখার চেষ্টা করছে সাধারণ মানুষ। গরমে নানা রোগব্যধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই।
হিট স্ট্রোক ও গরমজনিত রোগেই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। সেইসাথে যোগ হয়েছে ঘন ঘন লোডশেডিং। এতে একদিকে সাধারন মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে, অন্যদিকে লোকসানের মুখে পড়েছেন শহরের সাধারণ ব্যবসায়ীরা। বালু ঘাটের শ্রমিকরা অতিরিক্ত তাপদাহের কারনে অনেকেই কাজে যোগ দিচ্ছেনা। ফাঁকা বসে আছে শহরের বিভিন্ন দোকানিরা। ঔষধের দোকান গুলোতে প্যারাসিটামল আর খাবার স্যালাইন বিক্রির ধুম পড়েছে। সেইসাথে অতিরিক্ত দাম হাতিয়ে নিতেও দেখাগেছে অনেক দোকানিকে।
হাসিনা আক্তার নামের এক ডায়রিয়া রোগী বলেন, দুই দিন ধরে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলাম। সময়মতো হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নেয়ায় এখন সুস্থ্যতাবোধ করছি, নইলে মনে হয় মারাই যেতাম। অতিরিক্ত গরম আর পরিস্কার পানি না খাওয়ার কারনে আমার ডায়রিয়া হয়েছে। গরমের চারদিকে বাড়ছে জ্বরের প্রাদুর্ভাব।
দুর্গাপুর সরকারি হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার তানজিরুল ইসলাম রায়হান বলেন, গরমে মানুষকে তাপমাত্রা থেকে যতটা সম্ভব নিরাপদে থাকতে হবে। সেই সঙ্গে ঘনঘন পানি ও পানিজাতীয় খাবার খাওয়া, বাসি খাবার না খাওয়া, নিরাপদ খাবার পানি পান করা, খাবার পানির পাত্র পরিষ্কার রাখা, পথঘাটের অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করা উচিত। সেই সঙ্গে ঘরে খাবার স্যালাইন সংরক্ষণ করা এবং ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হলে খাবার স্যালাইনে কাজ না হলে দ্রুত হাসপাতালে চলে আসতে হবে।
শিশুদের ব্যাপারে তিনি বলেন, ছয় মাসের নিচের বয়সের শিশুদের শুধুই বুকের দুধ দিতে হবে, অন্য শিশুদের ঘরে তৈরি সম্পূরক খাবারের সঙ্গে মায়ের বুকের দুধ দিতে হবে। বর্তমান তাপদাহে সকলকে ঘরে অবস্থানের পরামর্শ দেন তিনি।