ঢাকা ০৪:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হবিগঞ্জে খোলা আকাশের নিচে সরকারি বিদ্যালয়ের পাঠদান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৫১:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জুন ২০২২
  • ১৩৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় বশিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় ছয় বছর ধরে ২৫০ জন শিক্ষার্থীকে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করা হচ্ছে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটি থেকে প্রতি বছরই ছাত্রছাত্রী সংখ্যা কমে যাচ্ছে। প্রতিদিন সকালে শিশুরা এসে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে বেঞ্চ বের করে। ছুটির পর পুনরায় বেঞ্চগুলো ভেতরে ঢুকিয়ে তারা বাড়ি ফিরে। তবে বৃষ্টি আসলে বাধ্য হয়েই আশ্রয় নিতে হয় পরিত্যক্ত ভবনেই।

জানা গেছে, ১৯৮৮ সনে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে ছয় বছর পর একটি টিনসেডে পাঠদান করা হয়। ১৯৯৪ সালে নিবন্ধিত হলে এতে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকায় একটি ঘর নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। তবে কিছুদিন পরেই ভবনটিতে ফাঁটল দেখা দেয়। পরে এলজিইডি ২০১২ সালে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে।

এদিকে, ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হলেও এখনও পর্যন্ত একটি ভবন নির্মাণ হয়নি। ২০১৫ সালে উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন খাত থেকে এক লাখ টাকায় একটি টিনসেড ঘর তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু পরের বছর সেটি কালবৈশাখী ঝড়ে ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতিদিন বিদ্যালয়ে এসে বেঞ্চ ও ডেক্স ভবন থেকে বের করে এনে বাইরে বসতে হয়। পরে পুনরায় এগুলো ভেতরে ঢুকিয়ে তারপর বাড়ি ফিরতে হয়। এতে প্রায় তাদেরকে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।

প্রধান শিক্ষক ফারুক আহাম্মদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বশিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কয়েকটি গ্রামের শিশুরা লেখাপড়া করে। এখন ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ২৫০ ও পাঠদান করেন ৫ জন শিক্ষক। পরিত্যক্ত ভবনটিকে অফিস হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

গত ২৬ মে ঝড় হলে ভবনের একটি অংশ ধসে যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা অল্পের জন্য রক্ষা পায়। প্রতিদিন খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করলেও বৃষ্টি আসলে বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচে আশ্রয় নিতে হয়। ২০১৭ সালে এলজিইডির পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষা করা হয় কিন্তু এ উদ্যোগ আর এগোয়নি। ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষার্থী সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের অন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান মোহাম্মদ জোনায়েদ সাংবাদিকদের বলেন, স্কুলটির অবস্থা করুণ। আপাতত শিশুদেরকে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একটি ভবন নির্মাণের জন্য চেষ্টা চলছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হবিগঞ্জে খোলা আকাশের নিচে সরকারি বিদ্যালয়ের পাঠদান

আপডেট টাইম : ০৭:৫১:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় বশিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় ছয় বছর ধরে ২৫০ জন শিক্ষার্থীকে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করা হচ্ছে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটি থেকে প্রতি বছরই ছাত্রছাত্রী সংখ্যা কমে যাচ্ছে। প্রতিদিন সকালে শিশুরা এসে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে বেঞ্চ বের করে। ছুটির পর পুনরায় বেঞ্চগুলো ভেতরে ঢুকিয়ে তারা বাড়ি ফিরে। তবে বৃষ্টি আসলে বাধ্য হয়েই আশ্রয় নিতে হয় পরিত্যক্ত ভবনেই।

জানা গেছে, ১৯৮৮ সনে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে ছয় বছর পর একটি টিনসেডে পাঠদান করা হয়। ১৯৯৪ সালে নিবন্ধিত হলে এতে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকায় একটি ঘর নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। তবে কিছুদিন পরেই ভবনটিতে ফাঁটল দেখা দেয়। পরে এলজিইডি ২০১২ সালে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে।

এদিকে, ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হলেও এখনও পর্যন্ত একটি ভবন নির্মাণ হয়নি। ২০১৫ সালে উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন খাত থেকে এক লাখ টাকায় একটি টিনসেড ঘর তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু পরের বছর সেটি কালবৈশাখী ঝড়ে ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতিদিন বিদ্যালয়ে এসে বেঞ্চ ও ডেক্স ভবন থেকে বের করে এনে বাইরে বসতে হয়। পরে পুনরায় এগুলো ভেতরে ঢুকিয়ে তারপর বাড়ি ফিরতে হয়। এতে প্রায় তাদেরকে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।

প্রধান শিক্ষক ফারুক আহাম্মদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বশিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কয়েকটি গ্রামের শিশুরা লেখাপড়া করে। এখন ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ২৫০ ও পাঠদান করেন ৫ জন শিক্ষক। পরিত্যক্ত ভবনটিকে অফিস হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

গত ২৬ মে ঝড় হলে ভবনের একটি অংশ ধসে যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা অল্পের জন্য রক্ষা পায়। প্রতিদিন খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করলেও বৃষ্টি আসলে বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচে আশ্রয় নিতে হয়। ২০১৭ সালে এলজিইডির পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষা করা হয় কিন্তু এ উদ্যোগ আর এগোয়নি। ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষার্থী সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের অন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান মোহাম্মদ জোনায়েদ সাংবাদিকদের বলেন, স্কুলটির অবস্থা করুণ। আপাতত শিশুদেরকে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একটি ভবন নির্মাণের জন্য চেষ্টা চলছে।